বিএনপির হারুনের বিশেষ অধিকার নোটিশ গৃহীত হয়নি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি দলীয় চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের বিশেষ অধিকার ক্ষুন্নের নোটিশ গ্রহণ করেননি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সোমবার (২৭ জুন) সংসদ অধিবেশনে নোটিশ গ্রহণ না করার ঘোষণা দেন তিনি। এর আগে, ২৩ জুন হারুনুর রশীদ তার নির্বাচনি এলাকার নবনির্মিত ও নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন নিয়ে বিশেষ অধিকার ক্ষুন্নর নোটিশ দেন। ওই নোটিশ নিয়ে পরে তিনি দুই দিন পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

ওই সময় স্পিকার জানান, তার নোটিশটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই তা সংসদে জানিয়ে দেওয়া হবে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (২৬ জুন) হারুনুর রশীদ তার নোটিশটি সংসদ অধিবেশনে উত্থাপন করেন।

স্পিকার নোটিশ প্রসঙ্গে জানান, ২৩ জুন হারুনুর রশীদ চাপাইনবাবগঞ্জ-৩ এর নিকট থেকে একটি নোটিশ প্রাপ্ত হয়েছি। বিশেষ অধিকার ক্ষুন্নের নোটিশ। নোটিশটি ইতোমধ্যে পরীক্ষা করা হয়েছে। হারুনুর রশীদের নোটিশটি সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদ এবং সংসদের কার্যপ্রণালীবিধির ১৬৫ এবং ১৬৬ (৩) এর আলোকে বিশেষ অধিকার সংক্রান্ত না হওয়ায় নোটিশটি গ্রহণ করা গেল না।

হারুনুর রশীদ তার নোটিশে বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী তার নির্বাচনি এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় অবস্থিত ‘গণতা সহকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে গত ২৪ এপ্রিল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর) ও ৪৪, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ (নাচোল, ভোলাহাট,গমন্তাপুর) নির্বাচনী এলাকায় নব-নির্মীত ও নির্মাণাধীন মোট ৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর ও শুভ উদ্বোধনের ফলক উম্মোচন করেন। যেখানে ৪৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) নির্বাচনি এলাকার স্কুলগুলো বাদ থাকে।

নোটিশে তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে সংসদ সদস্য থাকাকালীন সময় আমার নির্বাচনি এলাকায় বহু সরকারি/বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করি। এছাড়াও নবম ও দশম সংসদের স্থানীয় সংসদ সদস্যও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করেন। এছাড়াও খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সারাদেশেই স্থানীয় সংসদ সদস্যরাই ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও শুভ উদ্বোধন করছেন। কিন্তু আমার নির্বাচনি এলাকার নবনির্মিত ও নির্মাণাধীন ৬০টি বিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তর ও শুভ উদ্বোধন যেন না করি সে বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশনা দেন। যা বাংলাদেশ সংবিধানের পদের শপথ( বা ঘোষণা) অনুচ্ছেদের (আমি ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহীত আচরন করিব) শপথ ভঙ্গের সামীল। এহেন কর্মকাণ্ডে আমার অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে, বিষয়টি আপনার সদয় অবগতি ও জ্ঞাতার্থে জানানো হলো।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান চলতি সংসদে বিশেষ অধিকার ক্ষুন্নের নোটিশ দিয়েছিলেন। সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ২২তম অধ্যায়ে বিশেষ অধিকার প্রশ্ন নিয়ে বলা হয়েছে-১৬৫ বিধির বিধি-বিধান সাপেক্ষে, কোন সদস্যের বা সংসদের বা সংসদের কোন কমিটির বিশেষ অধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে বলে যে কোনো সদস্য প্রশ্ন তুলতে পারবেন। আলোচনার জন্য প্রস্তাবিত বিষয়টি বিধিসম্মত নয় বলে স্পিকার মনে করলে তিনি প্রয়োজনবোধে বিশেষ অধিকার প্রশ্নের নোটিশটি পড়ে শোনাতে পারবেন এবং বলতে পারবেন যে, বিশেষ অধিকার প্রশ্নের নোটিশটি বিধিসম্মত নয় বলে তিনি মনে করেন।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/একেএম