বিজ্ঞাপন

সরকারকে ‘৭ দিনের চ্যালেঞ্জ’ মান্নার

May 26, 2022 | 7:55 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে সরকার সাত দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না বলে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এই গজব সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে হলে সব বিরোধী দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এখনই মাঠে নামতে হবে। কথা বলার অধিকার, ভোটের অধিকার, গুম হওয়া স্বজনদের ফিরে পাওয়ার জন্য সব রাজনৈতিক দলকে শপথ নিয়ে মাঠে নামতে হবে। সরকারকে আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি— সব বিরোধী দল ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে সরকার সাত দিনও ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আর একটিও গুম নয়, নিষ্ঠুর সরকারকে না বলুন’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কাওসার, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, মানবাধিকারকর্মী ও আইন-সালিশ কেন্দ্রের কর্মকর্তা নূর খান লিটন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) নেতা শহীদ উদ্দিন মাহবুব স্বপন, ভাসানী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবলু, মানবাধিকারকর্মী নাসির উদ্দিন ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা ইমরান ইমরান।

বিজ্ঞাপন

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পদ্মাসেতু উদ্বোধন করে ক্ষমতায় টিকতে পারবেন না। এই পদ্মাসেতু নির্মাণ করতে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। তার হিসাব কড়ায়-গণ্ডায় নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের গুণ্ডারা যে কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা বিশ্বের মানুষ দেখেছে। অথচ গুণ্ডাদের রক্ষার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বললেন, তিনি কিছু জানেন না। টেলিভিশনের পর্দায়, ক্যামেরাম্যানদের স্টিল ছবিতে যাদের দেখা গেল, তারা কারা? তাদের পরিচয় দেন। আমরা জানি, আপনার পরিচয় দিতে পারবেন না। আপনাদের ওপর জনগণের অভিশাপ লেগে গেছে। বেশি দিন আর ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না।

বিজ্ঞাপন

গুম-খুনের সংস্কৃতির মাধ্যমে সরকার ভয়ের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মাহমুদুর রহমান মান্না। বলেন, ১০ বছর ধরে যারা গুম হয়েছে, তাদের স্বজনরা আহাজারি করছেন। একজন বোন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন রেখে বলেছেন— মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি একবার বলুন আমি বিধবা না সধবা? কত কষ্ট থেকে এই কথা বলতে হয়, প্রধানমন্ত্রী আপনি বুঝেও বুঝতে চান না। গুম-খুন অপহরণ করে সমাজে ভয়-ভীতি ছড়িয়ে আপনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছেন। আপনাকে সে সুযোগ আর জনগন দেবে না। চোখেমুখে মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করতে পারবেন না। জনগণ আপনার সরকারকে গজব সরকার হিসাবে আখ্যায়িত করেছে। জনগণের কথা— যত তাড়াতাড়ি এই গজব সরকার ক্ষমতা থেকে বিদায় নেবে, দেশ ও জাতির তত মঙ্গল হবে।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, যেহেতু এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি, তাই সরকার বেপরোয়া হয়ে গেছে। সরকার জবাবদিহিতায় বিশ্বাসী নয়। স্বৈরতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনা করছে। জনগণের কথা বলার অধিকার, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। সরকার দেশকে মগের মুল্লুক বানিয়ে ফেলেছে। তাই জাতিকে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘হীরক রাজার মতো দড়ি ধরে মারো টান রাজা হবে খান খান’ অবস্থা করতে হবে। এজন্য সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকার রাষ্ট্রব্যবস্থাকে এমনভাবে সাজিয়েছে যে দেশ ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। মিথ্যাকে সত্য করার জন্য সরকার সামাজিক যোগাযোগে হাজার হাজার ফেক আইডি খুলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। এর উদ্দেশ্য একটাই— ক্ষমতায় টিকে থাকতে হবে। পুলিশ বাহিনীসহ সব বাহিনীকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, এই সরকার হটিয়ে যে সরকার আসবে, সে সরকারকে অবশ্যই জনগণের সরকার হতে হবে। তবে রাষ্ট্রের কাঠামো কেমন হবে, সংবিধানের কোন কোন ধারা সংশোধন করতে হবে, তা এখনই সামনে নিয়ে আসতে হবে। আর বর্তমান সরকার জনগণের মধ্যে যে ভয়-ভীতি তৈরি করছে, সেই ভয়-ভীতি ভেঙে দেওয়ার জন্য কাজ শুরু করতে হবে। জনগণের ভয় না ভাঙলে তারা মাঠে নামবে না। আর একবার যদি জনগণের ভয় ভেঙে যায়, তারা যদি মাঠে নামে, সেই জনস্রোতে সরকার ভেসে যাবে।

মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, গুম-খুনের বিচারের জন্য তদন্ত কমিশনের দাবি করে আসছি। যারা গুম হয়েছে, আসলে তারা গুম হয়েছে কি না, সে তদন্ত করছে যারা, গুমও করছে তারাই। এজন্য সঠিক তথ্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত কমিশনের বিকল্প নেই।

মানবাধিকারকর্মী নাসির উদ্দিন বলেন, সব গুম-খুনের তথ্য-উপাত্ত জাতিসংঘে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি রিপোর্ট ও জাতিসংঘকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘ তা গ্রহণ করেনি। এই গুম-খুনের বিচার একদিন এই বাংলার মাটিতে হবেই।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন