বিজ্ঞাপন

ভোটার হতে মরিয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীরা, দাবি স্থানীয়দের; সতর্ক ইসি

June 4, 2022 | 9:01 am

ওমর ফারুক হিরু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

কক্সবাজার: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের মুখে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অনেকেই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়ার জন্য ভোটার হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে দাবি করছে স্থানীয় রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটিসহ কয়েকটি সংগঠন।

বিজ্ঞাপন

তবে, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২৬ বিধিনিষেধ আমলে নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলছে।

ইসি বলছে, করোনা সংক্রমণের মুখে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ২০মে থেকে সারাদেশে ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু হয়েছে। তার অংশ হিসেবে কক্সবাজার জেলায় দুই ধাপে চার উপজেলার ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ চলমান রয়েছে।

এদিকে, নতুন-পুরাতন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে তাদেরকে যারা নাগরিকত্ব পেতে সহযোগিতা করছেন, তাদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছে সংগঠনগুলো।

বিজ্ঞাপন

রোহিঙ্গাবিরোধী স্থানীয় সংগঠনগুলোর আশংকা, আগের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধির সই নিয়ে ভোটার হওয়ার প্রাণপন চেষ্টা করছে।

তারা অভিযোগ করছেন, মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কারণে কক্সবাজারবাসী এখন হুমকির মুখে। তারা মাদক কারবার, ছিনতাই, হত্যা, ধর্ষণসহ নানান অপরধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।

বিজ্ঞাপন

তাই, শরণার্থীরা যেন কোনোভাবেই ভোটার হতে না পারে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোরতা প্রত্যাশা করে সংগঠনগুলো।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাইফুল ইসলাম বলেন, জনপ্রতিনিধিরা টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নাগরিক বানানোর ভুয়া কাগজপত্রে সই দিয়ে সহযোগিতা করছেন। এ ধরনের দেশদ্রোহিতার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, সরকারের কাছে তাদের দাবি— আর কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী যেন ভোটার হতে না পারে। এর আগে ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে যারা ভোটার হয়েছেন তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হোক।

অন্যদিকে, ২০২১ সালের মার্চে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভোটার তালিকায় যুক্ত করার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেফতার হওয়া কক্সবাজারের তিন কাউন্সিলরের মধ্যে দুই নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান জানান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভোটার করার কোনো সুযোগ নেই। নির্দেশনা অনুযায়ী তারা খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

তাছাড়া, তিনি প্রত্যয়ন পত্রে সই করা নিয়ে ঝামেলায় পড়েছিলেন; শরণার্থীদের ভোটার করার বিষয় নিয়ে নয়—বলেও দাবি করেন কাউন্সিলর মিজানুর।

অপরদিকে, জেলা শহরের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত এক নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আক্তার কামাল জানান, নাগরিকত্ব সাটির্ফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে তারা খুবই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে ২৬টি বিধিনিষেধ রয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভোটার হতে সহযোগিতা করলে ভোটার তালিকা আইনসহ প্রচলিত অন্যান্য আইন অনুযায়ী ফৌজদারি মামলা হবে। এ বিষয়ে কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে ইসি’র সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্তক থাকার নিদের্শ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা ছেলের সঙ্গে বাংলাদেশি বা রোহিঙ্গা মেয়ের বিয়ের মাধ্যমে যারা নিজেদেরকে বাংলাদেশি হিসেবে দাবি করছেন তাদের নাম তালিকায় তোলা যাবে না।

সারাবাংলা/একেএম

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন