বিজ্ঞাপন

মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে রেল ভ্রমণ, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন

May 7, 2022 | 11:49 am

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়ার পরেও জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করার পর টিটি বরখাস্ত হওয়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পাকশী রেলওয়ে। সরকারি পরিবহন কর্মকর্তাকে (পাকশী) আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

পাশাপাশি রোববার ( ৮ মে) বরখাস্ত হওয়া ওই টিটিকে ডিসিও পাকশী দফতরে ব্যাখ্যার জন্য তলব করা হয়েছে।

শনিবার ( ৭ মে) পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (ডিসিও) নাসির উদ্দিনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সেখানে ঘটনার বর্ণণা দিয়ে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) রাতে কিছু যাত্রী ঈশ্বরদী স্টেশনে আসে কাউন্টারে আসেন। ঢাকার উদ্দেশ্যে যেতে যাওয়া যাত্রীরা কাউন্টারে কোনো টিকিট না পেয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে উঠে পড়েন। যেখানে জায়গা পান সেখানে বসেও পড়েন। এরপর ওই ট্রেনের ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারকে (টিটি) শফিকুল ইসলাম ট্রেনে উঠে যাত্রীদের কাছ থেকে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত তিন হাজার টাকা করে ভাড়া দাবি করেন।

বিজ্ঞাপন

তখন যাত্রীরা জানান, তারা ঈশ্বরদী থেকে টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে ট্রেনে উঠেছেন বলে টিটিকে জানান। তারা ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে ভাড়া নেওয়ার জন্য টিটিকে অনুরোধ করেন। কিন্তু টিটিই জবাবে বলেন, ‘ট্রেন কী তোর বাপের?’

তখন যাত্রী বলেন, ‘ট্রেন কি তোর বাপের মানে কি? বিপদে পইড়া ট্রেনে উঠেছি। আপনি ভাড়াটা নেন।’

‘তখন টিটিই বলেন দ্বিগুণ জরিমানাসহ খুলনা থেকে ভাড়া দিতেই হবে। তখন ওই তিন যাত্রী বলেন, ‘এত টাকা আমাদের কাছে নেই। ঈশ্বরদী থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৩০০ টাকা করে রাখেন।’

বিজ্ঞাপন

তখন টিটি শফিকুল বলেন, ‘টাকা না দিলে লাথি দিয়ে ট্রেন থেকে ফেলে দিব। তারপর আরও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন।’

তারপর তাদেরকে টিকিট করে দেওয়া হয়। যাত্রীরা টিটির মুখ থেকে এই ধরনের বকা শুনে চরম মর্মাহত হন। টিটি অন্যান্য যাত্রীদের সঙ্গে ওই ধরনের আচরণ করেন।

তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলে অভিযোগকারীরা মনে করছেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যাত্রীদের সঙ্গে অসদাচরণের জন্য গত ৩ মাস আগে টিটি শফিকুল ইসলামকে পাকশী দফতরে বুক অফ করা হয়। ভবিষ্যতে তিনি যাত্রীদের সঙ্গে এমন আচরণ করবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তাকে কর্মস্থলে ফেরত পাঠানো হয়।

বিজ্ঞাপন

ওই টিটি শফিক আইন বিষয়ে এলএলএম করেন। তিনি তার সহকর্মীদেরকে জানান, তার বন্ধুরা জজ হিসেবে কর্মরত আছেন। কিন্তু তিনি ভালো একটি চাকরি পাননি বলে মানসিকভাবে খুব হীনমন্যতায় ভোগেন।

কর্মস্থলে টিটি সহকর্মীদের সঙ্গে অকারণেই চিৎকার চেঁচামেচি করেন। তার নিয়ন্ত্রণকারী (এসআরআই) সাধারণ ডিগ্রি পাস বলে তাকে তাচ্ছিল্য করতেন। মূলত তিনি মানসিক হীনমন্যতায় ভুগছেন। এই জন্যই তিনি যাত্রীদের সঙ্গে অযাচিতভাবে খারাপ আচরণ করেন।

উল্লেখ্য, রেলপথমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেওয়ার পরেও জরিমানাসহ ভাড়া আদায় করায় চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে ট্রেনের ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারকে( টিটি)। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেওয়া বলে শুক্রবার থেকে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হচ্ছে।

সারাবাংলা/জেআর/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন