বিজ্ঞাপন

সীতাকুণ্ডে আগুনে নিহতদের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নোটিশ

June 8, 2022 | 9:46 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২ কোটি টাকা এবং আহতদের প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন এবং দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৮ জুন) মানবাধিকার সংস্থা ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের তিন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব, মোহাম্মদ কাওছার ও মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের এই নোটিশ পাঠান।

ইমেইল ও কুরিয়ারযোগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, স্মার্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিএম কন্টেইনার বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আরজেএসসির রেজিস্ট্রার বরাবর এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে নিহত প্রত্যেককের পরিবারকে ২ কোটি টাকা এবং আহত প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে সেই সঙ্গে আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এর প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলা হয়েছে রিটে।

বিজ্ঞাপন

নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৪ জুন রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বি এম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি নিহত এবং শতাধিক আহত হয়েছেন। অনেকেই মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।

খবরে প্রকাশ স্মার্ট গ্রুপের বিএম কন্টেইনার নামক কোম্পানির দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট ঘোষণা ছাড়াই মজুদ করার কারণে আগুনে হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। ফায়ার সার্ভিসের নিকট মজুদকৃত রাসায়নিক পদার্থগুলোর প্রয়োজনীয় তথ্য না থাকায় অনেক উদ্ধারকর্মী নিহত এবং আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশে এর আগেও তাজরীন গার্মেন্টস কারখানায় আগুন, রানা প্লাজা ভবন ধ্বসে হাজারো প্রাণ ঝরলে পোশাক কারখানায় বিদেশি ক্রেতার চাপে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থায় অগ্রগতি হলেও অন্যান্য কারখানায় সঠিক অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। ফলে এসব কারখানায় নিয়মিতভাবেই অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে চলছে।

বিজ্ঞাপন

সাম্প্রতিক সময়ে সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে বহু হতাহত হয়েছেন। বিদেশি ক্রেতাদের কোনো চাপ না থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট কারও নজর নেই। তা ছাড়া অগ্নি নির্বাপক বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে রাসায়নিক দাহ্য পদার্থে সৃষ্ট আগুন নিয়ন্ত্রণে অক্ষম।

নোটিশে সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ অনুযায়ী জীবনের অধিকার একটি মৌলিক অধিকার। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩২ সরাসরি লঙ্ঘন করেছেন।

নোটিশে আগামী তিন দিনের মধ্যে নিহত প্রত্যেককের পরিবারকে ২ কোটি টাকা এবং আহত প্রত্যেককে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এর প্রতিকার উচ্চ আদালতের যাওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গত শনিবার (৪ জুন) দিবাগত রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে বুধবার (৮ জুন) সকাল পর্যন্ত ৪৪ জন নিহত হয়েছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতাল, পার্কভিউ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন আরও অগ্নিদগ্ধ শতাধিক শ্রমিক-কর্মকর্তা।

সারাবাংলা/কেআইএফ/একে

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন