বিজ্ঞাপন

‘পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনা বৈধতা পেলেও নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়’

July 1, 2022 | 4:33 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিদেশে পাচার করা টাকা কর দিয়ে বৈধভাবে দেশে আনার সুযোগ রেখেই জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট। আইনিভাবে একে বৈধতা দেওয়া হলেও এই সুযোগকে নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, যেসব দেশে টাকা পাচার করা হয়, সেসব দেশের সরকার অর্থের বৈধতা যাচাই না করেই তা বিনিয়োগের সুযোগ করে দিচ্ছে। সেক্ষেত্রে দেশে কিছু টাকা ফেরত আসলে অসুবিধা কোথায়? তাই পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত মন্দের ভালো। আইনিভাবে এই টাকা ফিরিয়ে আনার বৈধতা দেওয়া হলেও এটি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কাজ করছে না।

শুক্রবার (১ জুলাই) এফডিসিতে এবারের বাজেট নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে, আইনের বৈধতা দিয়েও তা পুরোপুরি ফেরত আনা সম্ভব নয়। চুরি করা টাকা ফেরানোর জন্য পাচার করেনি পাচারকারীরা। তাই পাচার করা অর্থের খুব সামান্যই দেশে ফেরত আনা সম্ভব হবে। তারপরও এটি মন্দের ভালো একটি ব্যবস্থা।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, এবারের বাজেটে দেখা যাচ্ছে দেশের বিদ্যমান মানি লন্ডারিং আইনের যথাযথ প্রয়োগ না করে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত অর্থপাচারকারী দুষ্কৃতিকারীদের প্রশ্রয় দেওয়ার সামিল। এতে মনে হতে পারে, মাত্র ৭ শতাংশ কর পরিশোধের মাধ্যমে অর্থপাচারকারীদের দায়মুক্তি সনদ দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, গত ২ বছর ধরে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব করোনায় আক্রান্ত। ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবন-জীবিকা ছিল প্রায় অচল। তারপরও কীভাবে, কাদের সহযোগিতায় অর্থপাচারকারীরা বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা সুইস ব্যাংক, দুবাই, সিঙ্গাপুর, কানাডায় পাচার করলেন, তা খতিয়ে দেখা জরুরি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, নতুন এই বাজেটে ব্যবসায়ী, বিত্তবান, মুনাফাভোগী ও অর্থপাচারকারীদের স্বার্থ বেশি দেখা হয়েছে। জাতীয় সংসদে যখন এই বাজেট পাশ হচ্ছে তখন সিলেট, সুনামগঞ্জসহ দেশের কয়েকটি জেলা বন্যার পানিতে ভাসছে। চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে কয়েক লাখ মানুষ। বানভাসি এসব প্রান্তিক মানুষের পুনর্বাসনের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেখা যায়নি এই বাজেটে। দুর্যোগ মোকাবিলায় এবারের বাজেটে মোট বরাদ্দের মাত্র ১ দশমিক ৫ শতাংশ রাখা হয়েছে। অথচ দেশের সার্বিক দুর্যোগের ঝুঁকি বিবেচনায় মোট বাজেটের ৩ থেকে ৫ শতাংশ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন ছিল।

প্রতিযোগিতায় সরকারি তিতুমীর কলেজকে পরাজিত করে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ছায়া সংসদে বিচারক ছিলেন উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক রিজভী নেওয়াজ, সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয় ও সাংবাদিক আরিফুর রহমান।

ছায়া সংসদে মক স্পিকার হিসেবে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়। প্রতিযোগিতাটি আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন