বিজ্ঞাপন

বিশাল জনস্রোতের কাছে হেরে গেছি: রেল কর্তৃপক্ষ

July 9, 2022 | 3:04 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাত পোহালেই ইদ। শেষ মুহূর্তে ইদের আনন্দ পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে উদযাপন করতে যেকোনো মূল্যে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। অন্যান্য পরিবহনের চেয়ে ট্রেনের ওপরে চাপ বেশি পড়েছে বলে দাবি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রীদের চাপের কারণে চলতি পথে ট্রেনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছে। ফলে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে। গত দুই দিন ধরে যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে। তবে পরিস্থিতি এখন অনুকূলে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার।

এবার ৫ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে ট্রেনের ইদযাত্রা। প্রথম দুইদিন যাত্রীদের চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও সমস্যা দেখা দেয় বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে। বিকাল থেকে উত্তরাঞ্চলের ট্রেনগুলোতে দেখা দেয় শিডিউল বিপর্যয়। শুক্রবার (৮ জুলাই) রাত পৌনে ১১টায় ঢাকা থেকে ছাড়ার কথা পঞ্চগড় এক্সপ্রেসের। কিন্তু সারারাতে ট্রেন ঢাকায় পৌঁছায়নি। সকাল সাড়ে ৯টায় পৌঁছালে এক ঘণ্টা পর স্টেশন ত্যাগ করে। একই রুটের দ্রুতযান এক্সপ্রেস শুক্রবার (৮ জুলাই) রাত ৮টায় ছাড়ার কথা থাকলেও তা ছেড়ে যায় শনিবার (৯ জুলাই) সকাল ৬টায়। ফলে যাত্রীদের পড়তে হয় চরম দুর্ভোগে। বাড়ি ফিরতে হাজার হাজার মানুষ রাত কাটিয়েছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে। মানুষের এই চাপ শনিবার (৯ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ছিল কমলাপুর রেলস্টেশনে। এই পরিস্থিতির জন্য অতিরিক্ত যাত্রীদের চাপকে দায়ী করছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেনে এবার যাত্রীদের এতো চাপ থাকবে এটা আমাদের ধারণার বাইরে ছিল।

বিজ্ঞাপন

এ প্রসঙ্গে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার মো. মাসুদ সারোয়ার সারবাংলাকে বলেন, সব ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়নি। দুইটি ইদ স্পেশাল ছাড়া ২৯ জোড়া ট্রেনের মধ্যে কেবলমাত্র দুইটা ট্রেন ছাড়তে বিলম্ব হয়েছে। আন্তঃনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও আন্তঃনগর দ্রুতযান এক্সপ্রেস এই দুইটি ট্রেন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা দেরি করে আসছে।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে ট্রেনের বগিতে সমস্যা হয়েছে। যে কারণে আমাদের এই ট্রেন যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। নির্ধারিত সময়ের ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা দেরি করে পোঁছেছে। পঞ্চগড় এক্সপ্রেস শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে ছাড়ার কথা থাকলেও বিলম্বে আসার কারণে তা পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টায় কমলাপুর থেকে ছাড়তে হয়েছে। ভোররাতে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে সকাল ৬টায়। এখন কিছুটা দেরি করছে নীল সাগর এক্সপ্রেস ছাড়া অন্যান্য রুটের ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে।

রেলওয়ের এই কর্মকর্তা বলেন, রোজার ইদের চেয়ে এবার কম হলেও পাঁচগুণ যাত্রী ট্রেনে বেড়েছে। আমরা সিস্টেম করে টিকিট বিক্রি করেছি কিন্তু পরবর্তীতে যাত্রীরা টিকিট ছাড়াই ট্রেনে উঠে পড়েছে। প্রতিটি ট্রেনের ছাঁদ বোঝাই করে উঠে পড়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে আমাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রীদের চাপে স্টেশনের কলাপসিবল গেট ভেঙে গেছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মিলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারা যাচ্ছিলো না।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আগের রমজানের ইদে ছুটি বেশি ছিল এবং তা ধাপে ধাপে ছিল। এবার ছুটিটা একসঙ্গে হওয়ায় চাপ পড়ে গেছে।’

 

তিনি আরও বলেন, গার্মেন্টস কর্মীদের চাপ ছিল বাড়তি। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সকল ট্রেনের শিডিউল ঠিক ছিল। পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ও দ্রুতযান এক্সপ্রেস এক থেকে দেড় ঘণ্টা বিলম্ব ছিল। এবার কোরবানির ইদে তিন থেকে চারগুণ যাত্রী বেশি ছিল। এতো জনস্রোত ছিল, যা কোনোভাবে আমরা ঠেকাতে পারিনি। এক বিশাল জনস্রোতের কাছে আমরা আসলে হেরে গেছি।

তিনি জানান, এই রুটের ট্রেন ছাড়া আর কোনো রুটের ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেনি। পূর্বাঞ্চলের কোনো ট্রেন দেরি করেনি। সবগুলো ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। ওপার থেকে আসার পরে আমরা পাঠিয়ে থাকি। দুইটি ট্রেন ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, এবার ট্রেন পথে প্রতিদিন দেড় লাখ করে যাত্রী ঢাকা ছেড়েছেন। সেই হিসাবে গত ৫ মাসে সাত লাখ মানুষ ট্রেনে বাড়ি ফিরেছে। এবার দুই ইদ স্পেশাল ছাড়া আন্তঃনগরে ২৯ জোড়া ট্রেন চলাচল করছে।

সারাবাংলা/জেআর/এএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন