বিজ্ঞাপন

৪ বছরেও শেষ হয়নি বাগেরহাটের খেয়াঘাট ব্রিজ নির্মাণের কাজ

May 16, 2022 | 8:45 am

জামাল হোসেন বাপ্পা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

বাগেরহাট: জেলার রামপাল উপজেলার হুড়কা ইউনিয়নের বগুড়া নদীর উপর নির্মাণাধীন বগুড়া খেয়াঘাট ব্রিজটির কাজ গত চার বছরেও শেষ হয়নি। এর ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে র্নিমাণাধীন ওই ব্রিজটি দিয়ে পারাপার হচ্ছে ১০ গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষ।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়রা জানায়, এলজিইডি’র অর্থায়নে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হয় বগুড়া খেয়াঘাট ব্রিজটির। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আইটি অ্যান্ড জেই এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শুরু করে। ৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের ওই ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৯২ লাখ ৫১ হাজার ১৩৩ টাকা। ইতোমধ্যে ব্রিজটির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ব্রিজটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা বলা হলেও সেটি সম্ভব হয়নি। নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়ে আগামী জুন মাসে ব্রিজটি উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হুড়কা ইউনিয়নের বেলাই, ভেকটমারী, গাজিখালী, কাঠামারী, নলবুনিয়া, গজগজিয়া, হুড়কা, চাড়াখালী ও ছিদামখালী গ্রামের প্রায় ৭ হাজার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সহজ মাধ্যম এই ব্রিজ। ব্রিজটির সংযোগ সড়কের কাজ এখনও শেষ হয়নি। সংযোগ সড়কের কাজ না থাকায় বাঁশের মই দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় অমল দাস বলেন, ‘কয়েক বছর ধইরে দেখতিছি এই ব্রিজটার কাজ হচ্ছে, কাজ কবে যে শেষ হবে তার তো ঠিক ঠিকানা নেই। রামপাল সদর, মোংলা ও বাগেরহাট যাওয়ার জন্যই আমাগো এই নদী পার হয়ে যেতে হয়। এছাড়া আমাগো তো আর কোনো উপায় নেই, তাই বাধ্য হয়ে ব্রিজের ওই মই বেয়ে যাতি হয়। আমরা বা কি করব, আমাগো তো কোনো উপায় নেই’।

বিজ্ঞাপন

সুজন মজুমদার বলেন, হুড়কা ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। তারা কৃষিকাজ, মৎস্য ও মোংলা ইপিজেড এ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। বগুড়া নদী পার হয়ে, তাদের শহরের যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া যাতায়াতের বিকল্প যে পথটি রয়েছে, সেটি প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুড়ে যেতে হয়। তাই হাজার হাজার মানুষের যাতায়াতের সহজ মাধ্যম এই ব্রিজটি দ্রুত মানুষের চলাচলের উন্মুক্ত করার দাবি জানাই।

হুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন কুমার গোলদার বলেন, ২০১৮ সালের শেষের দিকে বগুড়া খেয়াঘাট ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রথম দিকে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে চললেও একটা সময় করোনা মহামারি ও জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত মামলার কারণে ব্রিজটির কাজ থেমে যায়। মূল ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় অনেক আগেই। সমস্যা হচ্ছে ব্রিজটির এক অংশের সংযোগ সড়ক নিয়ে। সংযোগ সড়কটির কিছু অংশ ব্যাক্তি মালিকানাধীন জমি থাকায় স্থানীয় বাসিন্দা খিরোজ দাস ও প্রতাপ রায় নামের দুই ব্যাক্তি মামলা করে। ওই মামলার কারণে ব্রিজটির সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ খিরোজ দাসকে দুই লাখ ও প্রতাপ রায়কে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এই ব্রিজটি জনগনের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

রামপাল উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলজার হোসেন বলেন, করোনা মাহামারি ও সীমানা জটিলতায় মামলা কারণে বগুড়া খেয়াঘাট ব্রিজটির কাজ দুই দফা পিছানো হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রীজটির ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এখন সংযোগ সড়কের কাজ চলছে। আশা করছি আগামী জুন মাসে ব্রিজটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। সীমানা জটিলতায় যারা মামলা করেছিল, তাদের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দ্রুত গতিতে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসএসএ

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন