বিজ্ঞাপন

রাশিয়া থেকে শিখে এসে দেশে কার্ড জালিয়াতি!

April 25, 2018 | 4:47 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সুপার শপ স্বপ্নে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করার সময় গ্রাহকদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের পিন নম্বর চুরি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। তিনি রাশিয়ায় পড়ালেখা করতে গিয়ে এই বিদ্যা শিখে দেশে ফিরে আসেন এবং জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়েন।

বুধবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্লা নজরুল ইসলাম।

সম্প্রতি পাঁচটি ব্যাংকের কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে শরিফুলকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

এসময় তার কাছ‌ থে‌কে একটি ল্যাপটপ, ১৪০০ ক্লোন কার্ড, একটি ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ কার্ড রিডার ও রাইটার, তিনটি পজ মেশিন, ডিজিটাল হাতঘড়ি, দুইটি মিনি কার্ড রিডার ডিভাইস, ১৪টি পাসপোর্ট, আটটি মোবাইল সেট, ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি নেক্সাস ক্রেডিট কার্ড, পটচুল ও একটি কালো রঙের সানগ্লাস এবং তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়।

নজরুল ইসলাম বলেন, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে পাঁচটি (ব্রাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া) ব্যাংকের জালিয়াতির ঘটনা সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের নজরে আসে। তদন্ত দেখা যায়, ক্রেতারা যখন সুপার শপে যান তখন একটি সংঘবদ্ধ চক্র কৌশলে ব্যাংকের গ্রাহকদের ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের তথ্য চুরি করে ক্লোন কার্ড বা‌নি‌য়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরি করছে। নিশ্চিত হওয়ার প‌রে এই চ‌ক্রের মূল‌হোতা শরিফুলকে গ্রেফতার করা হয়।
তি‌নি আরও ব‌লেন, শরিফুল স্বপ্নের বনানী শাখায় কাজ করতেন। গ্রাহকরা যখন ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে বিল প‌রি‌শোধ কর‌তেন তখন শরিফুলের স্মার্ট হাতঘড়িতে সংযুক্ত বিশেষ মিনি কার্ড রিডারের মাধ্যমে গ্রাহকের কার্ডের তথ্য স্ক্যান হয়ে যেত। তারপর গ্রাহক পিন নম্বর দিলে বিলের রি-প্রিন্ট দিয়ে ওই কপির পেছনে লিখে রাখতেন শরিফুল। প‌রে ক্লোন কার্ড তৈরি করে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিত। বুথের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে যেন তাকে চেনা না যায় তাই পটচুল ও চশমা ব্যবহার করতেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগত চলাচলের জন্য টয়োটা এলিয়েন মডেলের গাড়ি ব্যবহার করেন শরিফুল। তার ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এভাবে জালিয়াতি করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।

মেহেরপুর জেলার বোয়ালীয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০০১ সালে মাধ্যমিক এবং ২০০৩ সালে গাঙনি ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন শরিফুল। পরে উচ্চ শিক্ষা নিতে রাশিয়া যান তিনি। সেখানে পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি থেকে মাইন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে তিন বছর মেয়াদি ডিগ্রি নিয়ে ২০১০ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন শরিফুল।

রা‌শিয়ায় পড়ালেখা করার সময় রাশিয়ান রুমমেট ইভানোভিচের কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির কৌশল শেখেন। শরিফুলকে গ্রেফতার করার পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

বিজ্ঞাপন

‌নজরুল ইসলাম আরও বলেন, ২০১৩ সালে জালিয়াতির ঘটনায় দুইটি মামলা হয়। সেই মামলায় শরিফুল ১৮ মাস জেলে থাকেন। মুক্তি পেয়ে কিছুদিন স্টুডেন্ট কনসালটেন্সি ফার্ম খু‌লে বসেন, তবে সুবিধা করতে না পেরে আবারও কার্ড জালিয়াতিতে জড়িয়ে পড়েন।

এদিন (২৫ এপ্রিল) বিকেলে শরিফুলকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র উপ-পরিদর্শক (এসআই) এএইচএম ফজলে রাব্বী। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম ফাহাদ বিন আমিন চৌধুরী ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সারাবাংলা/এসআর/এটি

** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন