বিজ্ঞাপন

চাঁদা না পেয়ে সেনা স্টাফের ওপর হামলা, ঘরবাড়ি ভাঙচুর-লুটপাট

May 6, 2022 | 8:14 pm

লোকাল করেসপন্ডেন্ট

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা): ঢাকার কেরানীগঞ্জের হযরতপুর এলাকা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেনাবাহিনীর এক স্টাফকে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। ওই সেনা স্টাফ কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে পুনরায় তার বাড়িতে মিন্টু বাহিনী নামে একটি সন্ত্রাসী দল লুটপাট ও সন্ত্রাসী হামলা চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে উপজেলার কানারচর এলাকায় হামলা ও লুটের ঘটনা ঘটে। হামলায় সেনা স্টাফ বাবু মিয়া (৪০) ও শুক্কুর আলী (৬০) সহ মোট ৫ জন দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরতর আহত হন।

এ সময় মিন্টু বাহিনীর সদস্যরা সেনা স্টাফ বাবুর কাছে থাকা নগদ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ঘরে থাকা ৮ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়।

আহতরা হলেন বাবু মিয়া, শুক্কুর আলী, বাবু মিয়ার মা আনোয়ারা বেগম ও মেয়ে জেরিন আক্তারসহ আরও কয়েকজন। পরে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয়রা স্যার সলিমুল্লাাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

বিজ্ঞাপন

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানায়, বাবু মিয়া ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের স্টাফ। এছাড়াও তিনি কানারচর এলাকার একজন জমি ব্যবসায়ী। এক ছেলে ও এক মেয়েসহ স্ত্রী নিয়ে কানারচর এলাকায় বসবাস করছে। বেশ কয়েকমাস আগে একই এলাকার ওমর ফারুক মিন্টুর সন্ত্রাসী বাহিনী তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। বাবু মিয়া চাাঁদা না দিয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। এরপর থেকে মিন্টু বাহিনীর অত্যাচার ও হুমকির ভয়ে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গতকালের হামলার পর থেকে ভয়ে নিজের বাসায় যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না। পরিবার নিয়ে চাচাতো ভাইয়ের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন।

আহত বাবু মিয়া বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আমি একটি জমি বিক্রি করে টাকা নিয়ে বাসায় আসি। তখন আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় মিন্টু বাহিনীর সদস্যরা আমার ও আমার সঙ্গে থাকা মামা শুক্কুর আলীর ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত শুরু করে। আমার কাছে থাকা কাছে থাকা নগদ ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও ঘরের দরজা ভেঙে আলমারিতে থাকা ৮ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে নেয়। তারপর ওমর ফারুক মিন্টু, আসাদুল, আলম, সোহেল, জাহাঙ্গীর ১ ও জাহাঙ্গীরসহ আরও বেশ কয়েকজন আমাকে তুলে নিয়ে যায় পাশের ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে মারধর করে। এ সময় আমার গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে আমি হাত দিয়ে থামাই। আমার হাত কেটে যায়, এছাড়া হকি স্টিক ও রড দিয়ে বেদম মারধর করার ফলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’

সেনা স্টাফ বাবু মিয়ার মা আনোয়ারা বেগম ( ৭৩) বলেন, ‘মিন্টু বাহিনী যখন আমার ছেলেকে মারধর করছিল তখন ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমি ওদের হাতে-পায়ে ধরি। তখন মিন্টু বাহিনী আমাকেও মারধর করে শাড়ি ও ব্লাউজ ছিড়ে ফেলে। আমি এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

বিজ্ঞাপন

বাবু মিয়ার ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, ‘মিন্টু বাহিনীর অত্যাচারে কানারচর এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মিন্টুর নামে থানায় একাধিক মামলাও রয়েছে। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। চাঁদা না দেওয়ায় আমার বাবা ও ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে ও বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়।’

হযরতপুর ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এমন কোনো অপরাধ নেই যে, মিন্টু বাহিনী করে না। এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, জমি দখল থেকে শুরু করে সব ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। এদের কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা দরকার।’

হামলা ও লুটপাটের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মিন্টু বলেন, ‘আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। মারামারি হয়েছে এটি সত্য। মারামারি লেগে গেলে তখন তো আর কিছু করার থাকে না।’

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালাম মিয়া বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

 

সারাবাংলা/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন