বিজ্ঞাপন

১৫ আগস্টের কুশীলবদের বের করতে কমিশন গঠনের দাবি হানিফের

August 8, 2022 | 6:26 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কুশীলবদের বের করতে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। একইসঙ্গে ওই হত্যাকাণ্ডে বিদেশে পালিয়ে থেকে আত্মস্বীকৃত ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের বাংলাদেশের কাছে তুলে দিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (৮ আগস্ট) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘ‌র মিলনায়তনে ‘বঙ্গমাতা শেখ ফ‌জিলাতু‌ন নেছা মু‌জি‌ব বাঙা‌লির গণতা‌ন্ত্রিক আন্দোলন ও মু‌ক্তি সংগ্রা‌মের নেপ‌থ্যের সংগঠক’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। বঙ্গমাতার ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এর আয়োজন করে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি।

হানিফ বলেন, ‘পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি বঙ্গমাতাও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তার হত্যাকারী যারা দণ্ডপ্রাপ্ত, বিদেশে পালিয়ে আছে তাদের বাংলাদেশের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ওই রাষ্ট্রগুলোর কাছে অনুরোধ করব।’

তিনি বলেন, ‘যারা কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবতার কথা বলেন, মানবতার পক্ষে অবস্থান নিতে বলেন; তাদের কাছে জাতির পক্ষ থেকে আমাদের অনুরোধ, আপনারা তো সবচেয়ে মানবাধিকারের দেশ হিসেবে চিহ্নিত আপনারা তো গণতন্ত্রের বড় দেশ হিসেবে চিহ্নিত। আপনাদের মতো দেশে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এবং দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের অবস্থান বিশ্বের কাছে এবং বাঙালি জাতির কাছে সবচেয়ে বড় বেমানান।’

বিজ্ঞাপন

‘বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে, কিন্তু এ হত্যকাণ্ডের নেপথ্যে কুশীলবদের মুখোশ এখনও উন্মোচন হয়নি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের অন্যতম এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে যারা রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল, যাদের জন্য সমাজ ও দেশ বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল। এই বিভক্তি দূর করতে হলে পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের যারা কুশীলব ছিল, সেই জিয়াউর রহমনাসহ তাদের মুখোশ উন্মোচন হওয়া প্রয়োজন।’

‘এ জন্য তদন্ত কমিশন গঠন করে পঁচাত্তরের এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নেপথ্যে থেকে যারা ভূমিকা রেখেছিল, তাদের মুখোশ উন্মেচন করা হোক। তাহলে আমাদের ভবিষ্যতে যুব সমাজ ইতিহাস জানতে পেরে তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। এই জাতি আস্তে আস্তে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে নিজেদের এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।’

পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ছিল, যারা আত্মস্বীকৃত ঘাতক তাদের বিচার করতে গেলে নেপথ্যে খলনায়কদের নাম বেরিয়ে আসবে। আর এতে জিয়াউর রহমানের নাম সবার আগে চলে আসবে। এ জন্য তিনি ঘাতকদের বিচার বন্ধ করেছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার কারণেই এই বিচার করা সম্ভব হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধুর জীবনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছার অবদান তুলে তিনি বলেন, ‘বেগম মুজিবের বিচক্ষণতা ছিল প্রখর। রাজনীতিতে তিনি যুক্ত ছিলেন না কিন্তু নেপথ্যে থেকে রাজনীতিতে সহায়তা করেছেন। বঙ্গবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তার যে পরামর্শগুলো ছিল তা ছিল অবিস্মরণীয়। তিনি অনেক অনুপ্রেরণাময়ী ছিলেন।’

হানিফ বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে অনেকে অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুকে। কিন্তু বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে নিজের মনে যা আসবে তা বলতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে যখন কারগারে থাকতেন তখন তার সঙ্গে দেখা করে তার নির্দেশনা দলের নেতাকর্মীদের জানাতেন।’

দলের উপদেষ্টা প‌রিষদ সদস‌্য এবং বন ও প‌রিবেশ বিষয়ক উপক‌মি‌টির চেয়ারম‌্যান অধ‌্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপ‌তি‌ত্বে আলোচনা সভায় বক্তব‌্য রাখেন দলের কার্যনির্বাহী ক‌মি‌টির সদস‌্য মো. আনোয়ার হোসেন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, ইতিহাস‌বিদ ও বাংলা‌দেশ ইউনিভা‌র্সি‌টি অব প্রফেশনালের অধ‌্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হো‌সেন, রাজ‌নৈ‌তিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায়, দৈ‌নিক আমাদের অর্থনী‌তির এডিটর ইনচার্জ মাসুদা ভা‌ট্টি প্রমুখ।

অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন আওয়ামী লী‌গের বন ও প‌রি‌বেশ বিষয়ক সম্পাদক ও উপক‌মি‌টির সদস‌্য স‌চিব দেলোয়ার হোসেন।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এনআর/একে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন