May 24, 2022 | 1:46 pm
স্পোর্টস ডেস্ক
মিরপুর টেস্টে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। ব্যাট করতে নেমে শুরুতে মাত্র ২৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে স্বাগতিকরা। তবে মুশফিকুর রহিম এবং লিটন দাসের রেকর্ড গড়া জুটিতে শেষ পর্যন্ত ৩৬৫ রান তুলে থামে বাংলাদেশ। লিটন ১৪১ রান করে আউট হলেও মুশফিকুর রহিম অপরাজিত থেকেছেন ১৭৫ রানে।
লংকানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নিয়েছেন পেসার কাসুন রাজিথা আর ৪টি উইকেট নিয়েছেন আসিথা ফার্নান্দো।
স্কোরকার্ড থেকে লিটন দাস আর মুশফিকুর রহিমের রানটা সরিয়ে রাখলে বাংলাদেশের রান দাঁড়ায় মাত্র ৪৯। যার ভেতর তিন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত ৮, মুমিনুল হক ৯ এবং তাইজুল ইসলাম করেছেন ১৫ রান আর বাকি ১৭ রান এসেছে অতিরিক্ত থেকে। অর্থাৎ বাংলাদেশের বাকি ৬ ব্যাটার ফিরেছেন শূন্য রানে। মাহমুদুল হাসান জয়, তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, সৈয়দ খালেদ আহমেদ এবং ইবাদত হোসেন কোনো রানই করতে পারেননি।
মিরপুর টেস্টে প্রথম দিনের সকালটাই যেন দ্বিতীয় দিনে নেমে এলো। দিনের শুরুতেই প্রথম দিনে শতক হাঁকান লিটন দাস ফিরলেন এরপর শূন্যতে ফিরলেন মোসাদ্দকে হোসেন সৈকত। এরপর তাইজুলকে নিয়ে দুর্দান্ত জুটি গড়েন মুশফিক তবে তাইজুল ফিরলে দ্রুত আরও একটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে মুশফিকুর রহিমের দেড়শ পেরুনো ইনিংসে ভর করে মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন তিনি।
৫ উইকেটে ২৭৭ রান নিয়ে প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে মুমিনুল হকের দল। এরপর দ্বিতীয় দিনের শুরুটা বেশ সাবধানে করেছিলেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। কিন্তু হঠাত ছন্দ পতন বাংলাদেশের। এক ওভারে জোড়া শিকার ধরে বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দিলেন কাসুন রাজিথা। চার বলের মধ্যে এই পেসার ফিরিয়ে দিলেন লিটন ও মোসাদ্দেক হোসেনকে।
৯৩ ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের ওপর লেংথে করেন রাজিথা। হালকা ভেতরে ঢোকা বল লিটনের ব্যাটের বাইরের কানা নিয়ে যায় দ্বিতীয় স্লিপে। নিচু ক্যাচ দারুণ দক্ষতায় মুঠোয় জমান কুসল মেন্ডিস। লিটন থামলেন ২৪৬ বলে ১৬টি চার ও একটি ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা ১৪১ রান করে। তার বিদায়ে ৫১৩ বলে ২৭২ রানের রেকর্ড জুটি থামল। এরপর তিন বছর পর টেস্ট দল ফেরা মোসাদ্দেক ফিরে গেলেন দুই বল খেলেই। সুইং করে বেরিয়ে যাওয়া বল খোঁচা দিয়ে শূন্য রানে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়লেন তিনি। এই সাফল্যের সঙ্গে টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেন রাজিথা।
দ্রুত ২ উইকেট হারিয়ে চাপে বাংলাদেশের ওপর বাড়লেও তা দূর করলেন মুশফিকুর রহিম। দারুণ গতিতে রান তুলেছেন তিনি। ২৯১ বলে ছুঁয়ে ফেললেন দেড়শ রানের মাইলফলক।টেস্ট ক্যারিয়ারে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের পঞ্চম দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস। শ্রীলংকার বিপক্ষে খেললেন দ্বিতীয়বার।
এরপর ৮ম উইকেটে তাইজুলের সঙ্গে ৪৯ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশের রান সাড়ে তিনশতে নিয়ে যান মুশি। তবে ১০৬তম ওভারের পঞ্চম বলটি শরীর তাক করে শর্ট করেন আসিথা। খেলবেন না ছেড়ে দেবেন দ্বিধায় ছিলেন তাইজুল। শেষ মুহূর্তে তার গ্লাভস ছুঁয়ে বল জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে। প্রথম টেস্টে অবশ্য একই ধরনের বলে শট খেলেন তাইজুল। ব্যাটে-বলে ঠিকমতো করতে না পেরে ধরা পড়েন ফাইন লেগে। ৩৭ বলে ২ চারে ১৫ রান করা তাইজুলের বিদায়ে ভাঙে ৪৯ রানের জুটি।
তাইজুল ইসলামকে ফেরানোর পরের ওভারে এসেই সৈয়দ খালেদ আহমেদের শিকার ধরলেন আসিথা ফার্নান্দো। রানের খাতা খুলতে পারলেন না বাংলাদেশের দশ নম্বর ব্যাটার। আসিথার বাউন্সারে খালেদের ব্যাটের কানা নিয়ে জমা পড়ে কিপারের গ্লাভসে।
শেষ পর্যন্ত ইবাদত হোসেন ২০ বলে শূন্যতে রানআউট হলে বাংলাদেশ থামে ৩৬৫ রানে। আর উইকেটের অপরপ্রান্তে মুশফিকুর রহিম ১৭৫ রানে থাকেন অপরাজিত। ৩৫৫ বল খেলা মুশফিক ২১টি বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। লংকানদের হয়ে পাঁচটি উইকেট নিয়েছেন কাসুন রাজিথা আর চারটি উইকেট আসিথা ফার্নান্দোর দখলে।
বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার মধ্যকার সিরিজের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করবে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল জিটিভি। এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে খেলা। অনলাইনে র্যাবিটহোলে খেলা দেখতে ব্রাউজ করুন https://www.rabbitholebd.com/
সারাবাংলা/এসএস