June 21, 2022 | 8:55 am
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: অর্থ আত্মসাতের দায়ে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেএম শাখার বেঞ্চ সহকারী মো. ইমাম উদ্দিনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ২৮ বছরের দণ্ডের রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। তবে একই মামলার আট বছরের দণ্ডিত তার স্ত্রী কমলা আক্তারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (২০ জুন) এ রায় দেন।
রায়ে আদালত ইমাম উদ্দিনের আপিল খারিজ এবং কমলা আক্তারের আপিল গ্রহণ করেছেন। রায়ে ইমাম উদ্দিনকে পাঁচটি ধারায় মোট ২৮ বছরের কারাদণ্ড দিলেও সব ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি ধারায় সর্বোচ্চ সাজা ছিল ১০ বছরের কারাদণ্ড। আপিল খারিজ হওয়ায় ইমাম উদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন- আইনজীবী তাপস কান্তি বল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুন্নেসা রত্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের আদায় করা জরিমানার টাকা নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হচ্ছে কিনা, শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে তা খতিয়ে দেখতে এবং তদারকি করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
২০১০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ২৬ মে পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের পেশকার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ইমাম উদ্দিন তার স্ত্রী অফিস সহকারী কমলা আক্তারের সহায়তায় আদালতের অর্থদণ্ড বাবদ প্রাপ্ত ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ২৪ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।
এ অভিযোগে ২০১৫ সালের ১৮ জুন শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী হাকিম জিনিয়া জিন্নাত বাদী হয়ে পালং থানায় সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেন।
পরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের সহকারী পরিচালক হাফিজুর ইসলাম এ অভিযোগটি তদন্ত করে ইমাম উদ্দিন ও কমলা আক্তারকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
এরপর ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালতের বিচারিক হাকিম মতিয়ার রহমান ইমাম উদ্দিনকে পৃথক ৫ ধারায় ২৮ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৮৯ লাখ ৯৪ হাজার ২৪ টাকা আর্থিক দণ্ড প্রদান করেন। অনাদায়ে তাকে আরও সাত মাস ১৫ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একইসঙ্গে অর্থ আত্মসাতের কাজে সহায়তা করার দায়ে ইমাম উদ্দিনের স্ত্রী শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী কমলা আক্তারকে দুই ধারায় আট বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও নগদ ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে স্বামী-স্ত্রী হাইকোর্টে পৃথক আপিল করলে আদালত শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ইমাম উদ্দিনের সাজা বহাল রাখা হলেও তার স্ত্রী কমলা আক্তারকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও