বিজ্ঞাপন

সন্তান হত্যার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দীপের বাবা

July 3, 2022 | 12:08 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা আরিফ রায়হান দীপ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন দীপের বাবা শেখ আলী আজম।

বিজ্ঞাপন

সন্তান হত্যার বিচারের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে তিনি বলেছেন, দীপ জেগে আছে ছাত্রলীগের আরও হাজার সন্তানের বুকে। আক্ষেপ একটাই- সুষ্ঠু বিচারের জন্য আমি এখনো দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার সন্তান হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

শনিবার (২ জুলাই) বিকেলে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে দীপের স্মৃতিতে ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন শেখ আলী আজম।

বিজ্ঞাপন

প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় শাহবাগ আন্দোলন। আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা আরিফ রায়হান দীপ।

মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিপক্ষে সোচ্চার হওয়ায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে দীপ’কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। হাসপাতালে ৮৪ দিন কোমায় থাকার পরে ২০১৩ সালের ২ জুলাই মৃত্যুবরণ করেন দীপ। এরপর থেকে ২ জুলাই কে ‘শহিদ আরিফ রায়হান দীপ দিবস’ হিসেবে পালন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২ জুলাই) দিবসটিকে ঘিরে সকালে বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে স্থাপিত দীপের ভাস্কর্যে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা। এ সময় সেখানে দীপের বাবার উপস্থিতিতে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

এদিন বিকেলে বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে দীপের স্মৃতিতে ভার্চুয়াল স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চুয়াল আলোচনায় আরিফ রায়হান দীপের বাবা শেখ আলী আজমও অংশ নেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘বুয়েটে গেলে দীপের ঘ্রাণ পাই এখনো। দীপকে কবর দিয়েছি ঠিকই, কিন্তু আমার দীপ জেগে আছে ছাত্রলীগের আরও হাজার সন্তানের বুকে। আক্ষেপ একটাই- সুষ্ঠু বিচারের জন্য আমি এখনো দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার সন্তান হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

ভার্চুয়াল স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য দেন বুয়েটের সাবেক ছাত্রনেতা- খন্দকার মঞ্জুর মোর্শেদ, এস এম মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, আতাউল মাহমুদ, মনিরুজ্জামান মোহন, কাজী খায়রুল বাশার, হাবিব আহমেদ হালিম মুরাদ, মনিরুজ্জামান মনির, রনক আহসান, তন্ময় আহমেদ, রোদসী আলমগীর, এম এ সাইদ, তানভীর মাহমুদুল হাসান, ইমরান খান, ইমরুল কায়েস রাফি, জয় প্রকাশ, আরিফুর রহমান, সফিউল আলম, তরফদার মাহমুদ, মুন্সী আব্দুস সালেকসহ অন্যান্যরা। বক্তারা মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলে আরিফের মাথায় ও পিঠে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। আরিফ যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও বুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা গত ১৭ এপ্রিল বুয়েটের মেজবাহউদ্দীন নামের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করে। বুয়েটের এম রশীদ হলের ৩০১ নম্বর কক্ষে থাকা মেজবাহ হেফাজতের সমর্থক বলে জানান ডিবি কর্মকর্তারা।

এ ঘটনায় চকবাজার থানায় আরিফের ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এ মামলায় মেজবাহকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরবর্তীতে ডিবি কর্মকর্তারা জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মেজবাহ বলেছেন, ‘গত ৬ এপ্রিল ঢাকায় হেফাজতের সমাবেশে আসা লোকজনকে খাবার সরবরাহ করায় একটি হলের মসজিদের ইমামকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছিলেন আরিফ ও তার বন্ধুরা। এ জন্যই তিনি আরিফের ওপর হামলা চালান।’

এ বিষয়ে মেজবার ভগ্নিপতি আশরাফুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, ‘দীপ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মেজবাহ দুঃখিত। তবে তিনি (মেজবাহ) মনে করেন, আরিফকে কুপিয়ে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি তার (দীপ) প্রাপ্য ছিল।’

সারাবাংলা/এসবি/পিটিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন