বিজ্ঞাপন

কীভাবে মাংস খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো যাবে

July 10, 2022 | 1:55 pm

লাইফস্টাইল ডেস্ক

উৎসবে-উপলক্ষ্যে, মাংস খাওয়া হবেই। আর তা যদি হয় কোরবানি ইদের মতো উপলক্ষ্য, তাহলে অনেক রোগশোকও উপেক্ষা করা যায়! উৎসবের দিনের আনন্দ তো হলো, কিন্তু এর পরের ধকলটাও তো এই শরীর যন্ত্রকেই সামলাতে হয়। আর তাই মাংস খেলেও তা যেন পরিমিত থাকে এবং নিয়ম মেনে খাওয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ইদে যে নিয়মে মাংস খেলে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি এড়ানো যাবে আসুন জানি সে উপায়গুলো-

বিজ্ঞাপন

মাংস খাবেন তবে চর্বি বাদ
মাংস থেকে চর্বি কেটে আলাদা করে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে তারপর কিছুক্ষণ সিদ্ধ করে জ্বাল করা পানি ফেলে দিলে পানির সঙ্গে মাংসের ভাজে ভাজে জমে থাকা ঘন চর্বি বের হয়ে যায়। এতে করে জমাট বাঁধা চর্বি অনেকখানি কমে যায়। এবার পেঁপে বা জালি কুমড়া দিয়ে ঝোল করে বা ভূনা করে একটি সুস্বাদু মাংসের রেসিপি রান্না করা যেতে পারে। এইভাবে প্রসেস করে রান্না করা মাংস ইদের দিনে গ্যাস্ট্রিক, আলসার, উচ্চ-রক্তচাপের রোগিরা পরিমাণ মত খেতে পারেন।

মাংসে অতিরিক্ত তেল নয়
মাংস রান্নার সময় বাড়তি তেল না দিয়ে বরং মাংসের ভেতরে থাকা চর্বি দিয়েই খুব সুস্বাদু উপায়ে মাংস রান্না করা যায়। টক দই, লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে মাংস মেখে দশ থেকে বিশ মিনিট রেখে তারপর রান্না করলে মাংস নরম হয়। আবার সুস্বাদুও হয়। রেড মিটে প্রচুর চর্বি থাকার কারণে বাড়তি তেল দেয়ার প্রয়োজন হয় না। আগুনের তাপে মাংসের ভেতরে জমাট বাঁধা চর্বি গলতে শুরু করে এবং সেই চর্বিই রান্নার সময় তেলের কাজ করে।

ভাত বা রুটি বাদ, যোগ করুন সালাদ
ডায়াবেটিস এবং হার্টের অসুখ যাদের আছে তারা মাংসের সঙ্গে ভাত বা রুটি কম খাবেন। আমাদের খাবার প্লেটে সাধারণত ভাতের পরিমাণ বেশি থাকে। এক কাপ পরিমাণ ভাত বা দুইটি রুটির সাথে মাংস খাওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই সাথে সালাদ খাবেন। সালাদে থাকা ফাইবার মাংসের মধ্যে থাকা অতিরিক্ত ফ্যাট শরীরে জমাট বাঁধতে দিবে না।

বিজ্ঞাপন

দুপুরের পর মাংসে গতিরোধক
মাংস দিয়ে বানানো বিভিন্ন মজাদার মেন্যুগুলো সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে খেয়ে নিবেন। নিজে ভালো থাকার জন্য এরপরের সময়ে মাংস খাওয়াতে বসান গতিরোধক। এর কারণটি হলো সকালের দিকে আমরা হাঁটাচলা করি। ফলে শরীর থেকে ক্যালরি খরচ হওয়ার সুযোগ থাকে। বিকেলে স্বাভাবিকভাবেই দেহের ক্যালরি পোড়ানোর কর্মকাণ্ডগুলো কমে যায়। তবে কোরবানির দিন অনেকসময়ই মাংস আসতে আসতে ও রান্না হতে হতে দেরি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে রাতে অত মাংস না খেয়ে পরদিন খান।

রাতে মাংস খেলে যা মেনে চলবেন
তবে যদি রাতে নেয়ায়েতই মাংস খেতে হয় তাহলে তার সঙ্গে শাক-সবজি দিয়ে বানানো বিভিন্ন খাবার যেমন ভাপে সেদ্ধ সালাদ, সবজির স্যুপ, ফার্মেন্টেড সব্জী (যেমন, কিমচি) ইত্যাদি খেতে পারেন। এবং শর্করা জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রুটি, পরোটা এসব খাবার না খেতে পারলে ভালো হয়। কেননা রাতে খাবার পর আমরা শুয়ে বসে সময় কাটাই। এতে করে ক্যালরি শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে থাকে। তবে সালাদ এবং ভেজিটেবল আইটেমের সঙ্গে মাংস খেলে ফাইবার বা আঁশ শরীরে চর্বি জমতে দেয় না।

‘একদিন বেশি খেলে কিছু হয় না’- কথাটা ভুল
অনেকের যুক্তি হচ্ছে একদিন বা দুদিন একটু বেশি খেলে কিছু হবে না। বিশেষ করে ইদের সময় তো খেতেই হবে। ঠিক আছে বেশি খান তবে বেশি ক্যালরি ঝরাতেও হবে। যারা ইদের আনন্দে পরিমাণ মতো মাংস না খেয়ে বেশি খেয়ে ফেলবেন তাদেরকে অবশ্যই নিয়ম করে প্রতিদিন ঘাম ঝরিয়ে ব্যয়াম করে শরীরে জমা অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে হবে। ইদের সময় সকালে কমপক্ষে ত্রিশ থেকে চল্লিশি মিনিট ইয়োগা এবং প্রাণায়াম করতে হবে। আবার বিকেলেও নিয়ম করে হাঁটতে হবে। করোনার সময় বাইরে না হেঁটে ঘরের মধ্যেই হাত ঝুলিয়ে জোরে জোরে বিশ মিনিট হাঁটুন দেখবেন শরীর থেকে ঘাম বের হচ্ছে। যারা সুস্থ থাকতে চান তাদের এই নিয়মগুলো মেনে ইদে মাংস খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করতে কোন বাঁধা নেই।

বিজ্ঞাপন

কোল্ড ডিংকস একেবারেই নয়
মাংস খাওয়ার পর কোল্ড ড্রিঙ্কস- এ যেন গোদের ওপর বিষফোঁড়া বা মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। মাংস খাওয়ার পর শরীরে নানা নেরাগ সৃষ্টির জন্য দায়ী চিনির পানীয় না খেয়ে পুদিনা পাতা দিয়ে ব্লেন্ড করা এক গ্লাস ঘোল খেলে হজম ভালো হবে। এই ঘোল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই উপকারি। এছাড়া এ সময়ে চিনি এবং লবণ ছাড়া এক গ্লাস লেবু পানি সকাল এবং বিকালে খেলে শরীর থেকে চর্বি কাটতে সাহায্য করবে।

মাংস হজমে পাকস্থলীকে সাহায্য করুন
মাংস খাবেন আপনি আর হজমের দায়িত্ব পুরোটাই পাকস্থলীর ঘাড়ে এইটা ভেবে বসে থাকলে আপনি ভুল পথে হাঁটছেন। নিজে থেকেই মাংস হজমে পাকস্থলীকে সাহায্য করুন। প্রতিবার মাংস খাবার পর কয়েক টুকরা কাঁচা পেঁপে চিবিয়ে খাবেন অবশ্যই। তবে যারা গর্ভবতী তারা পেঁপে খাবেন না।

শুধু ইদেই নয়, আমাদের সুস্থ থাকার জন্য ব্যালান্সড ডায়েট বা নিয়ম মেনে খাবার খেতে হয়। এতে শর্করা, আমিষ, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেলস্ থাকতে হবে। এই সব ধরনের ফুড গ্রুপ যখন সারাদিনের খাবারে থাকে তখনই তাকে ব্যালেন্সড ডায়েট বলে যা শরীর সুস্থ থাকার জন্য জরুরি। তাই ইদে পরিমিত মাংস খাওয়ার পাশাপাশি পরিমিত ভাত এবং রুটি খেয়ে সঙ্গে প্রতিদিন নানারকম ঋতুভিত্তিক সবজি, সালাদ ও দেশি ফল খেতে হবে যাতে করে ব্যালেন্সড ডায়েট খাওয়া হয় আবার ক্যালরির পরিমাণও ঠিক থাকে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন