বিজ্ঞাপন

লিভারপুল নাকি রোমা, ছেড়ে কথা বলবে না কেউ

April 23, 2018 | 2:02 pm

সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

১৯৮৪ ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালের পর আবারও মুখোমুখি হচ্ছে ইতালিয়ান জায়ান্ট রোমা আর ইংলিশ ফেভারিট লিভারপুল। সেটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের এই আসরের সেমি ফাইনালে। ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে তখনকার ইউরোপিয়ান কাপে লিভারপুলের কাছেই টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল রোমা। ইউরোপ সেরার আসরে এবার কে সেরা, ফাইনালে উঠবে কোন দল-উত্তর জানতে অপেক্ষায় থাকতে হবে। তবে, বর্তমান পারফরম্যান্সে কেউ যে কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না সেটা অনুমেয়।

রোমা-লিভারপুল সেমিফাইনালের প্রথম লেগ হবে ২৪ এপ্রিল। লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে প্রথম লেগে আতিথ্য নেবে রোমা। আর দ্বিতীয় লেগ হবে ২ মে, রোমার ঘরের মাঠে। সেমি ফাইনালের অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হবে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ এবং জার্মান জায়ান্ট বায়ার্ন মিউনিখ। দুই সেমি-ফাইনালিস্ট লিভারপুল ও রোমার এর আগে পাঁচবার দেখা হয়েছে। লিভারপুল জিতেছে দুটি, রোমা একটি। বাকি দুই ম্যাচ ড্র। এবার সেমিতে লিভারপুলের গোল মেশিন মোহামেদ সালাহ তার সাবেক দল রোমার বিপক্ষে লড়বেন। বসে থাকবেন না বসনিয়ান মেসি খ্যাত এডিন জেকো, ইতালিয়ান তারকা স্টেফেন শারাউ, ডি রসিরা।

দাপট দেখিয়ে চলতি মৌসুমের লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটিকে কোয়ার্টারে বিদায় করে দিয়ে সেমির টিকিট কাটে লিভারপুল। ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনাল খেলার স্বাদ পেয়েছিল অল রেডসরা। সেবার চেলসিকে হারিয়ে সেমিফাইনাল খেলে লিভারপুল। জিতেছিল দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে। ১০ বছর পর আবারো সেমিতে ইংলিশ ক্লাবটি। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের দৌড়ে এগিয়ে থাকা মিশরের জাদুকর সালাহ আর ব্রাজিলের ফিরমিনো রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। ‘ই’ গ্রুপের সেরা লিভারপুল শেষ ষোলোয় পর্তুগালের ক্লাব পোর্তোকে দুই লেগ মিলিয়ে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দেয়। কোয়ার্টার-ফাইনালের দুই লেগেই ম্যানচেস্টার সিটিকে হারায় ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-১ গোলে জিতে এক দশক পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে ওঠে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।

বিজ্ঞাপন

লিভারপুলকে এগিয়ে রাখতে চাইলে ইচ্ছোটা চাঁদ ধরার মতো বলা যাবে না। এক সালাহই তো এবার লিভারপুলকে টেনে নিয়েছেন। টিম নোঙ্গরহীন হয়ে গেলেও সালাহ তার মতোই খেলেছেন। মিশরের এই গোল মেশিনকে নাকি আক্রমণভাগে একা ছেড়ে দিলেই চলে। ইয়ুর্গেন ক্লপ যদি রোমার বিপক্ষে ১-৯-০-১ অদ্ভূত এই ফরমেশনেও খেলা চালাতে চায় তাহলেও নাকি বাড়াবাড়ি হবে না। সালাহর পাশাপাশি গোলের জন্য মুখিয়ে থাকবেন সেনেগালের ২৬ বছর বয়সী সাদিও মানে, মিডফিল্ডে থাকবেন দাউদাম্পটন-আর্সেনাল ঘুরে আসা ইংলিশ তারকা চেম্বারলেইন।

এদিকে, খাদের কিনারা থেকে ফিরে আসার অসাধারণ গল্প তৈরি করে ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেমি নিশ্চিত করেছে রোমা। মৌসুমের শুরু থেকেই উড়তে থাকা বার্সার বিপক্ষে তিন গোলের ব্যবধান ঘুচিয়ে সেমিতে উঠে ইতালিয়ান ক্লাবটি। কোয়ার্টার-ফাইনালে সবচেয়ে বড় চমক সৃষ্টি করা রোমা ‘সি’ গ্রুপে চেলসি, অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ ও কারাবাখকে পেছনে ফেলে সেরা হয়ে নকআউট পর্বে উঠেছিল। শেষ ষোলোয় ইউক্রেনের শাখতার দোনৎস্কের সঙ্গে দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ২-২ করার পর অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে এগিয়ে যায় ইতালির ক্লাবটি। আর এরপরেই ঘুরে দাঁড়ানোর নতুন ইতিহাস গড়ে রোমা। ইতিহাস বোধ হয় এভাবেই লিখতে হয় জানতো তারা। নিজেরা উড়তে চাইলে, গুড়িয়ে দিতে হবে অন্য দলকে-এমন পণ করে রোমা ঠিক সেই কাজটিই করেছে নিজেদের মাটিতে।

বিজ্ঞাপন

শেষ আটের প্রথম লেগে বার্সার মাঠে ৪-১ গোলে হারের পর ফিরতি পর্বে ৩-০ গোলে জেতে রোমা। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন ৪-৪ হলেও অ্যাওয়ে গোলের সুবাদে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে ওঠে প্রথম শিরোপা জয়ের স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছে দলটি। দলে আছে ড্যানিয়েল ডি রসি, কোস্তাস মনোলাস, এডিন জেকোদের মতো তারকারা। যারা নাকি এই মৌসুমে গোলের জন্যই ক্ষুধার্ত। রোমান গ্ল্যাডিয়েটর হিসেবে ধরা হচ্ছে ডি রসিকে। ৩৪ বছর বয়সী এই ইতালিয়ান মিডফিল্ডার ২০০১ থেকেই রোমার মাঝমাঠ-ডিফেন্সকে নিজের দূর্গ বানিয়ে রেখেছেন।

রোমাকে নিয়ে মজার তথ্য দিয়েছে ইতালির গণমাধ্যমগুলো। রোমার কাছে অবিশ্বাস্যভাবে হেরে বিদায় নেওয়া বার্সার তুলনায় ডি রসিরা নাকি ৫.২ কিলোমিটার বেশি দৌড়েছেন। এই মৌসুমে জেকোকে নাকি প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা বুঝতেই পারছেন না। ইতালিয়ান স্টাইলের কাছে লিভারপুলের প্রেসিং ফুটবল কিংবা পাসিং ফুটবল যেন কিছুই না। রাশিয়া বিশ্বকাপে ইতালির এবার খেলতে না পারার যন্ত্রণাটা কি পুষিয়ে দিতে পারবে ইতালিয়ান জায়ান্ট ক্লাব রোমা? না পারলেও সেই ক্ষতে কিছুটা হলেও তো প্রলেপ দিতে পারবে!

সারাবাংলা/এমআরপি

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন