বিজ্ঞাপন

ইউক্রেন ছেড়ে আসা ৯০ শতাংশ শরণার্থীই নারী ও শিশু

May 7, 2022 | 10:16 pm

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর থেকে পঞ্চাশ লাখের বেশি মানুষ শরণার্থী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। এদের ৯০ শতাংশই নারী ও শিশু। এসব নারী ও শিশুদের অধিকাংশকেই যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে যৌন ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার শিকার। আরও ৭১ লাখের বেশি মানুষ ইউক্রেনের মধ্যে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে মহিলা এবং শিশুদের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র হিসেব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৫৮ লাখ ১ হাজার ১৫৯ জন ইউক্রেনের নাগরিক শরণার্থীতে রূপান্তরিত হয়েছেন। এসব শরণার্থীরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয়ের চেষ্টা করছেন। এতে শরণার্থী নারী ও শিশুরা নানারকম সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে অস্ত্র ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার তীব্র সমালোচনা করে এসব নারী ও শিশুকে জরুরি ভিত্তিতে সুরক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানান।

গত বৃহস্পতিবার (৫ মে) ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত এক প্রস্তাবে ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা মহিলাদেরকে সহিংসতা ও পাচার থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানান তারা। একইসঙ্গে ইইউর প্রতি শরণার্থী নারী ও শিশুদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবায় প্রবেশাধিকার দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। প্রস্তাবের পক্ষে ৪৬২টি ও বিপক্ষে ১৯টি ভোট আসায় এটি গৃহীত হয়। এছাড়াও ৮৯ জন সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন। এই প্রস্তাবে তারা ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা নারী ও শিশুদের মানব পাচার, যৌন সহিংসতা, শোষণ, ধর্ষণ ও নির্যাতনের ক্রমবর্ধমান সংখ্যার প্রতিবেদনের বিষয়ে তাদের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।

ইউরোপীয় সংসদে উত্থাপিত এই প্রস্তাবে বলা হয়, বিশেষভাবে শরণার্থী অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলোতে নারী এবং মেয়েদের নির্দিষ্ট চাহিদা ও অভিযোগের প্রতি জোর দিতে হবে এবং এগুলোকে লিপিবদ্ধ করতে হবে। এছাড়াও সদস্য রাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে নারী শরণার্থীদের যৌন শোষণ থেকে রক্ষার পাশাপাশি অত্যন্ত লাভজনক নারী পাচার নেটওয়ার্কগুলোকে দ্রুত চিহ্নিত করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ইইউভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে নিরাপদ এবং সমন্বিত পরিবহন ব্যবস্থা করলেও এসব নারী ও শিশুকে পাচার ও সহিংসতার হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।

বিজ্ঞাপন

নারীর অধিকার ও লিঙ্গ সমতা কমিটির চেয়ার রবার্ট বিড্রোন (এসএন্ডডি, পিএল) বলেন, ‘গণধর্ষণ, যৌন ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা, নির্যাতন এবং গণহত্যা যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় না আনা পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না। যুদ্ধের ফলে গভীরভাবে আহত এই মানুষগুলো এই ধরনের ট্রমা থেকে সহজে সেরে উঠতে পারে না। এ কারণেই এটা অগ্রহণযোগ্য যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে আশ্রয়প্রার্থী নারীরা মৌলিক যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সদস্য দেশগুলোকে অবশ্যই তাদের প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে এবং এই নারীরা যেন তাদের প্রয়োজনীয় সমর্থন ও সেবা পান তা নিশ্চিত করতে হবে।’

প্রয়োজনীয় যৌন ও প্রজনন পরিষেবাগুলোতে জরুরিভিত্তিতে প্রবেশাধিকার যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য এবং অধিকার, বিশেষ করে জরুরি গর্ভনিরোধক এবং গর্ভপাত, ধর্ষণের শিকারদের পাশাপাশি প্রসূতিসেবা নিশ্চিত করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সমস্ত হোস্ট এবং ট্রানজিট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শুধু শরণার্থী হিসেবে ইইউভুক্ত দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া নারীরাই নয়, যেসব নারী এখনো ইউক্রেনে রয়েছেন তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ইইউকে জরুরিভিত্তিতে তহবিল গঠন করতে হবে। বিশেষ করে গর্ভনিরোধক এবং যৌন প্রজনন স্বাস্থ্য কিটসহ অন্যান্য সুরক্ষা কিটগুলো মানবিক প্যাকেজ এবং কনভয়গুলোতে পাঠানোর জন্য অনুরোধ করেন ইরোপীয় সংসদের সদস্যরা।

এছাড়াও নারী উদ্বাস্তুদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শ্রমবাজারে প্রবেশাধিকার দিতে ভাষাসহ অন্যান্য কোর্স আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএফ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন