বিজ্ঞাপন

‘রাস্তা দখল করতে হবে, সবাই তৈরি হয়ে যান’

August 2, 2022 | 4:32 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: রাজপথ দখলের জন্য সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার ডাক দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান।

ভোলায় পুলিশের গুলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আবদুল রহিম নিহত হওয়ার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করে ঢাকা মহানগর বিএনপি। রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী এতে অংশ নেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা রাস্তা দখল করতে রাজি আছেন? রাস্তায় না নামলে কিছু হবে, রাস্তা দখল করতে হবে। আপনারা সবাই রেডি হয়ে যান, তৈরি হয়ে যান। আমরা এই ফ্যাসিস্ট কর্তৃত্ববাদী সরকারকে টেনে হিচড়ে নামাব এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব- এটা হোক আজকে আমাদের শপথ।’

বিজ্ঞাপন

এই সময় কর্মীরা ‘হরতাল, হরতাল’ শ্লোগান দিতে থাকলে মির্জা বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘হরতাল পরে দিও। আগে রাস্তা দখল কর।’

তিনি বলেন, ‘আর কোনো সময় দেওয়া চলবে না। এখন আমাদের দাবি একটাই- একদফা এক দাবি শেখ হাসিনা কবে যাবি? আসুন সেই এক দফা দাবি আদায় করার লক্ষ্যে, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে, জনগণের পার্লামেন্টে পাঠানোর লক্ষ্যে, গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মুক্ত করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রীর একটি বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অনেক কথা বলেন। বলেছেন যে, বিএনপির নেতাদের হাতে হারিকেন ধরিয়ে দেবেন। হারিকেন ধরানোর সময় শেষ আপনাদের। হারিকেন ধরানোর টাইম পাবেন না, পেছনের রাস্তায় দিয়ে যাওয়ারও সময় পাবেন না। এরকম বহু ঘটনা আছে। শ্রীলংকায় রাজাপাকসে পালাতে গিয়েও সহজে পালাতে পারছিল না, আর প্রধানমন্ত্রী তো পালাতেই পারেনি, মালদ্বীপে গিয়ে বসে আছে। পালাতে চাইলেও জনগণ পালাতে দেয় না- সেই কথাগুলো মনে রাখবেন সেই কথাগুলো স্মরণ রাখবেন।’

তিনি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আপনারা এই বাংলাদেশকে একটা শ্মসানে পরিণত করেছেন, এই বাংলাদেশকে একটা ফ্যাসিস্ট ও ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। কোথায় সাফল্য আপনাদের? এই মেট্রোরেল দেখিয়ে বলেন, পদ্মাসেতু দেখিয়ে বলেন- এখানে নাকি সব সাফল্য। অথচ এই ১৫ বছরে সবচেয়ে বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে, মানুষ দুই বেলা খেতে পারে না, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ হাহাকার করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভোলায় আমাদের এক সহকর্মী খুন হয়ে গেছে। যে ভোলা বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এক শান্তিপ্রিয় জেলা। আমরা কখনো শুনেনি সেখানে রক্ত ঝরেছে পুলিশের গুলিতে। সেই ভোলায় সম্পূর্ণ বিনা কারণে বিনা উসকানিতে জনগণের দাবি নিয়ে সমাবেশ করছিল সেখানে অতর্কিত গুলি করে আবদুল রহিমকে হত্যা করে পুলিশ।’

তিনি বলেন, ‘শুধু আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখার জন্য হত্যা-নির্যাতন করে চলেছে পুলিশ। আমরা এখন নীরব হয়ে বসে থাকতে পারি না। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যেভাবে নব্বইয়ে গর্জে উঠেছিল মানুষ, ৫২ সালে গর্জে উঠেছিল মানুষ, ৬৯‘ এ গর্জে উঠেছিলো মানুষ আজকেও সেইভাবে গর্জে উঠতে হবে। দখল করে নিতে হবে রাস্তা-ঘাট, দখল করে নিতে হবে এই ক্ষমতাসীন তখতে-তাউস, প্রতিষ্ঠা করতে হবে জনগণের সরকার।’

বিজ্ঞাপন

সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এই সমাবেশ থেকে আমি আহবান জানাতে চাই, আমাদের টার্গেট এই স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ, লুটেরা সরকারকে হটানো, আমাদের টার্গেট আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পূর্ণ মুক্ত করা, আমাদের টার্গেট ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে এসব কিছুই হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এখনো সময় আছে, সরকারকে বলব- পদত্যাগ করুন, সংসদ বাতিল করুন, নির্দলীয় সরকার গঠন করে আপনারা কেটে পড়ুন। তা না হলে শ্রীলংকার মতো জনগণ রাস্তায় নেমে আপনাদের বিদায় করবে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ‘ভোলার আবদুল রহিম দখলদার সরকারের গুলিতে মৃত্যবরণ করেছে। রহিম তুমি বিজয়ের চেতনা আগামীদিনে, রহিম তুমি মুক্তির চেতনা আগামীদিনের, রহিম তুমি গণতন্ত্রের চেতনা আগামী দিনের, রহিম তুমি স্বাধীনতার চেতনা আগামী দিনের। তোমার মৃত্যু আমরা বৃথা যেতে দেব না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, মীর সরফত আলী সপু, সাইফুল আলম নিরব, ইকবাল হোসেন শ্যামল, মহানগর বিএনপির ইশরাক হোসেন, ইউসুফ মৃধা, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের মোস্তাফিজুর রহমান, মহিলা দলের নিলোফার চৌধুরী মনি, হেলেন জেরিন খান, ওলামা দলের শাহ নেসারুল হক, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মতস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, ছাত্র দলের কাজী রওন্কাুল ইসলাম শ্রাবন ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/একেএম

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন