বিজ্ঞাপন

সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভে সলিমপুরের ‘দখলদাররা’

August 3, 2022 | 8:28 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি পাহাড় দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ বসতি ও স্থাপনা উচ্ছেদের প্রতিবাদে ওই এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। প্রায় একঘণ্টা ধরে নগরীর ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক আটকে বিক্ষোভের পর পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের সরিয়ে দেয়। এসময় ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (০৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জঙ্গল সলিমপুর থেকে মিছিল নিয়ে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়কে আসেন অবৈধ দখলদার হিসেবে চিহ্নিতরা। হাজারেরও বেশি নারী-পুরুষ সড়ক আটকে স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এসময় তাদের হাতে আছে। ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ নামের সংগঠনের ব্যানার এবং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশ প্রথমে তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মৃদু লাঠিচার্জ শুরু করলে বিক্ষোভকারীরা সড়ক ছেড়ে যান। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

চট্টগ্রাম নগরীর সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক যুক্ত হয়েছে যে কয়েকটি পথে তার মধ্যে ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক অন্যতম।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামরুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘এক থেকে দেড় হাজার মানুষ সড়ক অবরোধ করে ৪৫ মিনিটের মতো বিক্ষোভ করেছেন। আমরা তাদের বুঝিয়ে শান্ত করে সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছি। এখন যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।’

কারাগার স্থানান্তরসহ সরকারি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরে সরকারি পাহাড় দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ বসতি ও স্থাপনা মঙ্গলবার থেকে উচ্ছেদ শুরু করে জেলা প্রশাসন। তবে প্রথমদিনেই উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসন যাদের অবৈধ দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা উচ্ছেদে বাধা দেয়ার পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন।

বিজ্ঞাপন

সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা জঙ্গল সলিমপুর পাহাড়ে প্রায় ৩ হাজার ১০০ একর সরকারি খাসজমি আছে। ‘চট্টগ্রাম মহানগর ছিন্নমূল বস্তিবাসী সমন্বয় সংগ্রাম পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন সেই খাসজমি দখল করে প্রায় তিন দশক ধরে সেখানে পাহাড় কেটে ও জঙ্গল সাফ করে প্লট বিক্রি করে আসছে। নিম্ন আয়ের লোকজন সেই প্লট কিনে সেখানে বসতি ও দোকানপাট গড়ে তুলেছে, যার মধ্যে মায়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাও আছে। জেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও সেখান থেকে তাদের সরাতে পারেনি। সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী ওই এলাকায় প্রায় ১৯ হাজার মানুষ বসবাস করে।

এ অবস্থায় জেলা প্রশাসন সম্প্রতি সেই খাস জমি দখলমুক্ত করে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরির মহাপরিকল্পনা নেয়। গত ১ জুলাই তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ পরিদর্শনে গিয়ে নগরীর লালদিঘী এলাকা থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সলিমপুরে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন। সেখানে চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র, আর্মি স্টেডিয়াম, হাসপাতাল, পার্কসহ সরকারি বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনার কথা জানান তথ্যমন্ত্রী।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসক জঙ্গল সলিমপুরে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম ‘নাইট সাফারি পার্ক’, স্পোর্টস ভিলেজ, ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আইকনিক মসজিদ, ইকো পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা করার পরিকল্পনার কথা জানান।

বিজ্ঞাপন

মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জঙ্গল সলিমপুরে একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প ও একটি র‌্যাবের ক্যাম্প স্থাপন করা হবে।

সারাবাংলা/আরডি/একে

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন