বিজ্ঞাপন

দেশের সব থানায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালু নিয়ে রায় প্রকাশ

July 5, 2022 | 7:58 pm

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: আসামির পরিচয় শনাক্ত করতে এবং প্রকৃত আসামি শনাক্ত করতে দেশের সব থানা ও কারাগারে হাতের আঙুল, তালুর ছাপ, চোখের মণিসহ বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর নির্দেশনা দিয়ে রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া ছয় পৃষ্ঠার রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি এ প্রকাশিত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে রায়ের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

প্রকাশিত রায়ে তিন দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো— বিদ্যমান ক্রাইম ডাটা ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের সঙ্গে দেশের সব থানায় আসামির হাতের আঙুল ও তালুর ছাপ, চোখের মণিসহ বায়োমেট্রিক পদ্ধতির প্রচলন করা; কাউকে গ্রেফতারের পর প্রথম কাজ হিসেবে আসামির সম্পূর্ণ মুখের ছবিধারণ (Mugsgot photographs) ও কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে (integrated) আপলোড করা; এবং দেশের সব কারাগারে আঙুল ও হাতের তালুর ছাপ, চোখের মণির সংরক্ষণের মাধ্যমে বায়োমেট্রিক তথ্য সংরক্ষণ সিস্টেম চালু করা।

গত ৯ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দিয়েছিলেন। রায়ে দেশের সব থানা ও কারাগারে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর পাশাপাশি নোয়াখালীর বসুরহাটের বাসিন্দা মোহাম্মদ জহির উদ্দীনের বিরুদ্ধে জারি করা পরোয়ানা অবৈধ এবং আইন বহির্ভূত ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞাপন

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

এর আগে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর খিলগাঁও থানার একটি মামলায় প্রকৃত আসামি নোয়াখালীর বসুরহাটের মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নন মর্মে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলার প্রকৃত আসামি নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারী ওরফে মোহাদ্দেস।

গত বছরের ১০ মার্চ হাইকোর্টের একই বেঞ্চ এক আদেশে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানার কার্যকারিতা স্থগিত করেন। একইসঙ্গে নোয়াখালীর জহির উদ্দিন ওই মামলার প্রকৃত আসামি কি না, তা তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জহির উদ্দিনকে খিলগাঁও থানার মামলায় (নম্বর-১২(৪)১৩) গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামি হিসেবে চিহ্নিত করার মতো পর্যাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। জহির উদ্দিন প্রকৃতপক্ষে গ্রেফতারি পরোয়ানাধারী ব্যক্তি নয়। প্রকৃত আসামি মোদাচ্ছের আনছারী ওরফে মোহাদ্দেস।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, রাজধানীর খিলগাঁও থানায় ২০১৩ সালের ৯ এপ্রিল দায়ের হওয়া ওই মামলায় পুলিশ নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের শাহজাদপুর গ্রামের আহসান উল্লাহর ছেলে মোদাচ্ছের আনছারীকে গ্রেফতার করে। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর মোদাচ্ছের তার নাম-ঠিকানা গোপন করে নিজেকে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আজগর আলী মোল্লা বাড়ি মসজিদ রোড এলাকার মোহাম্মদ আব্দুল কাদেরের ছেলে মোহাম্মদ জহির উদ্দিন নামে পরিচয় দেন। এরপর ওই বছরের ৩১ অক্টোবর মোদাচ্ছের জামিন পেয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে পালিয়ে যান। তিনি জহির উদ্দিন নামেই আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন।

এদিকে, পুলিশ তদন্ত শেষে জহির উদ্দিনসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৮ এপ্রিল অভিযোগপত্র দেয়। এরপর ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ২০১৭ সালের ১১ অক্টোবর জহিরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। এ অবস্থায় নিজের বিরুদ্ধে জারি হওয়া গ্রেফতারি পরোয়ানার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন জহির উদ্দিন। পরে সেই রিটের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেছিলেন আদালত।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন