বিজ্ঞাপন

আগামী নির্বাচনে পুলিশ, জনপ্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনী প্রয়োজন: সিইসি

June 13, 2022 | 4:00 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য এবং সব দলের অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সরকারের তিনটি মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে রাখার প্রতি ঈঙ্গিত করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুর আউয়াল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকালীন সহায়তা বলতে মূলত পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আমাদের প্রয়োজন হতে পারে। অন্য কোনো মন্ত্রণালয়ের নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। যেহেতু জনপ্রশাসন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের হ্যান্ডেল করেন, পুলিশ প্রশাসনকে হ্যান্ডেল করেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আর নির্বচানে যদি সশস্ত্রবাহিনীকে ইনভলভ করা হয় তাহলে ডিফেন্স মিনিস্ট্রিকে আমাদের লাগবে।’

সোমবার (১৩ জুন) দুপুরে ট্রান্সপারেন্সি ইন্ট্রারন্যাশনাল (টিআইবি) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুর আউয়াল সাংবাদিকদের এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা একইকথা বারবার বলেছি, অসংখ্যবার বলেছি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া খুবই প্রয়োজন।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যদি মূল বিরোধীদল অংশগ্রহণ না করে, তারা নির্বাচনে না আসেন, তাহলে সেই নির্বাচন স্বচ্ছ হোক কিংবা অস্বচ্ছ হোক, যাই হোক না কেন, সেই নির্বাচন গুরুত্ব এবং গ্রহণযোগ্যতা পাবে না, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা অনেক কমে যাবে।’

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচনের সময় আমাদেরকে কাজে সহায়তা করতে হবে। যে সব আইন কানুন রয়েছে সরকার আমাদেরকে সহায়তা করতে বাধ্য। সব নির্বাহী কর্তৃপক্ষ নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করতে হবে। আমরা সেই সহায়তা সরকারের কাছে চাইব। আমরা আশা করছি সরকার সে সহায়তা আমাদের করবে।’

সিইসি বলেন, ‘গণতন্ত্রের মূল কথাই হল পজিশন এবং অপজিশন। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে যে মাঠ দেখি সেটি কিন্তু গভর্মেন্ট মাঠ না। নির্বাচিত হওয়ার পর যখন তারা পার্লামেন্টে চলে আসেন তখন সেটি হলো পার্ট অব গভর্মেন্ট। আবার যারা বিরোধীদলে থাকেন তারাও গভর্মেন্ট। মানে যারা সংসদে বিরোধীদল তাকে বলে অপজিশন বেঞ্চ এবং সরকারি দল ট্রেজারি বেঞ্চ। ট্রেজারি বেঞ্চের কাজ হলো রাষ্ট্র পরিচালনা করা আর অপজিশন বেঞ্চের কাজ হলো ক্ষণে ক্ষণে সমালোচনা করা। এই ক্ষণে ক্ষণে সমালোচরার মা্ধ্যমে এক ধরনের জবাবদিহিতা গড়ে উঠে এবং সর্তক হয়। সে জন্য আমরা চাই আগামী নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হোক। নির্বাচনে মূল বিরোধী দল অংশ না নিলে নির্বাচন যতই সুষ্ঠু-স্বচ্ছ হোক না কেন তা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করার জন্য একবার লিনিহান কে নিয়ে এসেছিলাম। আমরা টিআইবি কে বলেছি আপনারা যারা পলিটিক্স করেন না কিন্তু পলিটিক্সের ঊর্ধে আপনাদের সমাজে একটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এই গ্রহণযোগ্যতার কারণে আপনারা একটি উদ্যোগ নিতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে অ্যাপ্রোচ করতে পারেন, আওয়ামী লীগকে অ্যাপোচ করতে পারেন। ওরা প্রতিমুহূর্তে যে আক্রমণাত্মক বক্তব্যগুলো দিচ্ছেন। ওখান থেকে সরিয়ে নিয়ে কিভাবে টেবিলে এসে মুখোমুখি করা যায় তাহলে আলোচনাটা হবে গঠনমূলক। আর যদি টেবিলের বাইরে থেকে এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে কন্টিনিউয়াসলি বিদ্বেষমূলক আক্রমনাত্নক বক্তব্য দেয় তাহলে যে দুরত্ব রয়েছে তা কিন্তু কমবে না। আমরা চাইছি নির্বাচনে সব দল অংশগ্রহণ করুক।’

সিইসি বলেন, ‘আমাদের জানা আছে আইনে আমাদের কি ক্ষমতা আছে। সেই ক্ষমতাগুলো আমরা প্রযোগ করব এবং সরকারের কাছ থেকে সেই সহয়তা নিতে পারব। সেটি হলো পুলিশ প্রশাসনকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। আর নির্বাচন যদি খুবই সহিংসতার কারণে নির্বাচন বিঘ্নিত হয়ে যায়। তাহলে আমাদের ক্ষমতা আছে কোনো একটা কেন্দ্র বা পুরো নির্বাচন বাতিল করে দিতে পারব। সেই ক্ষমতা আমাদের আইনে দেওয়া আছে। আমরা চাইব নির্বাচনে সহিৎসতা যেন না হয়।’

তিনি বলন, ‘ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে গিয়ে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন। সেই খবরটি আমরা রাখব। নির্বাচনে যদি প্রচণ্ডরকম সহিৎসতা হয়ে যায় তাহলে আমাদের সেই ক্ষমতা রয়েছে দায়িত্ব রয়েছে, অবশ্যক হলে পুরো সেন্টার কিংবা আসনের নির্বাচন বন্ধ করে দেব। তবে আশা করি আমরা এই জিনিসগুলো বারবার বলব। যেন সবাই নির্বাচনী আচরণ মেনে চলে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী ব্যয় নিয়ে টিআইবির সঙ্গে কথা হয়েছে, নির্বাচনের নমিনেশন নিয়ে অনেক টাকা-পয়সা খরচ হয়। ফলে তাদের একটা চাপ থাকে যে কোনোভাবেনই হোক আমাদের জিততে হবে। যে পয়সা আমরা খরচ করেছি তা তুলে আনতে হবে। নমিনেশন নেওয়ার সময় পয়সা নেওয়ার যে কালচার এটি কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে আমরা জানি না। কিন্তু এই জায়গা রাজনৈতিক যে নেতৃত্ব রয়েছে তাদেরকে উপলব্ধি করা উচিত। ইলেকশনটা যেত বাণিজ্যক না হয়।’

বিজ্ঞাপন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল আরও বলেন, ‘নির্বাচনে মূল বিরোধী দল অংশ না নিলে নির্বাচন যতই সুষ্ঠু-স্বচ্ছ হোক না কেন তা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয় না।’

সিইসি বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যে সব দল অংশ নেয় সেই ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন উদ্যোগ নেবে। এ বিষয়ে যা যা করণীয় কমিশনের পক্ষ থেকে সবই করা হবে।’

সারাবাংলা/জিএস/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন