বিজ্ঞাপন

‘ছেলের বউয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না’

April 20, 2022 | 2:44 pm

সৈয়দ সোহেল রানা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে প্রবেশের পথে খালা রোকেয়া বেগমের কোলে মাথা লুকিয়ে ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন লাল টুকটুকে ১৬ বছরের কিশোরী। হাতে তার এখনো লেগে আছে মেহেদীর রঙ। কিন্তু তার মনের রঙ কেড়ে নিয়েছে রাজধানীর নিউমার্কেটের সংঘর্ষ। অথচ আসছে ঈদে স্বামীর হাত ধরে ওই নিউমার্কেটেই যাওয়ার কথা ছিল তার।

বিজ্ঞাপন

ওই নববধূ নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে নিহত নাহিদের স্ত্রী। শ্বশুরের সঙ্গে এসেছেন স্বামীর লাশ নিতে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দিনভর চলা সংঘর্ষের মাঝে পড়ে গুরুতর আহত হন নাহিদ। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।

বিজ্ঞাপন

সন্তান হারানো পিতা নাদিমের সঙ্গে কথা হয় মর্গের সামনেই। তিনি বলেন, তিন ছেলের মধ্যে নাহিদ ছিল বড়। সে নিজেই ডালিয়াকে পছন্দ করেছিল। ছয় মাস আগে দুই পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে করিয়ে দিই। এখন তো ছেলের বউয়ে মুখের দিকে তাকতে পারছি না। আমার ছেলেকে কেন ওরা মারলো। সে তো মারামারি করতে যায় নাই। বাসা থেকে বের হয়ে কাজে যাচ্ছিল।

‘ছেলের বউয়ের মুখের দিকে তাকাতে পারছি না’

বিজ্ঞাপন

আর কিছুক্ষণ পরে নাহিদের লাশ নিয়ে রওনা হবেন তার স্বজনরা। স্বামী হারানো ডালিয়া খালার কোলে মাথা দিয়ে তখনো বিলোপ করছিলেন, নাহিদ জানত না মারামারির কথা। আমরাও কেউ জানতাম না। জানলে কখনো ওকে কাজে যেতে দিতাম না। আমার সব শেষ হয়ে গেল। আমি আমার স্বামী হত্যার বিচার চাই।

ছেলের বিচার চেয়ে মামলা করবেন কি না? জানতে চাইলে নাদিম বলেন, এখন আমি কার নামে মামলা করব? কার কাছে বিচার চামু? এই দুঃখ কষ্ট কারে বলুম আমি? আর কিছু বলার কিছু নাই।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, তাদের বাড়ি কামরাঙ্গীরচর মধ্য রসুলপুর দেওয়ানবাড়ী এলাকায়। এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগনালে ডি-লিংক পার্শ্বেল কোম্পানিতে চাকরি করতেন নাহিদ। সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন কাজের উদ্দেশে। দুপুর থেকে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বিকেলে ফেসবুকের মাধ্যমে তার আহত হওয়ার ছবি দেখতে পান তারা।

নাহিদের স্বজনরা জানান, লাশ প্রথমে কামরাঙ্গিরচরের বাসায় নেওয়া হবে। পরে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/এসএসআর/এএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন