বিজ্ঞাপন

রোমাঞ্চকর প্রত্যাবর্তনে সিটিকে হারিয়ে ফাইনালে রিয়াল

May 5, 2022 | 3:46 am

স্পোর্টস ডেস্ক

ম্যাচের তখন ৯০ মিনিটের খেলা চলে। রিয়াল মাদ্রিদ ঘরের মাঠে ১-০ গোলে পিছিয়ে আর দুই লেগ মিলিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি তখন এগিয়ে ৫-৩ গোলের ব্যবধানে। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে রিয়ালের তখনও দরকার আরও দুটি গোলের। ম্যাচের ৯০তম মিনিটে করিম বেনজেমার অ্যাসিস্ট থেকে রদ্রিগো গোল করে সমতায় ফেরান। তবে ফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে তখনও কমপক্ষে এক গোলের দরকার রিয়ালের। পরের মিনিটে মার্কো অ্যাসেন্সিওর ক্রস থেকে মাথা ছুঁইয়ে নিজের এবং দলের দ্বিতীয় গোল করেন রদ্রিগো। আর তাতেই সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আরও একটি জাদুকরী রাত। আরও একটি রোমাঞ্চকর চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচের জন্ম।

বিজ্ঞাপন

দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ গোলে সমতায় ফিরল রিয়াল। অ্যাওয়ে গোলের নিয়ম বাতিলের কারণে ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। আর অতিরিক্ত সময়ের ৯৫তম মিনিটে পেনাল্টি স্পট থেকে গোল করে রিয়ালকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে নেন করিম মোস্তফা বেনজেমা। শেষ পর্যন্ত এই ৩-১ গোলের ব্যবধান আর দুই লেগ মিলিয়ে ৬-৫ গোলের ব্যবধানে সেমিফাইনাল জিতে ফাইনালের টিকিট কাটে রিয়াল মাদ্রিদ।

আগামী ২৯ মে শিরোপা লড়াইয়ে আরেক ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের মুখোমুখি হবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

বিজ্ঞাপন

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শুরু থেকেই বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটি। আক্রমণও করছিল কেভিন ডি ব্রুইন, রিয়াদ মাহারেজরা বেশ জোরেশোরেই। তবে প্রথমার্ধে করিম বেনজেমা আর ভিনিসিয়াস জুনিয়রের গোল মিসের কারণে জমে ওঠেনি লড়াই। প্রথমার্ধে গোলের সুযোগ পেয়েছিল সিটিজেনরাও তবে ডি ব্রুইন, বার্নার্দো সিলভা এবং রিয়াদ মাহারেজ প্রত্যেকেই নষ্ট করেছেন সুযোগ। এতেই প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যতে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই লিড নিতে পারত রিয়াল। ৪৬তম মিনিটে কার্ভাহালের ক্রস থেকে ডি-বক্সের ছয় গজের ভেতর বল পেয়ে যান ভিনিসিয়াস, কেবল পা ছোঁয়ালেই বল জালে জড়াবে। তবে পা ঠিকই ছুঁইয়েছিলেন ভিনিসিয়াস কিন্তু বল রাখতে পারেননি লক্ষ্যে আর তাতেই ম্যাচে লিড নেওয়া হয় রিয়ালের। এরপর একের পর এক আক্রমণ করা যাচ্ছিল রিয়াল। তবে ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় মিলছিল না গোলে দেখা।

বিজ্ঞাপন

ম্যাচের ৭৩তম মিনিটে এসে বার্নার্দো সিলভার লফটেড পাস রিয়ালের ডি-বক্সে পেয়ে যায় রিয়াদ মাহারেজ। ডান দিকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের জোরালো শটে কাছের পোস্টে থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে সিটিকে ১-০ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে নেন মাহারেজ। এরপর ৮৭তম মিনিটে ম্যাচের প্রায় শেষ টেনে ফেলেছিল সিটিজেনরা। বাঁ দিক থেকে জ্যাক গ্রিলিশের মাটি কামড়ানো ক্রস বাঁক নিয়ে এগোচ্ছিল জালের দিকেই। তবে একদম শেষ মুহূর্তে এসে গোললাইন থেকে বল বিপদমুক্ত করে রিয়ালকে ২-০ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তে দেননি ফারল্যান্ড মেন্ডি।

আর এরপরেই বার্নাব্যুতে রচিত হলো রূপকথা। সব আশার প্রদীপ তখন নিভতে শুরু করেছে। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তের খেলা চলছে। তখনও রিয়াল দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে। অর্থাৎ ফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে হলে আরও কমপক্ষে দুই গোল করতে হবে হাতে সময় খুবই সীমিত। রিয়াল মাদ্রিদ রূপকথা লিখলো রদ্রিগোর হাত ধরে। ৯০তম মিনিটে কামাভিঙ্গার কাছ থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের ডান দিক থেকে গোলমুখে ক্রস করেন করিম বেনজেমা। সিটির রক্ষণভাগ এবং গোলরক্ষকের সামনে থেকে ছো-মেরে বল কেড়ে নিয়ে তা জালে পাঠিয়ে ১-১ গোলে রিয়ালকে সমতায় ফেরালেন রদ্রিগো।

বার্নাব্যুতে তখন অতিরিক্ত সময়ের খেলা চলছে। রিয়ালের সামনে ম্যাচে ফিরতে রয়েছে আর মাত্র তিন মিনিট। প্রথম গোলের পরের মিনিটে কার্ভাহালের ক্রস থেকে প্রথমে মাথা ছোঁয়ান অ্যাসেন্সিও আর সেখান থেকে হাওয়ায় ভাসা বল পেয়ে যান রদ্রিগো, লাফিয়ে উঠে জোরালো হেডে আবারও বল পাঠান জালে। রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে যায় ২-১ গোলের ব্যবধানে। আর দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৫ গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। এরপর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।

বিজ্ঞাপন

অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই আক্রমণে ঝাঁপিয়ে পড়ে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। সুফল মেলে মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায়। বল নিয়ে সিটির ডি-বক্সে ঢুকে পড়া বেনজেমাকে আটকাতে ফাউল করে বসেন রুবেন দিয়াজ। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। এরপর ভিএআরের সাহায্য নিয়েও পেনাল্টির সিদ্ধান্তে অটল থাকেন রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করে রিয়ালকে ৩-১ ব্যবধানের লিড এনে দেন বেনজেমা। আর দুই লেগ মিলিয়ে রিয়াল এগিয়ে যায় ৬-৫ গোলের ব্যবধানে।

এরপর ম্যাচের বাকি সময় দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও আর গোলের দেখা পায়নি কেউই। এতেই ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালের টিকিট কাটে রিয়াল।

সারাবাংলা/এসএস

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন