বিজ্ঞাপন

মহিষ নিয়ে দ্বন্দ্ব: হাইকোর্টের এজলাসে জামাই-শ্বশুরের কোলাকুলি

June 28, 2022 | 2:26 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় ১৭টি মহিষের মালিকানা নিয়ে জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব লিগ্যাল এইডে মাধ্যমে সমাধানের পর রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৮ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব কথা বলেন।

আবেদনটি নিষ্পত্তি করে আদালত জামাই-শ্বশুরকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, কারও কুপরামর্শ নিয়ে আপনারা আর বিরোধে জড়াবেন না। আপনারা সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন। একটা কথা মনে রাখবেন গরু-মহিষ নিয়ে কেউ কিন্তু কবরে যাবেন না।

একপর্যায়ে আদালত এজলাস কক্ষের ডায়াসের সামনে জামাই-শ্বশুরকে ডেকে আনেন। এরপর তাদের কোলাকুলি করতে বলেন। তখন জামাই-শ্বশুর একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করেন।

বিজ্ঞাপন

এ সময় আদালত বলেন, এখন মধুমাস চলছে। আপনারা একে অপরকে দাওয়াত দিয়ে বাসায় নেবেন। ভবিষ্যতে কোনো ধরনের ঝগড়া বিবাদ করবেন না।

এর আগে গত ২৩ জুন ১৭টি মহিষ ও ৫টি গরুর মালিকানা নিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতির আবদুল অদুদ খান ও তার শ্বশুর নূর মোহাম্মদের মামলা হাইকোর্টের নির্দেশে সমাধান করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস।

ওই দিন লিগ্যাল এইড অফিসে দুপক্ষের সমাঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৭টি মহিষের মধ্যে ৫টি বড় ও ৪টি ছোট মহিষ পাবেন অদুদ খান। আর ৬টি বড় ও ২টি ছোট মহিষ নেবেন শ্বশুর নূর মোহাম্মদ।

বিজ্ঞাপন

এর আগে উচ্চ আদালত দুই পক্ষের মধ্যে বিষয়টি সমঝোতার জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে (আইনগত সহায়তা কেন্দ্র) পাঠান। লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে দীর্ঘ চার ঘণ্টা সালিশ বৈঠক শেষে বিষয়টি সমাঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে জামাই-শ্বশুর এবং দুইপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতে বিষয়টি সমঝোতা করিয়ে দেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসার এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফারাহ মামুন। উভয় পক্ষের সম্মতিতে ১৭টি মহিষের মধ্যে বড় পাঁচটি ও ছোট চারটি মহিষ জামাই নেবেন। আর বড় ছয়টি এবং ছোট দুটি মহিষ শশুর নেবেন। আর গরু নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে আগেই সমঝোতা হয়।

লিগ্যাল এইড অফিসে জামাইয়ের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আক্তার রসুল মুরাদ ও মোসাদ্দেক বিল্লাহ। শ্বশুরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আলাউদ্দিন।

আইনজীবীরা জানান, লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরনিয়ামত গ্রামে মো. আব্দুল অদুদ সৌদি আরব যাওয়ার সময় ৫টি গরু ও ৮টি মহিষ তার শ্বশুর নুর মোহাম্মদের জিম্মায় রেখে যান। ১১ বছর পর ২০১৮ সালে বিদেশ থেকে ফিরে এসে জানতে পারেন সব মিলিয়ে ১৩টি গরু-মহিষের সংখ্যা ২৭-এ দাড়িয়েছে। এর মধ্যে ২০টি মহিষ ও ৭টি গরু হয়েছে। অবশ্য তিনটি মহিষ পরবর্তীতে মারা যায়।

বিজ্ঞাপন

এই সবগুলো তার দাবি করে শ্বশুর কাছ থেকে ফেরত চান অদুদ। কিন্তু শ্বশুর নুর মোহাম্মদ এগুলো ফেরত না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) কাছে মামলা করেন ওদুদ। তদন্তের পর গরু-মহিষগুলো জামাইকে বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে এই নির্দেশের বিরুদ্ধে শ্বশুর দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন।

পরে আদালত স্থানীয় কলেজ অধ্যক্ষের মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ বহাল রাখেন আদালত।

এরপর শ্বশুর ওই আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইডে অফিসে পাঠান।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন