November 27, 2017 | 7:38 am
সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের তিন সপ্তাহের অবরোধের পর ইয়েমেনে ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য আজ সোমবার প্রায় ২৫ হাজার টন গম অবতরণ করা হবে। সারাদেশে চলা সার্বজনীন দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত মানুষের জন্য পাঠানো প্রথম সহায়তা এটি।
ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) একটি মুখপাত্র আবীর ইতেফা জানান, গমের এই চালান ইয়েমেনের পশ্চিমে হাউটি বিদ্রোহী উধ্যুষিত লোহিত সাগরের সালিফ বন্দরে রবিবার পৌঁছেছে।
এ মাসের শুরুর দিকে হাউটি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে যার জবাবে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনের সকল নৌ ও বিমানবন্দর অবরুদ্ধ করে রাখে।
জাতিসংঘের মুখপাত্র সতর্ক করেছে যে, এই অবরোধ তুলে নেওয়া না হলে ইয়েমেন এ শতকের সবচেয়ে বড় দুর্ভিক্ষে পরতে পারে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দরিদ্র দেশটি এমনিতেই আমদানি করা গমের উপর খুব বেশি নির্ভরশীল।
লোহিত সাগরের সলিফে বন্দর হোডাইডার থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, বিদ্রোহীরা এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে। হোডাইডা বন্দর জাতিসংঘের খাদ্য ও ওষুধ সহায়তা দেওয়ার মূল দ্বার। কিন্তু জাতিসংঘ বলছে এটি সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট দ্বারা অবরুদ্ধ রয়েছে।
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা সংস্থাটি রোববার জানিয়েছে, শনিবার প্রায় ১.৯ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন ইয়েমেনে নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে ইউনিসেফের পরিচালক জিরেট ক্যাপেলেরার জর্ডানের রাজধানী আম্মানে সাংবাদিকদের বলেন, “খাবার পানি পরিশোধন ট্যাবলেট ও ওষুধ নিয়ে জাহাজ দুটি হোডাইডা বন্দরের কাছে যায়। তবে ইউনিসেফের জাহাজগুলি এখনও নোঙর ফেলার অনুমোদন পায়নি।”
ক্যাপেলেরার বলেন, “আমরা আশা করি সবাই তাদের প্রতিশ্রুতিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখবে, এই খাদ্য সহায়তা জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজন”
ইয়েমেনের ১১ মিলিয়নেরও বেশি শিশুদের সাহায্যের প্রয়োজন। ইয়েমেনে প্রতি ১০ মিনিটে একটি শিশু প্রতিরোধ যোগ্য রোগে মারা যায়। জানান তিনি।
“এটা স্পটতই বলা যায়, ইয়েমেনের ভবিষ্যৎ পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। একটি শিশুর জন্য এর চেয়ে খারাপ কিছু হতে পারে না। আমি যত মানবিক সংকট দেখছি ইয়েমেন তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে আছে।” বলেছেন ক্যাপেলের।
জাতিসংঘ ইয়েমেনকে এক নম্বর মানবিক সঙ্কটাপন্ন দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এখানে ১৭ মিলিয়ন লোকের খাদ্যের প্রয়োজন, ৭ মিলিয়ন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছে।
এ পর্যন্ত শুধু কলেরার কারণেই দুই হাজার মানুষ মারা গিয়েছে।
ইয়েমেনে ২০১৫ সালে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। তখন হাউটিরা দেশটির রাজধানী সানাতে আক্রমণ করে এবং রাষ্ট্রপতি আবদ-রাব্বু মনসুর হাদীর সরকারকে বহিষ্কার করে।