বিজ্ঞাপন

এমপিদের সাংসদ বলায় হাইকোর্টে রিট

May 16, 2022 | 7:03 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় সংসদ সদস্যদের (এমপি) নামের আগে ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (১৬ মে) ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, মোহাম্মদ কাওছার এবং মো. মাজেদুল কাদের হাইকোর্টে এ রিট দায়ের করেন।

চলতি সপ্তাহে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এ রিট আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন রিটকারী আইনজীবীরা।

প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব, আইন সচিব, সংসদ সচিবালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকসহ ১০ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রিটে বলা হয়েছে, সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন। সংবিধানের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে ‘জনগণের অভিপ্রায়ের অভিব্যক্তি স্বরূপ এই সংবিধানের প্রাধান্য অক্ষুন্ন রাখা, ইহার সংরক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান আমাদের পবিত্র কর্তব্য।’ অনুচ্ছেদ ২১ অনুযায়ী সংবিধান ও আইন মান্য করা প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য। সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সর্বমোট ৩৫০ জন সংসদ সদস্যের সমন্বয়ে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ। সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় সংসদের সদস্যদের ‘সংসদ সদস্য’ হিসেবে অভিহিত করতে হবে। ইহা একটি সাংবিধানিক পদ এবং সংসদ সদস্যদের অন্য কোনো নামে সম্বোধন করা অসাংবিধানিক।

কিন্তু বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা দীর্ঘদিন যাবৎ ‘সংসদ সদস্য’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার করে আসছে। এটি বাংলাদেশ সংবিধানের চরম লঙ্ঘন, অবমাননা এবং চরম ধৃষ্টতা ছাড়া কিছুই না। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের স্পিকার কর্তৃক রুলিং জারি করে বলা হয়েছে ‘সংসদ সদস্য’ একটি সাংবিধানিক পদ এবং ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহারের সুযোগ নেই। অথচ প্রথম আলো পত্রিকাটি সংবিধান এবং স্পিকারের রুলিং উপেক্ষা করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বহুদিন যাবত সংবিধান লঙ্ঘন করে আসছে, যা সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ক (১) (খ) অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার সর্বোচ্চ দণ্ডনীয় অপরাধ। পত্রিকাটি অব্যাহতভাবে অসাংবিধানিক ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার করে দেশ বিদেশের মানুষের কাছে ভুল বার্তা দিচ্ছে।

সংবিধান মান্যকরা প্রথম আলোর সাংবিধানিক দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। ইতোপূর্বে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে এসব বিষয় উল্লেখ করে ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার না করে ‘সংসদ সদস্য’ শব্দ ব্যবহারের জন্য প্রথম আলোকে অনুরোধ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে প্রথম আলোর সম্পাদক এবং প্রকাশককে অসাংবিধানিক শব্দের ব্যবহারের জন্য জাতির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ করা হয়েছিল। এছাড়াও পাঠকদের উদ্দেশে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছিল। এছাড়া প্রথম আলো যাতে অসাংবিধানিক শব্দ ‘সাংসদ’ ব্যবহার না করে সেই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে অপর বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

রিটে আরও বলা হয়, এই পত্রিকাটির বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে অপর বিবাদীদের অনুরোধ করা হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

এর আগে, গত ২৭ এপ্রিল দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় সংসদ সদস্যদের (এমপি) নামের আগে ‘সাংসদ’ শব্দ ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।

ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, মোহাম্মদ কাওছার এবং মো. মাজেদুল কাদের এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন