বিজ্ঞাপন

রোমাঞ্চকর ম্যাচে চেলসির কাছে হেরেও সেমিতে রিয়াল

April 13, 2022 | 3:41 am

স্পোর্টস ডেস্ক

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ থেকে চেলসির বিপক্ষে ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় পেয়ে বেশ স্বস্তিতেই ছিল রিয়াল মাদ্রিদ। তবে ফিরতি লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চেলসির সামনে যেন দাঁড়াতেই পারেনি অল হোয়াইটসরা। রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট। সেখানে চেলসি ৩-১ গোলের ব্যবধানে জিতলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। আর অতিরিক্ত সময়ে করিম বেনজেমার দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান ৩-২ করে রিয়াল। আর দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিক রিয়াল। এরপর বাকি সময়টা কোনো গোল হজম না করে কাটিয়ে দিলে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের টিকিট কাটে রিয়াল।

বিজ্ঞাপন

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে করিম বেনজেমার হ্যাটট্রিকে ৩-১ গোলের জয় পায় রিয়াল। তবে ফিরতি লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যাচের ১৫ মিনিটে মেসন মাউন্ট, ৫১ মিনিটে অ্যান্তোনিও রুডিগার আর ৭৫ মিনিটে টিমো ভার্নার গোল করে চেলসিকে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন। শঙ্কা জেগেছিল নির্ধারিত ৯০ মিনিটে হেরেই কোয়ার্টার থেকে রিয়ালের বাদ পড়ার। তবে ম্যাচের ৮০তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের জাদুকরী পাস থেকে দূর পোস্টে পা ছুঁইয়ে বল জালে জড়িয়ে রিয়ালের আশা জাগিয়ে তোলেন রদ্রিগো। রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে ফেরে ৩-১ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও।

দুই লেগ মিলিয়ে তখন রিয়াল  ও চেলসি সমানে সমান ৪-৪ গোলে। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে ম্যাচের ৯৬তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়র দুর্দান্ত এক ক্রস করেন ডি-বক্সের ভেতর। আর সেখান থেকে লাফিয়ে উঠে করিম বেনজেমা হেড করে বল জালে জড়ান। প্রাণ ফেরে স্তাদিও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। রিয়াল মাদ্রিদ দুই লেগ মিলিয়ে এগিয়ে যায় ৫-৪ গোলের ব্যবধানে। আর শেষ পর্যন্ত এই ব্যবধান ধরে রেখে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের টিকিট কাটে রেকর্ড ১৩বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ।

বিজ্ঞাপন

স্তাদিও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুকে যেন নিজেদের ঘরের মাঠ ভেবেই খেলতে নেমেছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে চেলসি। থামস তুখেলের আরও একটি মাস্টারক্লাস ট্যাকটিকসে কুপোকাত রিয়াল মাদ্রিদ। ১৫তম মিনিটে রিয়ালের রক্ষণভাগকে উপরে তুলে আনেন টিমো ভার্নার। বল নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন ততক্ষণ যতক্ষণ রিয়ালের রক্ষণভাগ তাকে চাপ দিতে না আসে। যখনই আলাবা-নাচো রক্ষণ লাইন ছেড়ে উঠে এসে ভার্নারের কাছ থেকে বল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন তখনই সেন্ট্রাল ডিফেন্সের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ঢুকে পড়েন মেসন মাউন্ট আর তাকে দেখতে পেয়ে দুর্দান্ত এক ফ্লিকে বল পাস করেন ভার্নার। ডি-বক্সের ভেতর ফাঁকায় বল পেয়ে জোরাল শটে বল জালে জড়িয়ে চেলসিকে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে নেন মাউন্ট।

এরপরে গোটা প্রথমার্ধ ধরেই কেবল চেলসির আধিপত্য। মধ্যমাঠে এনগোলো কান্তে আর মাতেও কোভাসিসের জুটি পাত্তায় দিচ্ছিল না ক্রুস-মদ্রিচ আর ক্যাসেমিরোদের। প্রথমার্ধে আধিপত্য ধরে রেখেই বিরতিতে যায় চেলসি। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দেয় অল ব্লুজরা। দ্বিতীয় গোল পেতে অপেক্ষা করতে হয়নি বেশি সময়। দ্বিতীয়ার্ধের ছয় মিনিট পেরোতে না পেরোতেই কর্নার থেকে মেসন মাউন্টের উড়ে আসা বল হেড করে জালে জড়ান অ্যান্তোনিও রুডিগার। চেলসি এগিয়ে যায় ২-০ গোলের ব্যবধানে। আর দুই লেগ মিলিয়ে ৩-৩ গোলে সমতায় ফেরে।

বিজ্ঞাপন

খেলার সময় এক ঘণ্টা পেরিয়ে তিন মিনিটের খেলা চলছে। বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে গোল করেন চেলসির ফুলব্যাক মার্কোস আলোন্সো। চেলসি এগিয়ে যায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে। তবে নাটকের তখন কিছুটা বাকি। রেফারি ভিএআরের সাহায্যে দেখতে পেলেন গোল করার আগে বল হাতে লেগেছিল আলোন্সোর। এতে কিছুটা রক্ষা মেলে রিয়ালের। তবে হতাশায় পোড়ে এর মিনিট তিনেক পরে এসে। ফারল্যান্ড মেন্ডির কাছ থেকে ভেসে আসা ক্রসে হেড করেন বেনজেমা কিন্তু ভাগ্যদেবী মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন বোধহয়। তাই তো বল ক্রসবারে লেগে বেরিয়ে গেলে হতাশা বাড়ে রিয়াল শিবিরে।

৭৫ মিনিটে এসে রিয়ালের কফিনে আরেকটি পেরেক ঠুকে দেন টিমো ভার্নার। মাতেও কোভাসিসের বাড়ানো বল ধরে রিয়ালের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে বল জালে জড়ান ভার্নার। চেলসি এগিয়ে যায় ৩-০ গোলের ব্যবধানে। সরাসরি চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিতে উঠতে চেলসির তখন আর মাত্র ১৫ মিনিট সময় বাকি। কিন্তু শেষ বাঁশির আগে হার মানতে নারাজ রিয়াল। ৮০ মিনিটে এসে বাঁ দিক থেকে লুকা মদ্রিচের জাদুকরী এক পাস দূর পোস্টে থাকা রদ্রিগোর উদ্দেশ্যে। বদলি খেলোয়াড় রদ্রিগো প্রথম টাচেই বল পাঠিয়ে দিলেন জালে। ম্যাচে ফিরল রিয়াল। ৩-১ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৪ গোলে সমতায়। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষ হলো সমতায়। খেলা গড়াল অতিরিক্ত সময়ে।

বিজ্ঞাপন

ঘরের মাঠে অতিরিক্ত সময়েই বাজীমাত রেকর্ড ১৩বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাধারীদের। ৯৬তম মিনিটে বাঁ দিক দিয়ে বল নিয়ে একাই আক্রমণে ওঠেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। গোটা ম্যাচে তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে না পারা ভিনিসিয়াস এবার জ্বলে উঠলেন। চেলসির ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে বল ক্রস করলেন বেনজেমার উদ্দেশ্যে। এবারে আর কোনো ভুল করেননি ফ্রেঞ্চ এই স্ট্রাইকার। হেড করে সোজা বল জড়ালেন জালে। রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচে ফিরল। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৩-২ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ গোলের ব্যবধানে জিতে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করল রিয়াল।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন