May 17, 2022 | 5:27 pm
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এই খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭০ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। এটি মোট বরাদ্দের ২৮.৭৩ শতাংশ। ২০২১-২২ অর্থবছরেও এই খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল, তখন অর্থের পরিমাণ ছিল ৬১ হাজার ৬৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এছাড়া আগামী বাজেটে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এই খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৩৯ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। এটি মোট বরাদ্দের ১৬.০২ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দ ছিল ৪৫ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (১৭ মে) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগর এলাকার এনইসি সম্মেলন কক্ষ ও সচিবালয়য়ের মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের সভায় অংশ নেন।
সভায় আগামী বাজেটে পরিবহন ও যোগাযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে শিক্ষা খাতে। এই খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ২৯ হাজার ৮১ কোটি। এটি মোট বরাদ্দের ১১.৮২ শতাংশ। বরাদ্দের দিক থেকে এরপর রয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধাবলী খাত। এই খাতে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ২৪ হাজার ৪৯৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। পঞ্চম সর্বোচ্চ খাত হিসাবে বরাদ্দ পাচ্ছে স্বাস্থ্য খাত। এই খাতে বরাদ্দ থাকছে ১৯ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা।
এছাড়াও আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৬ হাজার ৪৬৫ কোটি টাকা, কৃষি খাতে ১০ হাজার ১৪৪ কোটি টাকা পরিবেশ, জলবাযু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ খাতে ৯ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা, শিশু ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে ৫ হজার ৪০৭ কোটি টাকা। এছাড়াও বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ থাকছে ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা। উল্লেখিত ১০টি খাতে মোট বরাদ্দ ২ লাখ ২৯ হাজার ৭ কোটি টাকা। এটি মোট এডিপি‘র বরাদ্দের ৯৩.০৭ শতাংশ।
অন্যদিকে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ভিত্তিক সর্বোচ্চ ১০টি খাতের মধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগে ৩৫ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৩১ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা
অন্যদিকে মন্ত্রণালয়/বিভাগ ভিত্তিক বরাদ্দের শীর্ষ ১০টি হচ্ছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের জন্য বরাদ্দ প্রায় ৩৫ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ৩১ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বিভাগে ২৪ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৬ হাজার ১১ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে ১৫ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।
এছাড়াও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জন্য ১৪ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ১৪ হাজার ১ কোটি টাকা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ৪২ কোটি টাকা, সেতু বিভাগে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জন্য ৭ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে প্রকল্প ভিত্তিক বরাদ্দের শীর্ষ ১০টি হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা, চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচী (পিইডিপি-০৪) প্রকল্প খাতে প্রায় ৮ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা, মাতারবাড়ি ২ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট আল্ট্রা-সুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা।
এছাড়াও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ (১ম পর্যায়) প্রকল্পের জন্য প্রায় ৬ হাজার ১৯ কোটি টাকা; পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা, কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সী রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডামিক পিপেয়ার্ডনেস (ডব্লিউবি-জিওবি) প্রকল্পের জন্য ৪ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৮৫১ কোটি টাকা; ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা, এক্সপানশন অ্যান্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া প্রকল্পের জন্য ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা এবং ঢাকা মাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (লাইন-৬) প্রকল্প খাতে ২ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/এসএসএ