June 29, 2022 | 7:52 pm
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ভিন্নমত ও পথের মানুষকে জাতির শত্রু হিসেবে আখ্যা দিয়ে নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও দেশাত্মবোধকে পদদলিত করা কোনোক্রমেই ন্যায়সঙ্গত নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব।
বুধবার (২৯ জুন) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
আ স ম রব বলেন, সংবিধান চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। কিন্তু দেশে বিরাজমান ঔপনিবেশিক ধাঁচের শাসন ব্যবস্থা জনগণের স্বাধীনতাকে নিয়ন্ত্রণ ও স্তব্ধ করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের মুখোশ পরে ফ্যাসিবাদের জন্ম দেয়। ভিন্নমতকে দেশের শত্রু আখ্যা দেওয়া, খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা এবং গ্রেপ্তারের দাবি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্যই প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, যে কোনো একটা ইস্যুকে কেন্দ্র করে নাগরিকদের জাতির শত্রু দেশের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করার নৈরাজ্যপূর্ণ প্রবণতা ও বক্তব্য মানুষের মৌলিক অধিকারকে দারুণভাবে ক্ষুন্ন করবে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার ও দমনমূলক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ভীতি প্রদানে সরকারকে প্রবলভাবে প্রলুব্ধ করবে। সুতরাং এ ধরনের সংবিধানবিরোধী ও বিপজ্জনক বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে সকলকেই অনেক বেশি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। ভিন্নমত ও পথকে ভয়ের আবহে সংকুচিত করতে করতে সমাজে মানুষের গলায় জুতার মালা পরানোর ভয়ঙ্কর সংস্কৃতি বিস্তার লাভ করছে। যা সমাজ এবং রাষ্ট্রকে ক্রমাগতভাবে সভ্যতা বহির্ভূত পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রব বলেন, স্কটল্যান্ডের জনগণ যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশ্যে স্বাধীনতার দাবি শুধু উত্থাপনই করছে না, তাদের এ দাবিতে গণভোটও অনুষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু তারপরও কেউ কাউকে দেশের বা জাতির শত্রু আখ্যায়িত করেনি। রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান সত্যকে কফিনে পেরেক মেরে বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখাকেই নৈতিক কর্তব্য মনে করেছে। যা রাষ্ট্রের অস্তিত্বের পক্ষে বড় বিপদ হয়ে উঠছে। কোনো এক অজুহাত সৃষ্টি করে ভিন্নমত ও পথকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য নক আউট করা বা নির্মূল করা বা নিধন করা ন্যায়সঙ্গত তো নয়ই বরং ভয়াবহ অমঙ্গলজনক। পৃথিবীতে এমন কোনো বিষয় নেই যে বিষয়ে একের অধিক মত ও পথ নেই বা মত ও পথের ভিন্নতা নেই। মত ও পথের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাই গণতন্ত্রের ভিত্তি ও সৌন্দর্য। ব্যক্তির স্বাধীনতা নিশ্চিত হলেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন, অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুনিশ্চিত হয়। ভিন্নমতের স্বাধীনতা হরণ করলেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। জোর করে প্রতিপক্ষ বানিয়ে মীমাংসিত বিষয়কে অমীমাংসিত করে রাজনীতিতে বিভেদ উসকে দিয়ে ফায়দা লুটার প্রবণতা থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/একেএম