বিজ্ঞাপন

আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়নে সংলাপে বসবে বিএনপি, থাকছে জামায়াতও

May 24, 2022 | 4:53 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা প্রণয়নে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতো জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও তারা এই সংলাপে বসবে বলে জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৪ মে) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের  রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন দলের স্থায়ী কমিটির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমাবার (২৩ মে) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো গণমাধ্যমে তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘স্থায়ী কমিটির সভায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে জাতীয় ঐক্য তৈরির লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) এই আলোচনা আমরা শুরু করব। আমরা অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলব। তাদের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

প্রথম দিন মঙ্গলবার (২৪ মে) বিকেলে নাগরিক ঐক্যের সঙ্গে সংলাপে বসবে বিএনপি। নাগরিক ঐক্যের তোপখানা রোডের কার্যালয়ে এই সংলাপ হবে বিকেল ৫টায়— জানান বিএনপি মহাসচিব।

আলোচনা কি ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে হবে, না অন্যান্য দলের সঙ্গেও হবে?— এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সকলের সঙ্গে হবে।’ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও হবে কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কথা তো বলতে হবে। অবশ্যই। তাদের সঙ্গে কথা না বললে কেমন করে হবে? সকলের সঙ্গেই তো কথা বলতে হবে।’

২০ দলীয় জোট থাকবে কি না— জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘২০ দলীয় জোট তো আমরা এখন পর্যন্ত বিলুপ্ত করি নাই। এই জোটের কী হবে, সেটা এই আলোচনার মধ্য দিয়ে ফাইনালাইজড করব।’

বিজ্ঞাপন

সংলাপের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আলোচনার মূল্য উদ্দেশ্য হচ্ছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মানুষের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। অর্থনীতি ধ্বংস করেছে। দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ধ্বংস হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে আমাদের মূল্য লক্ষ্যে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল যে দাবিগুলো আছে— এক, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দিদের মুক্তির দাবি; দুই, এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে; তিন, সংসদ বাতিল করতে হবে এবং তারপরে পুনর্গঠিত নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হবে, সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংসদ গঠন হবে, সরকার গঠন হবে। এগুলো হচ্ছে আমাদের পক্ষ থেকে দাবি।’

এই ঐক্য জোটের নাম কী হবে— জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা একে জোট বলছি না, অন্য কোনো কিছু বলছি না। আলোচনা করার মধ্য দিয়ে ফরম্যাট নির্ধারণ করা হবে।’

২৬ মে সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসসহ দেশের সিনিয়র সিটিজেনদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে আগামী ২৬ মে ঢাকা ছাড়া সব মহানগর ও জেলা সদরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো যৌথভাবে বিভোক্ষ সমাবেশ করবে।

বিজ্ঞাপন

বন্যায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় দুর্গত এলাকায় সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অপ্রতুল হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। যখন বন্যাদুর্গত মানুষের ত্রাণের জন্য আহজারি করছে, সেই সময়ে জনৈক মন্ত্রীর ত্রাণ বিতরণের সময় সাহায্য প্রার্থী হাজার মানুষের ওপর পুলিশি লাঠিচার্জের ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বন্যার্তদের ওপরে এই আক্রমণ আওয়ামী লীগের স্বভাবজাত অমানবিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিফলন।

সিলেটের বন্যাউপদ্রুত এলাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বৃহত্তর সিলেট জেলার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সব নেতাকর্মীকে বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন