বিজ্ঞাপন

পাহাড়ে বিদ্যুৎ বন্ধে পিএম কার্যালয়ের নির্দেশনা চাওয়ার সিদ্ধান্ত

June 21, 2022 | 8:19 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে পাহাড় থেকে অবৈধ বসতি স্থাপনে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাস সংযোগকেই মূলত দায়ী করে বক্তব্য এসেছে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায়। সেবা সংস্থাগুলোর বিদ্যমান সংযোগ অপসারণ এবং ভবিষ্যতে অবৈধ বসতিতে কোনো সংযোগ না দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা চাওয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন।

গত ২৭ মার্চ কমিটির ২৩তম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সভায় সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে তাদের মালিকানাধীন পাহাড়ে অবৈধ বসতির তালিকা চাওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবারের সভায় উপস্থিত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা সুজন চৌধুরী জানান, রেলের জমিতে ৩০০০ বসতি স্থাপনকারী আছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সভায় জানানো হয়েছে, তাদের মালিকানাধীন পাহাড়ে ১৩৫টি অবৈধ স্থাপনা আছে। ওয়াসা তাদের পাঁচটি পাহাড়ে কোনো অবৈধ স্থাপনা নেই বলে জানিয়েছে। একইভাবে বন বিভাগও নগরীতে তাদের কোনো পাহাড়ে অবৈধ বসতি নেই বলে জানিয়েছে। তবে উপজেলায় বন বিভাগের পাহাড়ে অবৈধ বসতির তালিকা করার সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞাপন

সভায় বিভাগীয় কমিশনার জানান, এক মাসের মধ্যে পাহাড়ে অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হালনাগাদ তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। সভা শেষে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটি অনুশাসন আছে। যারা ভূমিহীন তাদের পুনর্বাসন করা। এতদিন সমতলের লাখ লাখ ভূমিহীনদের জন্য ঘর করা হয়েছে। এখন পাহাড়ি অঞ্চলের জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে। আমরা হালনাগাদ তালিকা পাঠাব। সরকার যদি নির্দেশনা দেয় তখন জমি খোঁজার চেষ্টা করব। জমি দিলে যাদের ঘরবাড়ি নেই তাদের আশ্রয়নের ব্যবস্থা করা হবে।’

‘কমিটি ২৮টি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় চিহ্নিত করেছে। যেসব পাহাড় ধসে পড়েছে সেখানকার বাসিন্দাদের আগেই সরানো হয়েছিল। তারা আবার চলে আসেন। আমরা ইতোমধ্যে অভিযানে ২০৫টি স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। যারা এসব পাহাড়ের মালিক সেই সংস্থাগুলো যেন খালি হওয়া জমি নিজেদের দখলে রাখেন। যাতে নতুন করে কেউ বসতে না পারে।’

বিদ্যুৎ-পানিসহ সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিষয়ে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ‘পাহাড়ে বসবাস ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেখানে যদি রাস্তা থাকে, বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে তাহলে মানুষ বসবাসে আকৃষ্ট হয়। বিদুৎ মন্ত্রণালয়, কেবিনেট ডিভিশন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আমরা লিখব। বিদ্যুৎ-পানি-গ্যাস সংযোগ না দিলে কেউ বসবাসে উৎসাহিত হবে না।’

বিজ্ঞাপন

‘প্রতিবছর বর্ষা আসলে টেনশন, উচ্ছেদের যুদ্ধ বিগ্রহ। অনেক লোকবল লাগে। বর্ষায় হাড় ধসে প্রাণহানি হয়। তবে আমাদেরও ঘাটতি আছে। পাহাড়ে বসতি স্থাপনে শুরুতে আমরা কিছু করি না। ২ থেকে ৫ বছর পর করি। তাতে তারা উৎসাহিত হয়। উচ্ছেদ খুব কঠিন। বসতে না দিলে সব থেকে ভালো’- বলেন বিভাগীয় কমিশনার।

সভায় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (খুলশী) মো. শাহ রেওয়াজ মিয়া বলেন, ‘মতিঝর্ণা এলাকায় ৩০-৩৫ বছর ধরে বসবাস করছে। সেখানে আমাদের বৈধ কোনো সংযোগ নেই। কিন্তু সাব মিটার দিয়ে লাইন টেনে এক হাজার মিটার দূর থেকেও সাইড কানেকশন নেওয়া হয়। দিনের আলোতে পাহাড় কেটে ২-৩ তলা ভবনও করা হয়। এমনও আছে স্থাপনা করার ২-৫ বছর এমনকি ৭ বছর পরও সংযোগ চায়। সেখানে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এ বিষয়টাও আমাদের বিবেচনায় নিতে হয়।’

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (ভূমি) মো. মাসুদ কামালের সঞ্চালনায় সভায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন খান, নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (পশ্চিম) আবদুল ওয়ারীশ, পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম জেলার পরিচালক মফিদুল হক, পরিচালক (মেট্রো) হিল্লোল বিশ্বাসসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন