বিজ্ঞাপন

যে জীবন সংগ্রামের

March 17, 2022 | 10:00 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার কিশোর ‘খোকা’। মা-বাবা এই নামেই ডাকতেন। ১৯৩৯ সালে সেই ‘খোকা’ তখন গোপালগঞ্জের মাথুরানাথ মিশনারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুলটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। তখনকার প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীও ছিলেন সঙ্গে। ঠিক সেই সময় একদল শিক্ষার্থীকে নিয়ে তাদের সামনে দাঁড়ালেন সেই ‘খোকা’। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে বললেন, ‘আমরা এই স্কুলেরই ছাত্র। স্কুলের ছাদে ফাটল ধরেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সেখান থেকে বৃষ্টির পানি চুইয়ে পড়ে আমাদের বই-খাতা ভিজে যায়। ক্লাস করতে অসুবিধা হয়।’

বিজ্ঞাপন

এক জন মুখ্যমন্ত্রীর সামনে এক কিশোরের এমন ‘স্পর্ধা’য় তখন স্কুল কর্তৃপক্ষ ভয়ে থরো থরো। কিন্তু না, মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা ফজলুল হক কিছুই বলেননি সে কিশোরকে। বরং তার সাহসিকতায় মুগ্ধ হন। স্কুলের ছাদ মেরামত করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।

কৈশোরেই ন্যায্য দাবি আদায়ের যে মানসিকতা, আজীবন সেই মানসিকতাই লালন করে গেছেন সেই ‘খোকা’। যত দিন গিয়েছে, ততই আরও বেশি মানুষের অধিকার আদায়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। হয়েছেন ‘মিয়া ভাই’। ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছেন মানুষের নির্ভরতায়। হয়ে উঠেছেন ‘মুজিব ভাই’। সেই মুজিবই বাংলার নিপীড়িত মানুষকে স্বপ্ন দেখালেন স্বাধীনতার, মুক্তির। লড়াই-সংগ্রামে পরিণত হলেন বাংলার অবিসংবাদিত নেতায়, পরিণত হলেন ‘বঙ্গবন্ধু’তে। তার হাত ধরেই এলো বাংলার মানুষের সেই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। মানুষের মনে আর ইতিহাসের পাতায় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে হয়ে উঠলেন সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।

সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (১৭ মার্চ)। ১৯২০ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় শেখ লুৎফুর রহমান ও সায়েরা খাতুন দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম নেন বাঙালি জাতির এই মুক্তির দিশারী। এরপর গোটা জীবনই তিনি উৎসর্গ করেছেন মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে। মাত্র ৫৫ বছরের যে জীবন তিনি কাটিয়েছেন, বলতে গেলে তার পুরোটাই ছিল সংগ্রামমুখর।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- জনকের জন্মদিন আজ

জনগণের মন ও চাহিদা বুঝে উপযুক্ত কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই নেতৃত্বের যোগ্যতা। সেই যোগ্যতায় শেখ মুজিবুর রহমান কোনোদিন ব্যর্থ হননি। নেতৃত্বের গুণে তিনি মহান নেতায় রূপান্তরিত হয়েছেন। ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই পেয়েছেন স্বমহিমায়।

কৈশোর থেকেই অধিকারের দাবিতে সোচ্চার বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক রাজনীতিতে হাতেখড়ি ১৯৪০ সালে, সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে। ১৯৪৬ সালেই কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ (বর্তমানে মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৪৭ সালে যখন ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটে, ওই সময় ঢাকায় ফিরে আসেন। নতুন ভাবনা থেকে ১৯৪৮ সালে গড়ে তোলেন ছাত্রলীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন আওয়ামী লীগ (প্রতিষ্ঠাকালীন নাম পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ) গঠন হলে যুগ্ম সম্পাদকের পদ পান তিনি।

বিজ্ঞাপন

সাতচল্লিশে দেশভাগ হয়েছিল ‘দ্বিজাতি তত্ত্ব’ তথা ধর্মের ভিত্তিতে। এর আগেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সাক্ষী হয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশ। তরুণ বঙ্গবন্ধু দেখেছেন সেই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প কীভাবে মানুষকে মানুষের শত্রু করে তোলে। আর সে কারণেই সাতচল্লিশ পরবর্তী সময়ে অসাম্প্রদায়িকতাকেই রাজনীতির মূলমন্ত্র করেছিলেন তিনি। স্পষ্টই বুঝেছিলেন, ধর্মের ভিত্তিতে দুইটি পৃথক ভূখণ্ড ও ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষদের একটি দেশে রূপ দেওয়া হলেও সেটি কার্যকর কিছু নয়। পাকিস্তান নামের দেশের পূর্ব-পাকিস্তানের স্বাধীনতাই চূড়ান্ত পরিণতি। সেই ষাটের দশকের গোড়া থেকেই তিনি তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবশ্যম্ভাবী পরিণতি অর্জনের পথে এগিয়ে যেতে থাকেন।

এর আগেই, বায়ান্নর যে ভাষা আন্দোলন ঘিরে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বীজমন্ত্র রোপিত হয়েছিল, সেই ভাষা আন্দোলনেও বঙ্গবন্ধু ভূমিকা রেখেছেন। বায়ান্নর ২০ ফেব্রুয়ারি ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ সিদ্ধান্ত নেয়, ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারের জারি করা ১৪৪ ধারা ভেঙে মিছিল করা হবে। সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও এসেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। ওই সময় কারাগার থেকেই ১৪৪ ধারা ভেঙে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে আকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়ে দেন সবার কাছে। বাঙালির স্বাধীনতার সংগ্রামের এমন নানা ধাপেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেননি বঙ্গবন্ধু।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনের আগেও দেখা দেয় টানাপোড়েন। যুক্তফ্রন্ট তখন ভাঙনের পথে। সে সময় যুক্তফ্রন্টের পক্ষে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে দাঁড়িয়ে যান বঙ্গবন্ধু। আবার ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের পর আদমজীতে দাঙ্গা লাগলে সেই দাঙ্গা প্রতিরোধেও প্রথম এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এই আন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়েই মন্ত্রিত্ব ছেড়ে বেছে নিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ। কারণ তিনি জানতেন, জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে আন্দোলন, তার জন্য প্রথম দলকেই সুসংগঠিত করতে হবে। দলের মাধ্যমে মানুষের কাছে স্বাধীনতার বীজমন্ত্র পৌঁছে দিতে পারলে তবেই আসতে সাফল্য।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা ইশতেহারেই কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা রেখে বাকি সবকিছুই প্রাদেশিক সরকারের হাতে রাখার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী এ ভূখণ্ডের মানুষের কোনো দাবি-দাওয়াতেই কখনো কর্ণপাত করেনি। মানুষকে সবসময় বঞ্চিত করেছে অধিকার থেকে। ধীরে ধীরে তাই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীন হওয়াই নিয়তিতে পরিণত হয়। ষাটের দশকের শুরু থেকেই এ সংক্রান্ত আলোচনা দানা বাঁধতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুও বুঝতে পারেন, যে সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য তিনি লড়ছেন, তার জন্য স্বাধীনতার বিকল্প নেই। সেই ভাবনা থেকেই ছেষট্টির ছয় দফার মাধ্যমেই মূলত উঠে আসে পূর্ব বাংলাকে স্বাধীন করার দাবি। সেই দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে জাতি।

বিজ্ঞাপন

পাকিস্তানি শোষকগোষ্ঠী তখন বুঝে গেছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তাই রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয় শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। দায়ের করা হয় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। কারবন্দি করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। কারাগারে থাকলেও বঙ্গবন্ধু তার লড়াই থামিয়ে রাখেননি। কারাপ্রকোষ্ঠ থেকেই নির্দেশনা দিতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীদের। ছয় দফাকে আরও পরিমার্জন করে তখন ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে উত্থাপন করা হয় ১১ দফা দাবি। গড়ে ওঠে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। সারাদেশে গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

১৯৬৯ সালে আইয়ুব শাহীর পতনের পর জেনারেল ইয়াহিয়া ক্ষমতায় এসে ১৯৭০ সালে নির্বাচন দিতে রাজি হন। ১৯৬৯-৭০ সালের নির্বাচনি প্রচারণার সময় বঙ্গবন্ধু নজিরবিহীন জনসংযোগের মাধ্যমে গোটা জাতিকে স্বাধিকারের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন। নির্বাচনের প্রচারের সময় বঙ্গবন্ধু পূর্ববঙ্গকে বাংলাদেশ হিসেবে উল্লেখ করতে থাকেন এবং দলের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী প্রতীক ও স্লোাগানগুলো ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়তে থাকে মানুষের মাঝে।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পায় আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের বৈধতা পান। প্রাদেশিক পরিষদেও তার দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি পশ্চিম পাকিস্তানিরা। একের পর তারিখ দিয়েও স্থগিত করা হয় অ্যাসেম্বলি। একাত্তরের শুরু থেকেই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতির মধ্যে গড়ে উঠতে থাকে নজিরবিহীন ঐক্য। ৩ মার্চ সারাবাংলায় হরতাল পালিত হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য প্রেসিডেন্টের প্রতি দাবি জানান। ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডাক দেন স্বাধীনতার। তার ডাকে সারাদেশের মানুষ, এমনকি সরকারি কর্মচারীরাও সাড়া দেন। ঐতিহাসিক সেই ভাষণে ‘ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলা’র যে ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু, কার্যত এর মাধ্যমেই সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পথেই তিনি ধাবিত করেন জাতিকে। কাগজে-কলমে তখনো পশ্চিম পাকিস্তানিরা ক্ষমতা দখল করে থাকলেও বঙ্গবন্ধু ওই দিন থেকেই পরিণত হন অঘোষিত সরকারপ্রধানে।

পরে ২৫ মার্চ পর্যন্তও ক্ষমতা হস্তান্তর প্রশ্নে পশ্চিম পাকিস্তানিরা টালবাহানা করতে থাকে। নানা আলোচনা-বৈঠক চললেও সফল হয়নি কোনোটিই। ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানিরা। সে রাতেই ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন বঙ্গবন্ধু। বলেন, ‘এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণ, তোমরা যে যেখানেই আছ এবং যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শেষ পর্যন্ত দখলদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমি তোমাদের আহ্বান জানাচ্ছি। পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর শেষ সৈনিকটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে।’

মানুষের স্বাধীনতার যে আকাঙ্ক্ষা, সেই আকাঙ্ক্ষাকেই আজীবন নিজের রাজনীতিতে ধারণ করেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু স্বাধীনতা তো মুখে বললেই আসে না। ধাপে ধাপে গড়ে তুলতে হয় স্বাধীনতার সোপান, মানুষকে তৈরি করতে হয় স্বাধীনতার জন্য। সাতচল্লিশ পরবর্তী সময়ে রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ঠিক সেই কাজটিই করেছেন বঙ্গবন্ধু।

ষাটের দশকের গোড়ার দিকেই স্বাধীনতাকে অবশ্যম্ভাবী মনে করলেও তখনই স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। এমনকি একাত্তরের ৭ মার্চের সেই ভাষণেও অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল, বঙ্গবন্ধু সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করবেন। কিন্তু রাজনীতির মহানায়ক বঙ্গবন্ধু সেদিন সরাসরি স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলেও মানুষের মধ্যে ঠিকই পৌঁছে দিয়েছেন স্বাধীনতার বার্তা। তাদের প্রস্তুত করেছেন সশস্ত্র সংগ্রামের জন্য। আর সে কারণেই মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাস কারাবন্দি থেকেও যুদ্ধের ময়দানেও সর্বাধিনায়কের ভূমিকায় ছিলেন তিনিই।

মানুষের জন্য উৎসর্গ করা যে জীবন বঙ্গবন্ধুর, তার পুরোটাই কেটেছে লড়াই-সংগ্রামে। সাতচল্লিশ থেকে একাত্তর পর্যন্ত রাজনীতির যে ২৪ বছর, সেই ২৪ বছরের মধ্যে প্রায় ১৩ বছর, সুনির্দিষ্টভাবে বললে ৪ হাজার ৬৭৫ দিন কারাবন্দি হয়ে থাকাই প্রমাণ করে— স্বাধীনতার সংগ্রামে বিন্দুমাত্র আপস করতে রাজি ছিলেন না তিনি। দিনের পর দিন কারাগারে থাকতে হলেও কখনো আক্ষেপ করেননি। বরং কারাগারে থাকা অবস্থায় তার লেখা বইগুলোই বলছে, কারাগারে থেকেও তার সার্বক্ষণিক ভাবনাই ছিল মানুষের কল্যাণ।

মুক্তিযুদ্ধ শেষে যখন বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত করে লন্ডনে পাঠানো হলো, বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বসলেন তিনি। শুরুতেই বললেন, ‘জনগণের মাঝে ফিরে যেতে চাই।’ ওই সংবাদ সম্মেলনেই ফোনে কথা হয় অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে। তাজউদ্দীন আহমদকে ফোন করেই বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘হ্যালো, তাজউদ্দীন; আমি সাংবাদিক পরিবেষ্টিত হয়ে আছি। আমি তাদের কী বলব? দেশের মানুষ কেমন আছে? বর্বর পাকিস্তান বাহিনী কর্তৃক বাংলাদেশে যে অগণিত নারী, পুরুষ ও শিশু নিহত হয়েছে, এ মুহূর্তে তাদের কথা আমার জানতে খুব ইচ্ছে করছে।’

ঠিক এভাবেই আজীবন মানুষের কথাই ভেবেছেন বঙ্গবন্ধু। মানুষের জন্যই উৎসর্গ করেছেন জীবন।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন