বিজ্ঞাপন

সেবা খাতে ঘুষ লেনদেনের শীর্ষে পাসপোর্ট: টিআইবি

August 31, 2022 | 3:02 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বাংলাদেশের ১৭টি সেবা খাতের মধ্যে ঘুষ লেনদেনে শীর্ষে অবস্থান করছে পাসপোর্ট খাত। এই খাত থেকে সেবা নিতে গিয়ে ৫৫ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষকে ঘুষ দিতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (৩১ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআইবি) উদ্যোগে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ-২০২১’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব তথ্য তুলে ধরেন।

২০২০ সালেরর ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ২১ নভেম্বর সময়ে তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১৭টি সেবা খাতের দুর্নীতি ও ঘুষ গ্রহণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। টিআইবির প্রতিবেদনে শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্ত খাত হিসাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে উল্লেখ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়, সংস্থাটি থেকে সেবা নিতে আসা লোকজনের ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ দুর্নীতির শিকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা বলতে প্রতিবেদনে থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, সিআইডি, এসবি, ডিবি এবং র‌্যাব সদস্যদের বোঝানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

টিআইবি প্রতিবেদনে দুর্নীতির ধরন সম্পর্কে বলা হয়, ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে এসে সেবাদানকারী সংস্থার লোকজনের কাছ থেকে দায়িত্ব পালনে অবহেলার শিকার হয়েছেন। ৪০ দশমিক ১ শতাংশ মানুষকে ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূতভাবে অর্থ লেনদেন করতে হয়েছে। ২৩ দশমিক ৪ শতাংশ সেবাগ্রহিতা অসদাচারণ ও হয়রানির শিকার হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দুর্নীতির শিকার হওয়া ৫৫ শতাংশ সেবাগ্রহিতা ঝামেলা, হয়রানি অথবা নেতিবাচক পরিস্থিতির ভয়ে কোনো ধরনের অভিযোগ দায়ের করে না। আবার ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ সেবাগ্রহিতা দুর্নীতিকে স্বাভাবিকভাবেই নেয়। তাই অভিযোগ দায়েরের প্রয়োজন অনুভব করেন না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ১৭টি সেবাগ্রহিতা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার পর দুর্নীতিতে পর্যায়ক্রমে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে পাসপোর্ট খাত। এই খাতে ৭০ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ সেবা নিতে এসে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। এরপরেই রয়েছে বিআরটিএ, এই খাতে সেবা নিতে এসে ৬৮ দশমিক ৩ শতাংশ, বিচারিক সেবা নিতে হবে ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাত থেকে সেবা নিতে এসে ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ সেবাগ্রহিতা দুর্নীতির শিকার হযেছেন। এর পর রয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ, ভুমি সেবা, শিক্ষা, বিদ্যুৎ, জলবায়ী পরিবর্তন ও দুযোগ খাত। অন্যদিকে ১৭টি খাতের মধ্যে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয়েছে অন্যান্য খাত (মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন শিক্ষা, ওয়াসা), এর নীচে রয়েছে কর ও শুল্ক, ব্যাংকিং, গ্যাস, এনার্জি, বিমা, কৃষি খাত।

বিজ্ঞাপন

অন্যদিকে, টিআইবি প্রতিবেদেনে ঘুষ লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে পাসপোর্ট। এই খাতে সেবা নিতে এসে ৫৫ দশমিক ৮ শতাংশ সেবাগ্রহিতাকে ঘুষ লেনদেন করতে হয়েছে। ঘুষ লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা। এই সংস্থা থেকে সেবা নিতে এসে ৫৫ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষকে ঘুষ দিতে হয়। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিআরটিএ। এই খাতে সেবা নিতে গিয়ে ৫০ দশমিক ২ শতাংশ মানুষ ঘুষ দিতে হয়েছে। ঘুষ লেনদেনে এরপর রয়েছে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (৩৩.৫), ভূমি সেবা ( ৩১.৫), বিচারিক সেবা ( ২৩.৭) এবং শিক্ষা ১৬.৯)।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থা হিসেবে তাদের দায়িত্ব ছিল অনিয়ম দুর্নীতি ও ঘুষ লেনদেন প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের সদস্যরাই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে। একই কথা পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সেবা খাতের সংস্থাগুলোর মধ্যে সেবা নিতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ঘুষ লেনদেন করতে হয় পাসপোর্ট অফিসে।’

সারাবাংলা/জিএস/এএম/পিটিএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন