বিজ্ঞাপন

রাশিয়া থেকে তেল আমদানি সম্ভব নাও হতে পারে

September 5, 2022 | 12:21 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো: রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব জ্বালানি তেল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জারুবেঝনেফ জেএসসির পাঠানো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের নমুনা পরীক্ষা প্রায় গুছিয়ে এনেছে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারির (ইআরএল) ল্যাব। আগামী বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের সম্ভাব্য সময়ও নির্ধারণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞাপন

তবে পরীক্ষা পুরোপুরি শেষ না হলেও সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, পরিশোধন খরচ বেশি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি সম্ভব হবে না।

সাম্প্রতিক রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ জ্বালানি তেলের বিশ্ববাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা তৈরি করেছে। ভারত-চীনসহ কয়েকটি দেশ রাশিয়া থেকে কম দামে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনা শুরু করে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র মতে, বাংলাদেশ সাধারণত সৌদি আরব ও আরব আমিরাত থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডে সেই তেল পরিশোধন করে ডিজেল, পেট্রল, অকটেনসহ বিভিন্ন রকম জ্বালানি তেল উৎপাদন করে। বছরে ১৫ লাখ টন তেল শোধনের সক্ষমতা আছে তাদের। দেশে মোট জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশই ডিজেল।

ভারত-চীনসহ কয়েকটি দেশ রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা শুরুর পর গত মে মাসে দেশটি বাংলাদেশকেও অপরিশোধিত জ্বালানি তেল কেনার প্রস্তাব দেয়। সংকট মোকাবিলায় সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানির বিষয়টি পর্যালোচনার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বিজ্ঞাপন

এরপর বিপিসি রাশিয়ার জ্বালানি তেলের মান, ব্যবহারের উপযোগিতা, দাম এবং আমদানি খরচসহ বিভিন্ন বিষয় যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নেয়। গত ২৫ আগস্ট জারুবেঝনেফ জেএসসির পাঠানো অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের নমুনা ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে।

১ সেপ্টেম্বর জারুবেঝনেফ জেএসসির বাংলাদেশি এজেন্ট ন্যাশনাল ইলেকট্রিক বিডি লিমিটেডের প্রতিনিধিরা অপরিশোধিত তেলের ৫০ কেজি ওজনের নমুনার চালানটি পাঁচটি প্লাস্টিক জারে করে ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমানের কাছে হস্তান্তর করেন। ওইদিনই নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (ডেভেলপমেন্ট এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল) রায়হান আহমাদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘অনেকগুলো টেস্ট করতে হচ্ছে। কয়েকটা টেস্ট এখনও বাকি আছে। একটা কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা টেস্টের রেজাল্ট অ্যানালাইসিস করবেন। তারপর চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। আমরা আগামী বৃহস্পতিবার বিপিসির কাছে প্রতিবেদন জমা দেব বলে আশা করছি। যেহেতু বিপিসি আমাদের মাদার কনসার্ন, তাদের কাছেই আমরা দেব। তারা বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।’

প্রাথমিক পরীক্ষায় রাশিয়ার জ্বালানি তেল আমদানি যোগ্য মনে হচ্ছে কি না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা কমিটির অ্যানালাইসিসের আগে বলা ঠিক হবে না। এটা বিপিসি বলবে বা জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় বলবে। আমরা শুধুমাত্র নমুনা পরীক্ষা করে রেজাল্টটা জানিয়ে দেবো।’

বিজ্ঞাপন

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, শেষ পর্যন্ত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করা সম্ভব না-ও হতে পারে। বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী, রাশিয়ার তেলে সালফারের পরিমাণ অনেক বেশি, ফলে পরিশোধন খরচও বেড়ে যাবে। নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে মত তাদের।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন