বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার আহ্বান

May 26, 2022 | 1:15 am

সারাবাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আরও বেশি সম্পৃক্ততা বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের আদিভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যাশা— নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিতে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর (জাতিসংঘের শরণার্থী হাইকমিশনার) রাখাইনে তাদের কার্যক্রম জোরদার করবে।

বুধবার (২৫ মে) সফররত জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক হাইকমিশন ও আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. মোমেন বলেন, টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গা জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরিতে

বিজ্ঞাপন

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় সম্পৃক্ততা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে ইউএনএইচসিআরের সম্পৃক্ততায় ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী হাইকমিশনারকে দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

মোমেন কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য মিয়ানমার পাঠ্যক্রমের অনুসরণে মিয়াানমারে ভাষায় দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম, জীবিকার সুযোগ, স্বাস্থ্য সুবিধা ইত্যাদি অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রচলনের কথা তুলে ধরেন। এসব উদ্যোগ প্রত্যাবাসনের পর মিয়ানমার সমাজে সমাজে পুনর্মিলনে তাদের জন্য সুবিধাজনক হবে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

জাতিসংঘ হাইকমিশনার জানান, তার সংস্থা এ বিষয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং এ বিষয়ে তিনি আরও চেষ্টা চালাবেন বলে আশ্বাস দেন। মিয়াানমারে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা ও টেকসই প্রত্যাবাসনে  ইউএনএইচসিআর বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।

বিজ্ঞাপন

নির্যাতনের শিকার ও বাস্তুচ্যুত বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটি সমগ্র অঞ্চলে বহুমুখী প্রভাব ফেলতে পারে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এর ফলে ক্রমবর্ধমান হারে মাদক ও মানব পাচারের মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়ছেন। এছাড়া বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান স্থানীয় জনগণের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করছে। এজন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্থানীয় জনগণের কল্যাণে প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।

হাইকমিশনার গ্র্যান্ডি এত বিপুলসংখ্যক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে সাময়িকভাবে আশ্রয়দান এবং উদারভাবে তাদের সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, তার সঙ্গে দেখা হওয়া সব রোহিঙ্গার একান্ত আকাঙ্ক্ষা— দ্রুততম সময়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়া। তিনি রাখাইনে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।

ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি আরও জানান, ইউএনএইচসিআর ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থা কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণের সুবিধার জন্য বেশকিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ভাসানচরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসময় ভাসানচরে স্থানান্তরিত সব রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানে জাতিসংঘ ব্যবস্থার পূর্ণ নিয়োজিত থাকার ওপর জোর দেন।

হাইকমিশনার ভাসান চরের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। বলেন, ভাসানচর প্রকল্পের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ এবং এ লক্ষ্যে সবার কাজ করা উচিত।

বিজ্ঞাপন

হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি গত ২১ মে বাংলাদেশে এসেছে। ওই দিন থেকে ২৩ মে পর্যন্ত তিনি কক্সবাজার সফর করেছেন এবং সেখানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন করেন। পরে ২৪ মে তিনি ভাসানচর পরিদর্শন করেন। বুধবার ছিল তার সফরের পঞ্চম ও শেষ দিন। এদিন রাতেই তার বাংলাদেশ ত্যাগ করে জেনেভার পথে রওনা দেওয়ার কথা রয়েছে। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন