বিজ্ঞাপন

২০ দলীয় জোট নেই— ইঙ্গিত মির্জা ফখরুলের

September 13, 2022 | 3:19 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট আর নেই— এমনটিই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ ইঙ্গিত দেন।

২০ দলীয় জোট কি আছে— সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রশ্ন উত্তর পর্বে এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা যুগপৎ আন্দোলনে আছি।’

তাহলে কি ২০ দলীয় জোট বিলুপ্ত হয়ে গেছে— এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আহ্বান করেছি যুগপৎ আন্দোলন করার জন্য।’

বিজ্ঞাপন

জামায়াতের একটা বক্তব্য নিয়ে তোলপার হয়েছে। তাদের সঙ্গে আপনাদের সম্পর্ক এখন কেমন— অপর এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওটার ব্যাপারে আমি জবাব দিয়ে দিয়েছি আপনাদের। আমরা এখন যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি। বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে বুঝতে হবে, আমরা যুগপৎ আন্দোলনের কথা বলছি। সব দল, সব মতকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি যে, যেকোনো দল, যেকোনো সংগঠন এই কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলে তাদের সবাইকে নিয়ে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।’

‘যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে। সেই নির্বাচনে যদি জিতি, তাহলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করব। আপাতত এখন আমরা যুগপৎ আন্দোলনের কথা ভাবছি’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

১৯৯৯ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি এবং ইসলামী ঐক্য জোট মিলিত হয়ে চার-দলীয় ঐক্য জোট গঠন করে। কিছু দিন পরই জাতীয় পার্টির একটি অংশ এরশাদের নেতৃত্বে দল থেকে বের হয়ে যায়। কিন্তু নাজিউর রহমান মঞ্জুরের সমর্থক অংশটি জোটে থেকে যায়। সে সময় জোটভূক্ত দলগুলো মধ্যে ছিল- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও ইসলামী ঐক্য জোট।

বিজ্ঞাপন

এরপর দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল সমমনা আরও কিছু রাজনৈতিক দল নিয়ে চার দলীয় জোটকে সম্প্রসারিত করে ১৮ দলীয় জোট গঠন করে বিএনপি। এই জোটে বিএনপির চার দলীয় জোটের পুরোনো শরিক বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইসলামী ঐক্যজোটসহ নতুন যোগ দেয় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ইসলামিক পার্টি, ন্যাপ ভাসানী, ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) ও পিপলস লীগ। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল যোগ দিলে জোটটি বিশ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়।

কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর ২০ দলীয় জোট আস্তে আস্তে ভাঙতে থাকে। জোটের পুরোনো শরিক ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, নতুন শরিক ন্যাপ ভাসানী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), বাংলাদেশ ন্যাপ একেক করে ২০ দলীয় জোট ছেড়ে চলে যায়। জোটের সংখ্যাতাত্বিক নাম ঠিক রাখতে এসব দলের ক্ষুদ্রাংশ নিয়ে গঠিত বিকল্প দলগুলোকে শরিক হিসেবে জোটে অন্তর্ভুক্ত করে বিএনপি।

সম্প্রতি জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের আমির ডা. শফিকুর রহমান এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে আমাদের পরিষ্কার কথা হয়েছে। তারা আর জোট করবে না। অভিন্ন ইস্যুতে আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।’

আজকের সংবাদ সম্মেলনে একই সুরে কথা বললেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জোটের ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন করা হলে তার একই উত্তর- ‘আমরা এখন যুগপৎ আন্দোলনে আছি। সব দল ও সংগঠনকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করব।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমও

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন