বিজ্ঞাপন

ওমিক্রন ছড়িয়েছে দেশের ৮ বিভাগেই

February 12, 2022 | 9:51 pm

সৈকত ভৌমিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গত বছরের নভেম্বরে সংগ্রহ করা নমুনাতেই করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছিল দেশে। তারপরও ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়েছিল, তাতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতিই ছিল বেশি। নতুন বছরে এসে সেই চিত্র বদলে গেছে। শুরুর দিকে রাজধানী থেকে সংগ্রহ করা নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রনের উপস্থিতি দেখা গেলেও সেটি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের আট বিভাগেই।

বিজ্ঞাপন

এ বছরের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহ করা ২৭৭টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলপ্রকাশ করা হয়েছে জিআইএসএইডে। এসব নমুনার ২০৬টি অর্থাৎ ৭৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ নমুনায় মিলেছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি। বাকি নমুনাগুলোর মাঝে ৫৯টি ডেল্টা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও জার্মান সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরিচালিত গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডাটা (জিআইএসএইড) ওয়েবসাইটে জমা হওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র উঠে এসেছে।

এর আগে, রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানায়, তাদের অধীনে জিনোম সিকোয়েন্সিং করা নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে দেশের সাত বিভাগেই। শুধুমাত্র ময়মনসিংহ বিভাগে ওমিক্রন না ছড়ানোর তথ্য জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

তবে জিআইএসএইডের তথ্য বলছে, ১০ জানুয়ারি ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা থেকে সংগ্রহ করা একটি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে ওমিক্রনের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি ৩০ বছর বয়সী এক তরুণের নমুনার সিকোয়েন্সিং ফলাফল জমা দেওয়া হয় জিআইএসএইডে।

জিআইএসএইডের তথ্য বলছে, ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সিকোয়েন্সিংয়ে জন্য সংগ্রহ করা ২৭৭টি নমুনার মধ্যে ২০৬টিতেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। সে হিসাবে ওমিক্রনের উপস্থিতি মোট নমুনার ৭৪ দশমিক ৩৭ শতাংশেই। বাকি নমুনার মধ্যে ৫৯টি নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে শনাক্ত হয়েছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, যা মোট নমুনার ২১ দশমিক ৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে যেসব নমুনায়, এর মধ্যে একাধিক নমুনাতেই রয়েছে এই ভ্যারিয়েন্টের ভিন্ন রূপ বা উপধরণ হিসেবে পরিচিত বিএ.২ ও বিএ.১.১ লিনেজ।

বিজ্ঞাপন

এ দিকে শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আইসিডিডিআর’বি তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, গত জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের জায়গাটি সম্পূর্ণভাবে দখল করে নেয় ওমিক্রন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে ঢাকা শহর থেকে ২৪টি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে ৯২ শতাংশ নমুনায় ওমিক্রন এবং ৮ শতাংশ নমুনায় ডেল্টার ধরন পাওয়া গেছে। ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া নমুনার মধ্যে উপধরন বিএ ২ সবচেয়ে বেশি বলে চিহ্নিত করা গেছে।

জিআইএসএইডসহ বিশ্বের অন্যান্য ডাটাবেজ সাইটের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশে এখন পর্যন্ত মোট ২৯৫টি নমুনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি শনাক্ত হয় গত ১৪ নভেম্বর সংগ্রহ করা একটি নমুনায়। এরপর ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করা নমুনাতেও ছিল ওমিক্রনের উপস্থিতি।

এ নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে এখন পর্যন্ত জিআইএসএইডে করোনাভাইরাসের চার হাজার ৫৯০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফল জমা দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, দেশে ভ্যারিয়েন্ট যাই আসুক না কেন, ভাইরাস থেকে নিজেকে নিরাপদে রাখতে হলে সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে হাত ধোয়ার অভ্যাস চালু রাখতে হবে। মাস্ক না পরে যদি ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কেউ দুশ্চিন্তা করে, তবে লাভ কী!

মহামারি বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক বলেন, ‘কেউ যদি ভাইরাসকে নিজের কাছে প্রবেশের সুযোগ না দেয়, তাহলে ভাইরাসের পক্ষে কাউকে আক্রান্ত করা সম্ভব না। সে কারণেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে। একইসঙ্গে ভ্যাকসিন নিতে হবে। ভ্যাকসিন একদিকে যেমন সংক্রমণের ঝুঁকি কমাবে, অন্যদিকে সংক্রমিতদের হাসপাতালে যাওয়ার সংখ্যাও কমাবে।’

সারাবাংলা/এসবি/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন