বিজ্ঞাপন

চবিতে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন: গ্রেফতার আরও ১

July 23, 2022 | 7:18 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর আপত্তিকর ভিডিও ধারণের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছে র‌্যাব। এ নিয়ে এ ঘটনায় নেতৃত্বদাতাসহ শনাক্ত ছয় জনের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করল সংস্থাটি। এছাড়া ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও একজনকে হেফাজতে রেখে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৩ জুলাই) নগরীর বহদ্দারহাট এলাকা থেকে আরেকজনকে গ্রেফতারের কথা জানিয়েছেন র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

গ্রেফতার মো. সাইফুল (২৩) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মচারীর ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাদের বাসা। তবে সাইফুল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা অন্য কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র নন বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তা ইউসুফ।

‘সাইফুল পড়ালেখা করে না। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বাসা হওয়ায় সে ঘটনার নেতৃত্বদাতা আজিমদের গ্রুপের সঙ্গে নিয়মিত থাকে, আড্ডা দেয় এবং ক্যাম্পাসে ঘোরাফেরা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল ওই ছাত্রীকে নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে’— বলেন এম এ ইউসুফ।

বিজ্ঞাপন

এর আগে, র‌্যাব শুক্রবার রাতভর অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে। এরা হলেন- মো. আজিম (২৩), নুর হোসেন শাওন (২২), নুরুল আবছার বাবু (২২) ও মাসুদ রানা (২২)।

আজিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ও নুরুল আবছার বাবু নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। নুর হোসেন শাওন হাটহাজারী কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সম্মান প্রথম বর্ষ ও মাসুদ একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

আজিমের বাবা আমির হোসেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের কর্মচারী। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের স্টাফ কোয়ার্টারে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। বাকি তিন জনের বাবাও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মচারী এবং ক্যাম্পাসে পরিবার নিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাব জানিয়েছে, ঘটনার নেতৃত্বদাতা আজিম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আজিমের সঙ্গে গ্রেফতার বাকি তিনজন ছাত্রলীগের অন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত। গ্রেফতার চারজন নিজেদের ছাত্রলীগের সমর্থক দাবি করেছেন বলে জানান র‌্যাবের এই কর্মকর্তা।

একই ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে পরিচিত মেহেদী হাসান হৃদয়কে (২৩) র‌্যাব হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে তাকে এখনও গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার শিকার ছাত্রী গত ১৭ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে তার বন্ধুকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক এলাকা হয়ে প্রীতিলতা হল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। রাত সোয়া ১০টার দিকে দু’টি মোটর সাইকেলে আসা পাঁচজন তাদের পথরোধ করে জেরা করতে থাকে। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর বন্ধুকে অহেতুক মারধর করতে থাকে। ভুক্তভোগী বাধা দিলে তাকেও মারধর করা হয়। এসময় ছাত্রী ও তার বন্ধুর সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি করে ছাত্রীর ব্যাগ ও দু’জনের মোবাইল কেড়ে নেয়। এছাড়া তাদের কাছ থেকে ১৩ হাজার ৭০০ টাকা কেড়ে নেওয়া হয়।

এরপর দু’জনকে টেনেহিঁচড়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা হলের পেছনে ইটের রাস্তা দিয়ে ঝোপের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন বিভাগে কোন সেশনে পড়ালেখা করেন- সেটা জানতে চেয়ে আবারও মারধর করে। এক পর্যায়ে বন্ধুকে আটকে রেখে ওই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর বিবস্ত্র করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এ ঘটনায় ২০ জুলাই ওই ছাত্রী বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন