বিজ্ঞাপন

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মারাত্মক ভুল করেছেন: বিচারক

March 15, 2022 | 2:00 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ‘রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলা মামলায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক মো. শফিউদ্দিন শেখ মারাত্মক ভুল করেছেন। শুধুমাত্র আসামির সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই অযথা তদন্তকারী কর্মকর্তা চার জনকে এ মামলায় অর্ন্তভূক্ত করেন। কাজেই তারা হামলায় অংশ বা তাদের সহায়তা করার অভিযোগ প্রমাণ করতে প্রসিকিউশন চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ঢাকার সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান হোসনি দালানে বোমা হামলা মামলার রায়ে ৮ আসামির মধ্যে ২ জনকে সাজা দিয়েছেন। ৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তারা খালাস পেয়েছেন। রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে তদন্ত কর্মকর্তার বিষয়ে বিচারক এসব কথা বলেছেন।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চরমভাবে দায়িত্বে অবহেলার দিয়েছেন। ফলে গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী নির্দেশদাতা ও হামলাকারীরা আইনের আওতার বাইরে রয়ে গেছে। আসামি কবীর হোসেন ও আরমানে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হোসনি দালানে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় চাঁন মিয়া, ওমর ফারুক, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ এবং শাহজালাল মিয়া জড়িত মর্মে কোনো বক্তব্য দেননি। এই আসামিরা কিভাবে হোসাইন দালানে বোমা হামলায় জড়িত তার ব্যাখ্যাও তদন্তকারী পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেননি। শুধুমাত্র আসামির সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই অযথা তদন্তকারী কর্মকর্তা এই চারজনকে এ মামলায় বিচারের জন্য সোপর্দ করেন।’

কবীর হোসেন ও আরমানের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায় বলে রায়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘হোসনি দালানে বোমা হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতা ছিল আলবানী এবং নোমান। আরমানের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, হোসনি দালানে বোমা হামলা করেছে রানা ওরফে মুসায়েব এবং হিরন। মামলার রেকর্ড থেকে দেখা যায়, আসামি জাহিদ হাসান, রানা এবং মাসুদ হাসান রানা ঘটনার সময়ে শিশু ছিল বিধায় বিচারের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনে তাদের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগপত্র বিচারের জন্য শিশু আদালতে দাখিল করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

 

তাজিয়া মিছিলে বোমা হামলা: দু’জনের কারাদণ্ড, ৬ জন খালাস

 

তদন্তকর্তা প্রতিবেদনে, হিরন, আলবানী ওরফে হুজ্জা ও আব্দুল্লাহ ওরফে আলাউদ্দিনের নাম পাওয়া গেলেও এ মামলায় গ্রেফতার হওয়ার আগেই তারা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। এ কারণে তাদের নাম পুলিশ প্রতিবেদনে অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিউদ্দিন শেখ কার কাছ থেকে কিংবা কোথায়, কীভাবে জানতে পেরেছেন যে হিরন, আলবানী ও আব্দুল্লাহ বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে সে বিষয়ে পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। হিরন এবং আলবানীর বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার সমর্থনে কোনো মামলার কাগজপত্র দাখিল করেনি।

বিজ্ঞাপন

হোসনি দালানে গ্রেনেড হামলার নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী নোমানকে কেন আসামি হিসেবে মামলায় অর্ন্তভূক্ত করা হয়নি সে বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা কোনো বক্তব্য দেয়নি, বলেও বিচারক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

বিচারক বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা শফিউদ্দিন শেখ কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই আসামি চাঁন মিয়া, ওমর ফারুক, হাফেজ আহসান উল্লাহ এবং শাহজালাল মিয়াকে মামলায় অযথাই আসামি হিসেবে বিচারের জন্য সোপর্দ করেছে।’

এর আগে, রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২ আসামির কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া বাকি ৬ আসামি খালাস পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আরমান ওরফে মনিরের ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং কবির হোসাইন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিককে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তারা দু’জনই কারাগারে রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এআই/এমও

Tags: , , , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন