বিজ্ঞাপন

‘সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিতে ২১ খাল দখল’

February 12, 2022 | 11:45 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজধানীর ২১টি খাল সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির কারণে দখল হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষার সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) খাল উদ্ধারে সীমানা পিলার নির্মাণসহ ৭ দফা দাবিতে উত্তর বাড্ডায় আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে নোঙর বাংলাদেশ।

সংগঠনটির সভাপতি সুমন শামস বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে রাজধানীর ৪৭টি খালের মধ্যে টিকে আছে মাত্র ২৬টি। এজন্য স্থানীয় প্রভাবশালী, রাজনৈতিক ‘ভূমিখেকো’ নেতা-কর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠানের অসৎ কর্মকর্তারা দায়ী। চরম পরিবেশ দূষণে গণমানুষের ভোগান্তির দৃশ্য দেখে শুরু হয় খাল উদ্ধারের আলোচনা; কিন্তু সে কাজ আর শেষ হয় না!

নোঙরের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, এক সময় ঢাকা শহরের বেশিরভাগ খাল ১৫০ ফুটের বেশি প্রস্থ ছিল। খালগুলো বৃষ্টির পানি ধারণ ও নিষ্কাশনের কাজে ব্যবহার হতো। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর মাত্র চার যুগের ব্যবধানে ঢাকা মহানগরীর অনেক খাল অবৈধ দখলের কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। যেগুলো রয়েছে তার বেশিরভাগই সঙ্কুচিত হয়ে ১০-২০ ফুটে নেমে এসেছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ঢাকার প্রধান চারটি নদী এ শহরে ৪৭টি খালকে সংযুক্ত রেখেছিল। সূত্রাপুর-লোহারপুল হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী, মোহাম্মদপুরের বছিলা হয়ে বুড়িগঙ্গা নদী, উত্তরার আবদুল্লাহপুর ও উত্তরখান হয়ে তুরাগ নদ, খিলক্ষেত-ডুমনি হয়ে বালু নদী ও মানিকনগর হয়ে শীতলক্ষ্যা নদী। নদী ও খালগুলো দখল হয়ে যাওয়ার পেছনে উত্তরা, বনানী, বনশ্রী, নিকুঞ্জসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে তৈরি করা বড় বড় আবাসিক প্রজেক্ট দায়ী। এই আবাসিক প্রজেক্টগুলো গড়ে তোলার সময় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ঢাকার চার পাশের নদী থেকে ভেতরের খালগুলো বিচ্ছিন্ন হওয়ার আরেকটি কারণ ৯০ এর দশক তৈরি করা ৩৪ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ। বন্যার পানি যাতে শহরে ঢুকতে না পারে সে জন্য এই বাঁধ দেওয়া হয়ে ছিলো। খালের পানি নদীতে নেওয়ার জন্য নির্মাণ করা হয় পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো বা রেগুলেটর। এখন সেই রেগুলেটরগুলো অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় শহরের খালের পানি নদীতে নেমে যোতে পারছে না।

এদিকে, রাজধানীর সব খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ, সিএস নকশায় খালের সীমানা পিলার স্থাপন, খালের সঙ্গে নদীর সংযোগ, নৌকা চলাচলের উপযোগী করে সকল খাল সংরক্ষণ, গুলশান লেকের সঙ্গে সুতিভোলা খালের সংযোগ, ঢাকা ওয়াসার কার্যকরী ভূমিকা, খাল সুরক্ষায় সকল কালভার্ট অপসারণ এই সাত দফা দাবি উপস্থাপন করে নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন নোঙর বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিকুল ইসলাম বাছেক, বাংলাদেশ আওয়ামী মৎসজীবীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম সিদ্দিক মামুন, চিত্রশিল্পী রোকসানা আক্তার তুহিন, নোঙর বাংলাদেশের ফজলে সানি, বহারুল ইসলাম টিটু, দর্পন জামিল।

প্রসঙ্গত, অবৈধ দখলের কারণে নদী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া ২৬ খালের মধ্যে শহরের পশ্চিমাংশে আছে কাটাসুর, হাজারীবাগ, ইব্রাহিমপুর, কল্যাণপুর, আবদুল্লাহপুর, রামচন্দ্রপুর, বাউনিয়া, দ্বিগুণ, দিয়াবাড়ি, ধোলাই, রায়েরবাজার, বাইশটেকি ও শাহজাহানপুর খাল। পূর্বাংশে আছে জিরানী, মান্ডা, মেরাদিয়া-গজারিয়া, কসাইবাড়ি, শাহজাহানপুর, শাহজাদপুর, সুতিভোলা, ডুমনি, বোয়ালিয়া, রামপুরা, গোবিন্দপুর, সেগুনবাগিচা, খিলগাঁও-বাসাবো খাল।

সারাবাংলা/আরএফ/একেএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন