বিজ্ঞাপন

‘মিথ্যাচার করে মানবাধিকার পরিস্থিতি ঢেকে রাখা যাবে না’

August 16, 2022 | 9:40 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা বলেছেন, মিথ্যাচার করে দেশের ভয়াবহ মানবাধিকার পরিস্থিতি ঢেকে রাখা যাবে না। এই সরকার পদে পদে নগ্নভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট)  এক যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এ কথা বলেন।

নেতারা বলেন, জনগণের ভোটাধিকার হরণকারী এই সরকার দেশব্যাপী চরম দুঃশাসন, অরাজকতা ও ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী অবস্থা জারি করে পদে পদে নগ্নভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে চলেছে। অথচ জাতিসংঘের হাইকমিশনারকে তারা নির্জলা মিথ্যাচার করছে।

এই সরকার শত শত মানুষকে গুম করেছে, লাখ লাখ বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের দমন করেছে, পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে নিপীড়ন চালাচ্ছে, মিছিলে গুলি করে মানুষ মারছে, আমলাতন্ত্র ও প্রশাসনকে চরম দলীয়করণ করে ব্যাপকভাবে জনগণের বিরুদ্ধেই ব্যবহার করেছে। গত ১৩ বছরে আদালতকে প্রভাবিত করে দেশকে বিচারহীনতা ও নৈরাজ্যে ডুবিয়েছে। মূলত মানবাধিকার পরিস্থিতিকে এই সরকার এক নিকৃষ্ট পর্যায়ে নিয়ে গেছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।

বিজ্ঞাপন

নেতারা বলেন, সম্প্রতি নেত্র নিউজ নামে একটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ‘আয়নাঘরের রিপোর্ট’ দেশের মানুষের সামনে এক ভয়াবহ চিত্র হাজির করেছে। এই রিপোর্টের চিত্র একটা স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক দেশে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বস্তুত এই রিপোর্ট দেশে বিরাজমান চরম কর্তৃত্ববাদী শাসনের বাস্তবতাই তুলে ধরে। আমরা এই রিপোর্ট বিষয়ে অবিলম্বে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা চাই।

সরকার তার জবাবদিহিতাহীন ও কর্তৃত্ববাদী শাসন টিকিয়ে রাখতে বিরোধী সকল মতকে দমন-পীড়ন-হত্যা করছে। সরকার স্থায়ীভাবে সকল মত ও ভিন্নমতকে দমন করতে ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এর ধারাবাহিকতায় সরকার রাজনৈতিক কর্মীসহ, সাংবাদিক, শিল্পী ও জনসমাজের নানা প্রতিনিধি, এক্টিভিস্টদের বিভিন্ন মামলার জড়িয়ে রাতের আঁধারে গ্রেফতার করেছে এবং জামিন না দিয়ে মাসের পর মাস জেলখানায় আটক রেখেছে। সরকার এই আইন বাতিলে জনদাবির কোনো তোয়াক্কা করে নাই উল্টো বিভিন্ন নামে আরও দমনমূলক আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় আছে বলে ওই বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

ওই বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, সরকার একমাত্র ভয় ও স্থায়ী আতঙ্ক তৈরি করেই রাষ্ট্র পরিচালনা করছে, জনসমর্থন বা জনমত দিয়ে নয়। ভোটবিহীন দুইটা তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার পর, এখন সামনের নির্বাচন নিয়েও নানা ছক কষছে। এই ছককে বাস্তবায়নের জন্যই পুরো দেশে অসীম ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। জুলুমের চূড়ান্ত হিসাবে গুম-খুন হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের অসহায় সদস্যদের মুখ খুলতে পর্যন্ত বাধা দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

নেতারা বলেন, সরকার সর্বঅর্থেই মানবাধিকার পরিস্থিতি লঙ্ঘন করে চলেছে। এরা তার আইন বহির্ভূত দমন-পীড়নের সহযোগী কতিপয় ব্যক্তিকে রক্ষা করতে পুরো দেশকেই এবং দেশে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকেই বিশ্বের দরবারে হেয় প্রতিপন্ন করতে কুণ্ঠা করছে না। এই সরকার যে কোনো প্রক্রিয়ায় তার জনসম্মতিহীন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর।

এই সরকারের কাছে দেশের নাগরিকদের মানবাধিকারের ন্যূনতম নিশ্চয়তা নেই, দেশের নিরাপত্তাও ভয়াবহ হুমকীর মুখে। কাজেই অবিলেম্বে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে একটি অন্তর্বতীকালীন সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি এবং সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে দেশে শাসনব্যবস্থা বদলানোর সংগ্রাম গড়ে তুলতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন নেতারা।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন