বিজ্ঞাপন

পরিবেশ দূষণ রোধে আওয়াজ তুলতে হবে: তানভীর শাকিল জয়

August 28, 2022 | 9:42 am

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: পরিবেশ দূষণ রোধে দেশের বৃহৎ একটা অংশের আওয়াজ তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের পরিবেশ রক্ষায় যতো ভালো ভালো আইন আছে, বিশ্বের বহু দেশেও এত ভালো আইন নেই। কিন্তু আইন বাস্তবায়নে সমস্যা রয়েছে। গত সপ্তাহেও স্থায়ী কমিটিতে আলোচনা করেছি হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরানো কতোটা লাভ হয়েছে এ প্রসঙ্গে। তথ্য রয়েছে, এই স্থানান্তরে পরিবেশের ক্ষতি বেড়েছে। সাভারে এখন পর্যন্ত সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের কোনো ব্যবস্থাই করা হয়নি। কিন্তু বাস্তবতা হলো পরিবেশ মন্ত্রণালয় বা অধিদফতর কোনো প্রকার ব্যবস্থা নিতে পারছে না। অথচ এখানে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ক্ষমতা থাকার কথা। এমন অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য দেশের বৃহৎ একটা অংশের আওয়াজ তোলা প্রয়োজন।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধেশ্বরী ক্যাম্পাসের অডিটোরিয়ামে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) আয়োজিত ২ দিনব্যাপী ‘এয়ার কোয়ালিটি মনিটরিং অ্যান্ড হেলথ ইমপ্যাক্ট অ্যাসিসমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়। শনিবার (২৭ আগস্ট) ওই সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের কর্মী, পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন। এই কর্মশালার সহযোগিতায় ছিল ইউএসএআইডি।

বিজ্ঞাপন

তার বক্তব্যে সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় আরও বলেন, ঢাকার বায়ু যে বর্তমানে কতটা খারাপ তা গবেষণার দরকার নেই। ঢাকায় একবার নিঃশ্বাস নিয়ে পদ্মার পাড়ে গিয়ে আবার নিঃশ্বাস নিলেই পার্থক্য পাওয়া যাবে। বর্তমান গবেষণা বলছে, বায়ু দূষণের জন্য আমাদের যে পরিমাণ কর্মঘণ্টা বা আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে তা দুটি পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয়ের চেয়েও বেশি। আমার ধারণা বাস্তবে ক্ষতি আরও বেশি। এ থেকে পরিত্রাণে প্রধান দায়িত্ব যদি সরকারের।

জয় বলেন, আমরা অনেক কাজ করছি তবুও আমাদের ঘাটতি আছে। পরিবেশ বিষয়ক বিসিএস ক্যাডার যদি অধিদফতরগুলোতে পেতে চাই, সে ক্ষেত্রে তাদের যে সাপোর্ট দেওয়া প্রয়োজন তা আমরা করতে পারছি না। প্রতিটি মিটিং আমরা আলোচনা করি কিন্তু বাস্তবায়ন হয় না। এই যে বিধিমালা হয়েছে, এর আগে আইন হওয়া জরুরি ছিল। আমরা শত চেষ্টা করার পরেও পারিনি। তাও বলব উন্নতি হয়েছে, আগে তাও ছিল না। প্রতিবন্ধকতা স্বত্বেও অগ্রসর হচ্ছি।

বিজ্ঞাপন

তরুণ এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ইটভাটা বায়ুদূষণের জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী। এটা বন্ধে অটোবিক্স তৈরিতে আইন করা হয়েছে। বাস্তবতা হলো, সরকারি বেসরকারি কাজগুলোতেতো ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। তার মানে আমাদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশনা রয়েছে পরিবেশ বাঁচিয়েই উন্নয়ন কাজ করার।

এ সময় তিনি বায়ু ও শব্দ দূষণ নিয়ে বিস্তর গবেষণার জন্য স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, আমরা আগে মনে করতাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হয় না। কিন্তু স্টামফোর্ডের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ সেটা ভুল প্রমাণ করেছে।

পরিবেশ অধিদফতরের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক মো. জিয়াউল হক বলেন, পরিবেশ অধিদফতর গত সপ্তাহেও বিসিএস এ পরিবেশ ক্যাডার যুক্ত করার বিষয়ে বলেছে। বহুদিন ধরে বলে আসছি। আমার দায়িত্ব থাকাকালে এটা বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারব কিনা, জানা নেই।

স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও ক্যাপসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, পরিবেশ নিয়ে জানার আগ্রহ মানুষের অনেক। আজকে পরিবেশ নিয়ে কথা বলাসহ এর প্রভাব ও বাঁচার উপায় খুঁজছি আমরা। যেখানে সরকারের আন্তরিকতাও রয়েছে। বর্তমান সময়ে পরিবেশ ক্যাডার চালু করা সময়ের দাবি।

বিজ্ঞাপন

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, দূষণের সঙ্গে স্বাস্থ্যঝুঁকি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রতিবছর প্রায় আড়াই থেকে তিন লাখ লোক ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত তালিকায় যুক্ত হচ্ছেন। থাইরয়েড রোগী বাড়ছে। যাদের অধিকাংশ ৪০ বছরের নারী। এছাড়াও বন্ধ্যত্ব বাড়ছে, যার মূলে পরিবেশ দূষণ, বায়ু দূষণ। এছাড়া সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে ঝুঁকি বাড়ছে। এমন সমস্যা থেকে উত্তরণে আমাদের পথ খুঁজতে হবে।

সারাবাংলা/আরএফ/আইই

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন