বিজ্ঞাপন

বইয়ের সূত্রে হবে প্রজন্মের মেলবন্ধন

February 26, 2022 | 9:09 pm

রাহাতুল ইসলাম রাফি, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

বইও যে হতে পারে অতীত-বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মেলানোর একটি উপায়— এমন লক্ষ্য সামনে বই উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগ এবং সাহিত্য সংসদ। আজ থেকে বছর কুড়ি কিংবা আরও পরে যখন নতুন কোনো এক শিক্ষার্থী আবাসিক হলে এসে লাইব্রেরি থেকে কোনো বই হাতে নেবে— দু’পাতা উল্টালেই সে দেখতে পাবে, বইটির তারই হলের কোনো এক অগ্রজের রেখে যাওয়া এক উপহার।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল প্রাঙ্গণে ‘এক কাপ চা, একটি বই এবং এক প্রজন্ম ভালোবাসা’— শিরোনামে শুরু হয় বই উৎসব।

উৎসবের আয়োজকদের বার্তাটি এমন— ‘পরম আকুলতা নিয়ে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য যে পুরোনো বইটি নিশ্চুপ কারাবরণ করে আছে আপনাদের সংগৃহীত বইয়ের কারাগারে, সেখান থেকে একটি প্রবীণ বইকে আগামী এক প্রজন্ম ভালোবাসা গ্রহণের সুযোগ করে দেবেন।’

হল প্রাঙ্গণের এক পাশে থাকা বই সংগ্রহের বুথে এসে শিক্ষার্থীরা বই দিয়ে যাচ্ছেন। প্রাঙ্গণের মাঝে চলতে থাকা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আবহ উৎসবকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।

বিজ্ঞাপন


বই সংগ্রহের বুথে কথা বলে জানা গেছে— সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শুরু হওয়া উৎসবে বিকেল পর্যন্ত মোট বই জমা পড়েছে আট শতাধিক। হলের শিক্ষার্থীরা এসে বই দিয়ে যাচ্ছেন। প্রথম পাতায় লিখে যাচ্ছেন নিজেদের একটু পরিচয়, ফোন নাম্বার, ইমেইল অ্যাকাউন্ট। সেই নব্বইয়ের দশকে এ এফ রহমান হলে থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বর্তমানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরাও বই দিয়ে উৎসবের অংশ হচ্ছেন।

উৎসবের অন্যতম আয়োজক স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের হলের লাইব্রেরিটি সেইভাবে কার্যকর নয়। আমার দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিলো স্যার এ এফ রহমান হলে একটি আলাদা লাইব্রেরি হবে। আমাদের হলে প্রায় এক হাজার আবাসিক শিক্ষার্থী আছে। শাহ নেওয়াজ হোস্টেলেও কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী আছে। তারা প্রত্যেকে যদি নিজেদের অন্তত সবচে পুরোনো বইটিও আমাদের দেয়, তা দিয়ে হলেও আমাদের লাইব্রেরি কার্যক্রম আরও ভালোভাবে চালানো যাবে।’

হল সংসদের সাবেক সংস্কৃতি সম্পাদকের দায়িত্বপালন করা মুন বলেন, ‘হল সংসদের সংস্কৃতি সম্পাদক থাকাকালীন নানান সীমাবদ্ধতার কারণে বই উৎসবের আয়োজন করতে পারিনি। আমার পরিকল্পনা ছিলো, ভালো কোনো দায়িত্বে আসতে পারলে বই উৎসব করব।’

বিজ্ঞাপন

উৎসবের শিরোনামের ‘এক প্রজন্ম ভালোবাসা’ অংশ প্রসঙ্গে মুনেম শাহরিয়ার মুন বলেন, ‘যারা বই দিয়ে যাচ্ছেন, তারা বইয়ে নিজেদের তথ্য লিখে দিচ্ছেন। এখন ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা হলে আছে। আরও কয়েক শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা আছেন। তারা বই দিচ্ছে। প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অনেকেই এসে বই দিয়ে যাচ্ছেন। যখন ২০৭১-৭২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা আসবে, তখন তারা আমাদের বইগুলো দেখবে। বইয়ে থাকা তথ্য দেখে কানেক্টেড হতে পারবে। এক প্রজন্ম ভালোবাসা, যেটা আমরা বলছি— যখন অনেকবছর পর আমাদের দেওয়া বই উল্টিয়ে দেখবে নতুন এক প্রজন্ম, বইয়ের পাতায় থাকা তথ্য দেখে একটি ফোন কল কিংবা মেসেজ যখন তারা দেবে, তখন যে টান বা ভালোবাসা থাকবে, সেটাই আমাদের চাওয়া। সেটা যেন স্যার এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীদের মতো থাকে।’

বই উৎসব আজই শেষ হয়ে গেলেও বই সংগ্রহ থেমে থাকবে না বলে জানিয়েছেন মুনেম শাহরিয়ার মুন। কেউ যদি বই দিতে চায়, সেক্ষেত্রে সংগ্রহের কাজে হল শাখা ছাত্রলীগ এবং সাহিত্য সংসদের সমন্বয়ে একটি টিম কাজ করবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরআইআর/এমও

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন