বিজ্ঞাপন

ফিনল্যান্ড-সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানে তুরস্কের আপত্তি প্রত্যাহার

June 29, 2022 | 10:18 am

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে আপত্তি প্রত্যাহার করেছে তুরস্ক। মাদ্রিদে ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গের মধ্যস্থতায় দেশ দু’টির সঙ্গে এক স্মারকলিপি সইয়ের পর আপত্তি প্রত্যাহার করেছে আঙ্কারা। কুর্দিদের সংগঠন পিকেকে এবং অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তুরস্কের লড়াইয়ে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করে নর্ডিক দেশ দু’টি।

বিজ্ঞাপন

মাদ্রিদে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের আগে সাইডলাইন বৈঠকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান, ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসতো এবং সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসনের আলোচনার পর এই স্মারকলিপি স্বাক্ষরিত হয়। স্মারকলিপি সইয়ের আগে চার নেতার মধ্যে প্রায় চার ঘণ্টা আলোচনা চলে।

ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সউলি নিনিসতো একটি বিবৃতিতে বলেছেন, মঙ্গলবার স্পেনের মাদ্রিদে এই বিষয়ে একটি যৌথ স্মারকলিপিতে তুরস্ক, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেন স্বাক্ষর করেছে। যৌথ স্মারকলিপিতে ফিনল্যান্ড, সুইডেন এবং তুরস্ক পরস্পরের নিরাপত্তার হুমকি মোকাবিলায় পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতির উপর জোর দিয়েছে।

স্মারকলিপি অনুসারে সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড তুরস্কের পিকেকে এবং অন্যান্য সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সদস্যদের নির্বাসন বা প্রত্যর্পণের অনুরোধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সাড়া দেবে। এছাড়া পিকেকে এবং অন্যান্য সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর নিয়োগ কার্যক্রম এবং অর্থায়ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করবে। তুরস্কের ক্ষতি করে এমন জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে দমনে আইন সংশোধন ও প্রণয়ন করবে দেশ দুটি।

বিজ্ঞাপন

তিন দেশের মধ্যে স্মারকলিপি স্বাক্ষরিত হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ন্যাটো মহাসচিব স্টলটেনবার্গ বলেন, বুধবার সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩০ সদস্যের ট্রান্সআটলান্টিক জোটে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে। ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপটে ২৮-৩০ জুন ন্যাটোর গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ন্যাটো প্রধান বলেন, আমি তুরস্ক, ফিনল্যান্ড এবং সুইডেনের চুক্তিটি ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত। এর ফলে নর্ডিক দেশগুলোর জন্য ন্যাটোতে প্রবেশ পথ প্রশস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার পর নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণ দেখিয়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমাদের সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আবেদন করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। এই দেশ দু’টি কয়েক দশক ধরে নিরপেক্ষ অবস্থানে ছিল। তবে এবার তারা পক্ষ বেছে নিয়েছে।

নর্ডিক অঞ্চলের দেশ দু’টি ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার পরপরই জোটের অন্যতম সদস্য তুরস্ক আপত্তি জানায়। আঙ্কারার দাবি, ফিনল্যান্ড ও সুইডেন কুর্দি ও অন্যান্য জঙ্গিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে থাকে। ন্যাটোতে যোগ দিতে হলে দেশ দু’টি’র আইনে পরিবর্তন আনতে হবে বলেও দাবি করে আঙ্কারা।

বিজ্ঞাপন

গত ১৩ জুন তুরস্কের এ উদ্বেগ যৌক্তিক বলে স্বীকার করেন ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসটোর সঙ্গে বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে স্টলটেনবার্গ বলেন, তুরস্ক সন্ত্রাসবাদ ও অস্ত্র রফতানির ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছে। আমাদের মনে রাখতে হবে এবং বুঝতে হবে, ন্যাটোর কোনো সদস্য তুরস্কের মতো এত বেশি সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়নি। সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের সঙ্গে তুরস্কের যে টানাপোড়েন চলছে সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করা দরকার, এজন্য আলোচনায় বসতে হবে।

এর পরই মূলত তিন দেশের মধ্যে সমঝোতার পথ প্রশস্ত হয়। জেনস স্টলটেনবার্গের মধ্যস্থতায় দেশ তিনটি স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করল। এর ফলে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের ন্যাটোতে যুক্ত হওয়ার পথে আর কোনো বড় বাধা রইল না।

সারাবাংলা/আইই

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন