বিজ্ঞাপন

রমেন দাশগুপ্ত-এর গল্প ‘পিদিম জ্বলা পরাণকাব্য’

May 2, 2022 | 5:19 pm

ভোরের আলো ফোটার যে ক্ষণ, যে সময়টাকে সূর্যের সঙ্গে আকাশের মিতালি হওয়ার মুহূর্ত বলে মৃন্ময়, সময়টা তার খুব প্রিয়। সময়টা যে সবসময় সে গভীর ঘুমে কাটায় তা নয়, আধো ঘুম-আধো জেগে থাকা। একান্ত নিভৃতে কাটানোর এ সময়টাতে কাক ডাকার শব্দও তার কাছে অসহ্য লাগে।

বিজ্ঞাপন

আধো ঘুমে কাঁথামুড়ি দিয়ে বিছানায় থাকা মৃন্ময়ের মোবাইলে, যাকে অফিসের ভাষায় সে মুঠোফোন বলে, সেখানে কারও অনুচ্চারিত বার্তা পৌঁছানোর শব্দ তাকে সচকিত করল, কিছুটা বিরক্তও। ঘুম ঘুম চোখে মুঠোফোনটি নিয়ে বিরক্তির চেয়েও বেশি হলো বিস্মিত, বার্তা পাঠিয়েছে বহ্নি ‘জান… কী করো?’

দীর্ঘ সময়ের সম্পর্কে বহ্নি তাকে নাম ধরে ডেকেছে, কখনো কখনো আবেগের আতিশয্যে কিছু অদ্ভুত সম্বোধনও সে করে। কিন্তু ‘জান’ সম্বোধন সে বহ্নির মুখে এই প্রথম শুনল। এ সম্বোধন মৃন্ময় তার বন্ধু সোহেলের প্রেমিকার মুখেই শুনত। ডাক শুনে হাসত মৃন্ময় আর বহ্নি। ঠোঁট ফুলিয়ে বহ্নি বলত, হাইব্রিড সম্বোধন।

সোহেলের প্রেমিকার হাইব্রিড সম্বোধন এখন বহ্নির মুখে! সেই হাইব্রিড ডাকে বিস্ময়ের ঘোর না কাটতেই দ্বিতীয় বার্তা মুঠোফোনে ডার্লিং, লাভ ইউ। ভিরমি খায় মৃন্ময়। পড়িমড়ি করে বিছানা ছেড়ে উঠে বসে সে বহ্নির কী হয়েছে! বছরের পর বছর চেষ্টা করেও যে মেয়েটার মুখ দিয়ে কিংবা মেসেজে একবারও বাক্যটি উচ্চারণ করাতে পারেনি মৃন্ময়, এমনকি মৃন্ময়ের মুখ থেকে অবলীলায় বাক্যটি শুনে লজ্জায় বিনম্র হত যার চোখের পাতা, সেই বহ্নি এসব কী লিখছে?

বিজ্ঞাপন

বিস্ময় কাটাতে সাত সকালে একবার বহ্নির মোবাইলে সরাসরি ফোনও করে ফেলল মৃন্ময়, এসব কী মেসেজ পাঠাচ্ছ বহ্নি? মুহূর্ত পেরোনোর আগেই জবাব মিলল বহ্নির— ‘আমি ডুবসাঁতারের ভালোবাসা চাই।’ যতটা দ্রুততার সঙ্গে বহ্নির জবাব মিলেছে, তার চেয়েও বেশি দ্রুততায় লাইন কেটে দিল সে। আচরণটা খুব নিষ্ঠুর লাগল মৃন্ময়ের কাছে। এরপর আবারও ফোন দিল মৃন্ময়, কিন্তু মোবাইল বন্ধ।

ডুবসাঁতারের ভালোবাসাএ আবার কেমন? মৃন্ময়ের অনুভবে তখন এমন জিজ্ঞাসা ডালপালা ছড়াচ্ছে। বামপন্থি ছাত্র রাজনীতিতে এক সময়ের মাঠ কাঁপানো নেতা মৃন্ময়, অমীমাংসিত যেকোনো পরিস্থিতির সমাধান সে করতে পারে খুব সহজেই। এরপরও তার স্বভাবটাই এমন যে মনের মধ্যে কোনো প্রশ্ন জাগলে তার উত্তর না মেলা পর্যন্ত শান্ত হতে পারে না। বহ্নির এমন আচরণেও অশান্ত হয়ে ওঠে মৃন্ময়। তার চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে ওঠে স্মৃতির পাতায় তোলপাড় তোলা কিছু মুহূর্ত।

তারও কিছুদিন আগে, যখন বর্ষার আগমনের সুর প্রকৃতিতে, একদিন মিরসরাইয়ের আবুতোরাব গ্রামে বৃষ্টির জল আর মানুষের চোখের জল মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছিল। চল্লিশ ছাত্রের মৃত্যুতে সেদিন লাশের জনপদে পরিণত হয়েছিল আবুতোরাব গ্রাম। সেখান থেকে ফিরে ভীষণ মন খারাপ ছিল মৃন্ময়ের। মনটাকে হালকা করার জন্য মধ্যরাতে ফোন দেয় বহ্নির মুঠোফোনে। কিন্তু মুঠোফোন বন্ধ। একবার, দু’বার, তিন বার, দশ বার… রাতজুড়ে অজস্রবার ফোন। সেই রাতে আর সচল হয়নি বহ্নির মুঠোফোন। অমীমাংসিত অনুভূতি নিয়ে ঘুমাতে যাওয়া মৃন্ময় ভোর হতেই আরেকবার ফোন দিল বহ্নির মোবাইলে। না, তখনো বন্ধ।

বিজ্ঞাপন

তারও কিছুদিন পর একদিন ঝুম বৃষ্টিতে ভেজার শখ হলো মৃন্ময়ের। মাঝে মাঝে সে এমনটা করে বৃষ্টি নেমেছে আকাশ ছাপিয়ে, হঠাৎ ইচ্ছে হলে মোটর সাইকেলের পেছনে বহ্নিকে বসিয়ে ছুটে যাবে সাগর পানে।

সেদিনও এমনই এক বৃষ্টির বিকেলে আকুতি ছিল মৃন্ময়ের মধ্যে, আকুতি ছিল বহ্নির মধ্যেও। সহকর্মী টিটুর মোটরসাইকেল ধার নিয়ে চেপে বসে বহ্নিকে নিয়ে। আকাশ ভেঙে নেমে আসা বৃষ্টির জলে একাকার হয়ে তারা একসময় পৌঁছে সাগর সীমানায়, উত্তাল তরঙ্গ সেদিন ভাসিয়ে নেয় চোরাবালির চর। বৃষ্টির জল, সাগরের জল এক হয়ে মিশে যায় দূর পাহাড়ের ছায়ায় থাকা মানব-মানবীর আবেগের জলে।

না, এটি নয় কোনো অরণ্যচারী মানবের নির্জন সেগুন পাতার ঘর। এক জনমের হংসমিথুন কিংবা ঘোর শ্রাবণের কোনো এক বিনিদ্র রজনীতে শোনা বেহুলা লক্ষীন্দরের কল্পিত বাসরঘরও নয়। তারপরও নিজেকে অশেষ করা স্বপ্নচারী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর বহ্নির আবেগ মৃন্ময়কে সংক্রমিত করার চেয়েও বেশি বিস্মিত করে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক শিক্ষা তাকে মুহূর্তের জন্য বহ্নির কাছ থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে নেয়।

সকালে মুঠোফোনে বহ্নির মেসেজ পাবার পর মৃন্ময়ের চিন্তায় আগের সেই বিস্ময়ের ঘোর। এক এক করে জমা হওয়া অনুষঙ্গগুলো জানাতে মৃন্ময় একবার ফোন দেয় হিল্লোলকে। বহ্নির সহপাঠী হিল্লোল, মৃন্ময়ের কাছের জন, দুষ্টুমি করে যাকে সে ডাকে ‘কমপ্ল্যান বয়’ বলে। বন্ধ হিল্লোলের মুঠোফোন। অমীমাংসিত অনুভূতির সমাধান পেতে নিরুপায় মৃন্ময় আরেকবার ফোন দেয় বহ্নির মোবাইলে, যথারীতি তখনো বন্ধ সেটা!

বিজ্ঞাপন

কিছু আপাত প্রশ্ন, কিছু আপাত উত্তরএমন অমীমাংসিত অনুভূতি নিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে অফিসের উদ্দেশে রিকশায় উঠল মৃন্ময়। মইনুলটার ইদানীং কী হয়েছে, ভূমিকা না দিয়ে যেন সে কথাই বলতে পারে না। রিকশায় ওঠার পর রিং বাজল মৃন্ময়ের। কল করেছে মইনুল। এ মুহূর্তে সে যে ধরনের কথাবার্তা বলার চেষ্টা করছে, তার কিছুটা হলেও আঁচ করে বুঝতে পারল মৃন্ময়, বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু মইনুলের মাইল পেরোনো ভূমিকায় এক সময় ফোন কেটে দেয় মৃন্ময় তুই অফিসে আয়, কথা হবে।

অমীমাংসিত অনুভূতি মৃন্ময়ের মেজাজকেও কিছুটা খিটখিটে করে দেয়। পুরো বিষয়টা এভাবে না বুঝলেও কিছুটা হলেও বুঝতে পারল তার অফিসের কনিষ্ঠ সহকর্মী নিশা। অফিস অ্যাসাইনমেন্ট একবার বুঝিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করাতে মৃন্ময় যেভাবে ক্ষেপে গেল, তাতে বিলম্ব না করে অ্যাসাইনমেন্ট কাভারের উদ্দেশে চলে যাওয়াকেই এ মুহূর্তের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত মনে করল কিছুটা নাক উঁচু স্বভাবের মেয়েটি।

নিশা বেরিয়ে যাবার পর কম্পিউটার শাটডাউন দেয় মৃন্ময়। চেয়ারে বসে মাথায় হাত দেয়, অমীমাংসিত অনুভূতি-নিঃসৃত প্রতিক্রিয়া তার বোধে। মইনুল কী এত সিরিয়াস কথা বলতে চায় তার সাথে? হিল্লোল কি তাকে দূরে ঠেলে দিচ্ছে? ইদানীং বহ্নিও কি তাকে এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করছে? প্রশ্নের পর প্রশ্ন ঘিরে ধরে মৃন্ময়কে, যার কোনো উত্তর তার জানা নেই।

মৃন্ময় ভাবতে চাইল তার আচরণে কোনো সমস্যা আছে কি না। এক, দুই, তিন করে মেপে মেপে সে ভাবল বহ্নি কিংবা হিল্লোলের সঙ্গে তার আচরণের কথা। কিন্তু তেমন অসঙ্গতি না পেলেও এতটুকু ভাবল মৃন্ময় অমীমাংসিত অনুভূতির মৃত্যু ঘটাতে হলে তাকে এসব প্রশ্নের উত্তর পেতে হবে।

উত্তর খোঁজার তাগিদ মৃন্ময়কে বারবার প্রলুব্ধ করল হিল্লোলকে ফোন করতে। মৃন্ময়ের নির্ভরতার জন হিল্লোল তো বহ্নির কাছেও নির্ভর করার মতো একজন। দীর্ঘ সময়ের সম্পর্কে হিল্লোলকে বহ্নি একজন ভালো বন্ধু, নিজের ভাইয়ের মত জানে, সেটাই জেনে এসেছে মৃন্ময়।

অমীমাংসিত অনুভূতির মৃত্যু ঘটাতে তাই হিল্লোলের ওপরই নির্ভর করতে চাইল মৃন্ময়। কিন্তু কীভাবে, ফোন যে বন্ধ! এই একটি পরিস্থিতিতে মানুষ যে কতটা অসহায় হয়ে পড়ে, কত ভাবনা যে এসে ভিড় জমায় মনে, টেলিফোনে বলা মৃন্ময়ের কথায় বুঝতে পারল সহকর্মী টিটু।

অমিমাংসিত অনুভূতির সমাপ্তি ঘটাতে গিয়ে স্বভাববশত কিছুটা রহস্যের ইঙ্গিত দিয়ে যখন টিটু বলল চিন্তা করে দেখ, বহ্নি হয়তো সেই মেসেজ অন্য কারও জন্য লিখে রেখেছে, ক্রসফায়ারে সেটা চলে এসেছে তোর মোবাইলে। তখন নখ খুঁটতে শুরু করল মৃন্ময়, কোনো বিষয় নিয়ে খুব বেশি উদ্বিগ্ন হলে সবসময় মৃন্ময় যেটা করে।

টিটু ফোন কেটে দেওয়ার পরই বহ্নির নম্বর ডায়াল করছিল মৃন্ময়, কিন্তু বিপত্তি ঘটাল মইনুল। যতটা সিরিয়াস ভঙ্গিতে মইনুল মৃন্ময়ের অফিসে ঢুকল, তার চেয়েও বেশি সিরিয়াস হয়ে কিছু বলতে যাচ্ছিল, এবার ব্যাঘাত ঘটাল মৃন্ময়ের ফোন।

ফোন করেছেন ঢাকার বড় কর্তা, শহরের সব আলো-আঁধারির চারণক্ষেত্রগুলোর ময়নাতদন্ত করবেন তিনি। কাজ পাগল মৃন্ময় ছুটল আলো-আঁধারের খোঁজে, সঙ্গী স্বপ্ন বিনির্মাণের সহযাত্রী মইনুল।

পাহাড়ের খাঁজে যেখানে বসতি প্রাণহীন বাঘের, তার থেকে কিছুদূর গেলে রেলওয়ের বড় বাবুদের কাণ্ডকারখানা চোখে পড়ে আর ধীর হয়ে যায় ত্রিচক্রযানের গতি। ঠিক সেই ধরনের একটি মুহূর্তে অনিষ্পন্ন অনুভূতির মৃত্যু ঘটাতে মইনুলের হাত চেপে ধরল মৃন্ময়। পরামর্শ মইনুলের বসতে হবে সামনা-সামনি, উজাড় করে দিতে হবে জমে থাকা যত না বলা কথা।

মইনুলের না বলা কথার পরামর্শ মৃন্ময়কে এ মুহূর্তে একবার শত ব্যস্ততা ঝেড়ে সিআরবিতে গাছের ছায়ায় বসতে প্রলুব্ধ করে। নিস্তরঙ্গ এই সময়ে যখন সূর্যের তপ্ত রশ্মিকেও আটকে দেয় গাছের শাখা, তখন মৃন্ময়ের নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম।

উদ্বেগ যখন সীমা ছাড়াল, ব্যক্তিত্বও তখন সীমানা ছাড়িয়ে গেল। মৃন্ময়ের কপোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল কয়েক ফোঁটা জল। মৃন্ময়ের পিদিম জ্বলা পরাণকথা ঝলসে ওঠে মইনুলের কাছে। উদ্বেগের চিহ্ন তখন মইনুলের কপালেও। যখন শুনে যতই ঘনিয়ে আসছে সময়, ততই বহ্নির গতি হয়ে যাচ্ছে স্তব্ধ, আবেগ স্পর্শ করে মইনুলকেও।

কোন এক জ্যোৎস্না রাতে কর্ণফুলীর তীরে সবুজ ঘাসের উদ্যান সাক্ষী হয়েছিল এক হংসমিথুনের জনম জনমের ভালোবাসার, ডুবসাঁতারে সুখ খুঁজে নেওয়া যে পানকৌড়িরা চুপি চুপি তীরে এসে শুনেছিল সেই ভালোবাসার গল্প, তারা কি জেনে যাবে সবটাই আসলে পরিণত হচ্ছে মিথ্যার বেসাতিতে? মৃন্ময় আর মইনুলের অনুভবে এমন হাজারও প্রশ্ন।

মইনুলের পরামর্শেই নিজের মুঠোফোনে একবার বহ্নির টাইমলাইনে গেল মৃন্ময়। বহ্নির স্ট্যাটাস ‘বদলে গেছে মুঠোফোনের সিম, বদলে গেছি আমি, বদলে গেছে আমার ডুবসাঁতারের সহযাত্রী’।

মৃন্ময়ের বুকের ভেতর শুরু হল তোলপাড়। হঠাৎ আকাশ ভেঙে নেমেছে বৃষ্টি। সেই বৃষ্টি পাহাড়ের ওপর থেকে ঢল হয়ে এসে যেন ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাকে। এক ঝাপটায় মৃন্ময়ের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে হিল্লোলের টাইমলাইনে গেল মইনুল ‘বদলে গেছে মুঠোফোনের সিম, বদলে গেছি আমি, নতুন করে পেয়েছি আমি ডুবসাঁতারের সহযাত্রী’।

অঝোর বৃষ্টি আর মৃন্ময়ের চোখের জল এক হয়ে গড়িয়ে পড়ে জমা হয় সবুজ ঘাসের ওপর বিন্দু বিন্দু জলকণা হয়ে। মুহূর্তের পর মুহূর্ত পেরোয় নিশ্চুপ থেকে। অব্যক্ত অনুভূতির প্রকাশ ঘটে মৌনতায়। মৃন্ময় এক এক করে ভাবতে থাকে তার সীমাবদ্ধতার কথা হুট করে রিকশায় চাপতে পারে না সে, এমন কোনো বন্ধু নেই যাকে বললেই সাঁই সাঁই করে ছুটে আসবে বিলাসযান, মাসান্তে দু’বার পোড়া মাংসের স্বাদ নিতে গেলে ধেয়ে আসে যাপিত জীবনের বোঝা। একেই কি বলে অক্ষমতা? নাকি অযোগ্যতা?

দূর সরোবরে ফোটে যে কমল, পিদিম জ্বালিয়ে মধ্যরাতে সেই কমল তুলে তার হাতে দেওয়ার নাম যদি হয় ভালোবাসা, তবে সেই ভালোবাসা কি কখনো শর্তের বাঁধনে বন্দি হয়? রাত জেগে টিনের চালে টুপটাপ শিশির পড়ার শব্দে যে পেয়েছিল আলিঙ্গনের আতিথেয়তা, সত্যিকারের ভালোবাসা কি তার কাছে এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে ইতিকথা? দুর্মূল্যের বাজারে ভালোবাসা যদি এত সস্তায় বিকোয়, তবে তারুণ্যে নেওয়া নৈতিকতার শপথ কি ছিল শুধু কটা কাগুজে বুলি? নাকি গতিবেগের বিজ্ঞান আবেগ কেড়ে নিয়ে ভালোবাসার সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে? নিজের কাছেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজে মৃন্ময়।

তারপর ব্যস্ত নাগরিকদের এই শহরে একদিন গোধূলি বেলায় কিচির-মিচির করে পাখির নীড়ে ফেরার শব্দ শোনে মৃন্ময়। আলো-আঁধারির সেই বেলায় লোডশেডিংয়ের ফাঁকে আকাশ থেকে উঁকি দিচ্ছিল চাঁদ। এই বেলাতেই একবার আলো-আঁধারির নিরাপদ সরোবরের ময়নাতদন্ত করতে গিয়ে মৃন্ময় আর মইনুলের চোখ স্থির হয় আরেকটি আলিঙ্গনের আতিথেয়তার মুহূর্তে।

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন