বিজ্ঞাপন

গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুতদের পাওনার তথ্য দাখিলের নির্দেশ

June 30, 2022 | 6:59 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পাওনা বকেয়া টাকার মধ্যে কে কত টাকা পেয়েছেন, সে বিষয়ে আগামী ২ আগস্ট তথ্য দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান। শ্রমিকদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ আলী।

আইনজীবী ইউসুফ আলী আদালতকে জানান, এ পর্যন্ত ১৭৬ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৬৮ জন শ্রমিককে গ্রামীণ টেলিকম থেকে ৩৮০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বাকি আট শ্রমিকের মধ্যে চার জন দেশের বাইরে থাকায় তাদের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। আর চার জন শ্রমিক মারা যাওয়ায় তাদের ওয়ারিশ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন না হওয়ায় অর্থ পরিশোধ সম্ভব হয়নি।

এ মামলায় রিটকারীদের আইনজীবীকে ১২ কোটি টাকা দিয়ে সমঝোতার অভিযোগও উঠেছে। এ বিষয়ে আদালত শুনানিতে বলেন, আমরা শুনেছি শ্রমিকদের আইনজীবীকে অর্থের বিনিময়ে হাত করে তাদেরকে মামলায় আপস করতে বাধ্য করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

হাইকোর্ট বলেন, আদালতকে ব্যবহার করে অনিয়ম যেন না হয়ে থাকে। যদি সবকিছু আইন অনুযায়ী না হয়, তবে বিষয়টি সিরিয়াসলি দেখা হবে। আমি চাই না আদালত ও আইনজীবীর সততা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠুক।

এসময় আদালত বিস্ময় প্রকাশ করে আরও বলেন, বাংলাদেশ কেন, উপমহাদেশের এমন কোনো আইনজীবী জন্ম নেয়নি যার ফি ১২ কোটি টাকা হবে।

এক পর্যায়ে আদালত ড. মুহম্মদ ইউনূসের আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কত টাকা ফি নিয়েছেন?’ তখন আইনজীবী বলেন, ‘আমি ২০ লাখ টাকা নিয়েছি।’ আদালত বলেন, ‘আপনি তো ২০ লাখ নিয়েছেন। কিন্তু চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের আইনজীবী কীভাবে ১২ কোটি টাকা নেন?’ এরপর শ্রমিকেরা কে কত টাকা পেয়েছেন, তার তালিকা দাখিলের জন্য আগামী ২ আগস্ট দিন নির্ধারণ করে দেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, মামলা প্রত্যাহারের শর্তে গ্রামীণ টেলিকমের চাকরিচ্যুত ১৭৬ জন শ্রমিকের পাওনা বাবদ ৪৩৭ কোটি টাকায় সমঝোতা করে গ্রামীণ টেলিকম। তারও আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে এ আবেদন দায়ের করা হয়।

আবেদনকারী সংগঠনের আইনজীবী আইনজীবী ইউসুফ আলী বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের কাছে শ্রমিকদের পাওনা টাকার দাবিতে কোম্পানিটির অবসায়ন চাওয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ টেলিকমে শ্রমিক ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে শ্রমিক অসন্তোষ চলে আসছে। শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন (বি-২১৯৪) সিবিএ’র সঙ্গে আলোচনা না করেই এক নোটিশে ৯৯ কর্মীকে ছাঁটাই করে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ। গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুল হাসানের সই করা এক নোটিশের মাধ্যমে এ ছাঁটাই করা হয়। এরপর সেই নোটিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন ২৮ জন কর্মী। এই ছাঁটাইকে কেন্দ্র করে ড. ইউনূসকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল শ্রমিকদের পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এছাড়া গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।

বিজ্ঞাপন

মামলার অন্য আসামিরা হলেন— গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুর জাহান বেগম ও শাহজাহান।

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন