বিজ্ঞাপন

প্রথমবারের মতো স্থাপন হচ্ছে জাতীয় জিন ব্যাংক

April 19, 2018 | 9:39 am

।। জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকার সাভারে এই ব্যাংটি স্থাপন করা হবে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জেনেটিক রিসোর্সগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি এবং সমৃদ্ধ ডাটাবেজ প্রণয়নের সুবিধা সৃষ্টি হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে ‘জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপন’ নামের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৪৬০ কোটি টাকা। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে যৌথভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি (এনআইবি) ও গণপূর্ত অধিদপ্তর।

এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য ড. কামাল উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে জেনেটিক রিসোর্সগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সংগ্রহ এবং সংরক্ষণের ফলে জিনগত ক্ষয় প্রতিরোধ, রোগ, কীটপতঙ্গ, জলবায়ু ও পরিবেশগত অন্যান্য জৈব ও অজৈব চাপ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন, গুণগত মান উন্নয়ন এবং সহনশীল জাত উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জেনেটিক সম্পদগুলোকে বলা হয় এই গ্রহের প্রথম প্রাকৃতিক সম্পদ। এ সকল জেনেটিক সম্পদগুলোর উপর ভিত্তি করে গবেষকগণ বিভিন্ন উন্নত গুণগত মানসম্পন্ন এবং অধিক উৎপাদনশীল বিভিন্ন জাত বা ভ্যারাইটি উদ্ভাবন করে থাকে। এই সম্পদ হারিয়ে গেলে মানব জাতি হারিয়ে ফেলে  নতুন সামাজিক অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত অবস্থার সাথে কৃষি অভিযোজনের সম্ভাব্য উপায়। পরিবর্তিত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে খাদ্য ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা অর্জন, পরিবেশ ও প্রতিবেশ সংক্রান্ত ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় জেনেটিক সম্পদের টেকসই পুনঃউৎপাদন ও ব্যবহার, উন্নযন ও উদ্ভাবন কার্যক্রমে এদের সঠিক ব্যবহার এবং বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য সংরক্ষণ এখন সময়ের চাহিদা। দেশের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণার্থে বিরাজমান ও বিলুপ্ত প্রায় কৌলি সম্পদ এর তালিকা তৈরি, সংরক্ষণ ও ব্যবহার সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে এর সুফল দেশ ও মানুষের কল্যাণে প্রয়োগের জন্য জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

বাংলাদেশে উদ্ভিদ, প্রাণী, মৎস্য, অণুজীব, কীট পতঙ্গ, অমেরুদন্ডী প্রাণী, বনজ ইত্যাদি জেনেটিক রিসোর্সেস সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য রয়েছে। একবার কোনো প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেলে তাদের জিনপুল চিরতরে হারিয়ে যাবে। তাই জাতীয় জিনব্যাংক প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হচ্ছে সম্ভাব্য সকল জেনেটিক রিসোর্সগুলো দীর্ঘ মেয়াদে সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে এর টেকসই ব্যবহার করা। ২০১০ সালের ২২ জুলাই অনুষ্ঠিত জীবপ্রযুক্তি বিষয়ক জাতীয় নির্বাহী কমিটির (এনইসিবি) সভায় দেশের বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে বিক্ষিপ্তভাবে গড়ে উঠা জীন ব্যাংক গুলোর কার্যক্রম সমন্বয় করা এবং ইতোমধ্যে গড়ে উঠা এ সকল জীন ব্যাংকে সংরক্ষিত জেনেটিক উপাদানগুলোর ব্যাকআপ সংরক্ষনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে এখন জাতীয় জীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

প্রকল্পের মূল কার্যক্রম গুলো হচ্ছে, বেজমেন্টসহ একটি ১২ তলা বিশিষ্ট ল্যাব কাম অফিস কাম ব্যাংক ভবন তৈরি, দুই তলা বিশিষ্ট পরিচালকের বাংলো, ছয় তলা বিশিষ্ট ব্যাচেলর ও ভিআইপি ডরমিটরি ভবন, ১০ তলা ও ১৪ তলা বিশিষ্ট দুটি অফিসার্স কোয়াটার, ১০ তলা  বিশিষ্ট দুটি স্টাফ কোয়াটার, ১৬তলা বিশিষ্ট আরও দুটি স্টাফ কোয়াটার নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া সীমানা প্রাচীর, সাব-স্টেশন ভবন, গার্ড সেড, অ্যানিমেল সেড, প্ল্যান্ট কোয়ারন্টাইন, অভ্যন্তরীণ রাস্তা এবং কম্পাউন্ড ড্রেনসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেজে/আইএ/এসআই

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন