বিজ্ঞাপন

জার্মান রাষ্ট্রদূত সঠিক কথা বলেননি: ফখরুল

April 21, 2022 | 1:22 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করে জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার যে কথাগুলো বলেছেন, সেটা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানে কবরে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন। ছাত্রদলের নতুন কমিটির নেতাদের নিয়ে জিয়ার কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যান বিএনপির মহাসচিব।

এর আগে, বুধবার (২০ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত `ডিক্যাব টকে’ জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার বলেন, ‘এটাতে (বিএনপি নেতাদের উদ্ধৃতি ) আমি কিছুটা অসন্তুষ্ট হয়েছি। আমার কর্তৃত্বের মধ্যে যা আছে, সে সম্পর্কে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলি আমি। এই উদ্ধৃতি নিয়ে আমি অসন্তুষ্ট।’

কোন বক্তব্য নিয়ে অসন্তুষ্ট?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যে উদ্ধৃতি পড়েছি, তা বাস্তবতার সাথে মেলে না। যেখানে বলা হয়েছে, ‘আমি বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ও গণতন্ত্র নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি— এমন শব্দচয়ন সত্য নয়।’

বিজ্ঞাপন

জার্মান রাষ্ট্রদূতের এমন বক্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই কথাগুলো উনি (জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার) সঠিক বলেননি। কারণ, আমাদের যিনি (দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী) বক্তব্য রেখেছিলেন, তিনি এ কথা (বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার হরণ প্রসঙ্গ) জার্মান রাষ্ট্রদূতকে কোর্ট করে বলেননি। বৈঠকে সামগ্রীকভাবে (ইনজেনারেল) যে কথাগুলো হয়েছে, বৈঠকের পর সেটাই তিনি (আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী) আপনাদের সামনে তুলে ধরেছেন।’

এর আগে, ১৭ মার্চ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার সঙ্গে বৈঠক করেন ।

বিজ্ঞাপন

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘তাদের আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আগামী নির্বাচন, মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে।’

আরও পড়ুন:

বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে অসন্তুষ্ট জার্মান রাষ্ট্রদূত

জার্মান রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বিএনপির রুদ্ধদ্বার বৈঠক

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বিষয়ে জার্মান রাষ্ট্রদূত কী বলেছেন?— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র সম্বন্ধে বিশ্বব্যাপী সবাই অবগত আছে। এখানে নতুন করে বলার কিছু নেই। এগুলো নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনাও হচ্ছে— এটা তো আপনারা জানেন।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর এই বক্তব্যের এক মাস পাঁচ দিন পর বুধবার (২০ এপ্রিল) নিজের অসন্তোষের কথা প্রকাশ করেন জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার ।

‘তারা ভয়ংকর অপরাধ করেছে’

‘আওয়ামী লীগ কী অপরাধ করেছে যে, তাদেরকে হটাতে হবে’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া এমন বক্তব্যের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তারা ভয়ংকর অপরাধ করেছে। এই দেশে তারা গণতন্ত্র হত্যা করেছে, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, এই দেশকে তারা দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের যে লক্ষ্য ছিল সেই লক্ষ্যকে ধূলিসাৎ করে দিয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই সংঘর্ষের (নিউমার্কেট) ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে দেশে কোনো সরকার নেই। তাদের (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী) চোখের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়েছে। কিন্তু সেটা বন্ধ করার জন্য কোনো পদক্ষেপ তারা নেয়নি। অধিকন্তু তাদের কর্মকর্তারা বক্তব্য দিচ্ছেন তারা কোনো পক্ষেই ছিলেন না, নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের নিষ্ক্রিয়তা এই ঘটনাকে আরও বেশি গুরুতর করছে। এই ঘটনায় হতাহতের দায় তাদের।’

ছাত্রদলের নতুন কমিটি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা জিয়াউর রহমানের মাজারে এসেছিলাম ছাত্রদলের আংশিক কমিটির নেতাদের নিয়ে। জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে, জিয়ারত করে তারা শপথ নিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলকে অত্যন্ত গতিশীল ও কার্যকর একটা সংগঠনের পরিণত করবে এবং অতি দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অতীত ঐতিহ্যকে সমুন্নোত রাখবে। তারা এও শপত নিয়েছে যে, এই কমিটির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করতে সাধ্যমতো ভূমিকা রাখবে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যে সংকট বাংলাদেশে তৈরি হয়েছে— গণতন্ত্র হীনতা, জনগণের ভোটের অধিকার হরণ এবং ছাত্রদলের ন্যূনতম দাবি পূরণ না করা— এই সংকট উত্তরণে যে আন্দোলন সেই আন্দোলনে ছাত্র সমাজের নেতৃত্ব দেবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মির্জা আব্বাস, আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, আসাদুজ্জমান রিপন, ফজলুল হক মিলন, আজিজুল বারী হেলাল, যুবদলের সুতলান সালাহউদ্দিন টুকু, মহানগরের আমিনুল হক, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহম্মদ জুয়েল প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একেএম

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন