August 17, 2022 | 10:47 am
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: সাভারের আশুলিয়ায় কমার্স ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতিকালে আটজনকে হত্যার দায়ে জঙ্গিসহ ছয়জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিচারপতি সৈয়দ মো. জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহ মো. আশরাফুল হক জর্জ।
মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা আসামিরা হলেন— বোরহানউদ্দিন, সাইফুল আলামিন, মাহফুজুল ইসলাম ওরফে সুমন ওরফে জামিল, মো. জসীমউদ্দিন, মিন্টু প্রধান ও পলাশ। তাদের মধ্যে পলাশ পলাতক রয়েছেন। নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসাম উকিল হাসানকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া বাকিদের দণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২১ এপ্রিল দিনদুপুরে আশুলিয়ায় বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ডাকাতদের গুলি ও চাপাতির কোপে ওই ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক ওয়ালি উল্লাহ, দুই নিরাপত্তা প্রহরী কাজী বদরুল আলম ও ইব্রাহীম, ব্যাংকের গ্রাহক সাহাবুদ্দিন পলাশ, স্থানীয় ব্যবসায়ী নূর মোহাম্মদসহ আটজন নিহত হন। ব্যাংকের ভল্টে থাকা ছয় লাখ ৮৭ হাজার ১৯৩ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পালিয়ে যাওয়ার সময় বোরহান উদ্দিন ও সাইফুল নামের দুই ডাকাতকে জনগণ হাতেনাতে ধরে ফেলে পিটুনি দেয়। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে বাবুল সরদার ও মিন্টু প্রধানকে আটক করে পুলিশ। পরের দিন ব্যাংকের কর্মকর্তা ফারদিন হাসান আশুলিয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
এরপর ২০১৫ সালের ১ ডিসেম্বর আশুলিয়া থানার পুলিশ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করে। বাবুল সরদার, মিন্টু প্রধান, উকিল হাসান ও শাহজাহান জমাদার ছাড়া অন্য সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য বলে উল্লেখ করা হয় চার্জশিটে।
এ মামলার বিচার শেষে ২০১৬ সালের ৩১ মে রায় দেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান। রায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্য দুই আসামিকে তিন বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়ে। অন্য দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেন। মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন— বোরহান উদ্দিন, সাইফুল ওরফে আল-আমিন, মিন্টু প্রধান, মো. জসিম উদ্দিন, মো. মাহফুজুল ইসলাম ওরফে সুমন ও পলাশ ওরফে সোহেল রানা।
আসামি উকিল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আবদুল বাতেন ও শাহজাহান জমাদারকে তিন বছর করে কারাদণ্ড ও তিন হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাবুল সরদার ও মোজাম্মেল হককে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। পরে নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামিরা আপিল দায়ের করেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস