বিজ্ঞাপন

ডার্বিতে ইউনাইটেডকে বিধ্বস্ত করল ম্যানচেস্টার সিটি

October 2, 2022 | 8:52 pm

স্পোর্টস ডেস্ক

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের (ইপিএল) ২০২২/২৩ মৌসুমের প্রথম ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ইউনাইটেডকে বিধ্বস্ত করল সিটি। ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৬-৩ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে পেপ গার্দিওলার দল। সিটির হয়ে হ্যাটট্রিক করেন এর্লিং হালান্ড এবং ফিল ফোডেন। তবে শেষ দিকে এসে অ্যান্থনির একটি আর মার্শিয়ালের জোড়া গোল করলে তা কেবল পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পারে রেড ডেভিলরা।

বিজ্ঞাপন

প্রিমিয়ার লিগে নিজের প্রথম মৌসুমের প্রথম ৭ ম্যাচে ১৪টি গোল করলেন এর্লিং হালান্ড। সঙ্গে আছে ৩টি অ্যাসিস্টও। ক্রিস্টাল প্যালেস, নটিংহাম ফরেস্টের পর ইপিএলে নিজের তৃতীয় হ্যাটট্রিকের দেখা পেলেন ম্যানচেস্যটার ইউনাইটেডের বিপক্ষে। সেই সঙ্গে ডার্বিতে করেন জোড়া অ্যাসিস্টও। অন্যদিকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড অ্যান্থনির গোলে পর শেষ দিকে এসে অ্যান্থনি মার্শিয়ালের জোড়া গোলে ব্যবধান কমায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতির আগে প্রিমিয়ার লিগে টানা ৪ ম্যাচ জিতে দারুণ ফর্মের ইঙ্গিত দিয়েছিল ইউনাইটেড। এর ভেতর ঘরের মাঠে লিভারপুল এবং আর্সেনালকেও হারিয়েছিল রেড ডেভিলরা। অন্যদিকে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৯ ম্যাচে অপরাজিত ছিল ম্যানসিটি। দুই দলের ফর্ম বিবেচনায় ম্যানচেস্টার ডার্বি ছিল আলোচনার তুঙ্গে। তবে ঘরের মাঠে ইউনাইটেডকে পাত্তাই দেয়নি হালান্ড-ফোডেনরা। এতেই ৮ বছর পর নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে আবারও লিগে টানা তিন ম্যাচ জিতল সিটি। ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত টানা চারটি ডার্বি জিতেছিল তারা।

বিজ্ঞাপন

প্রথমার্ধের ৬০ শতাংশ বল দখলে রেখে মোট ১৬টি শট নেয় সিটি যার মধ্যে ৮টিই ছিল লক্ষ্যে। আর সেই ৮টি শটের ভেতর ৪টিই গোলে পরিণত হয়। অন্যদিকে রেড ডেভিলরা মাত্র ৩টি শট নিলেও যার মধ্যে একটিও লক্ষ্যে রাখতে পারেনি। এরপর দ্বিতীয়ার্ধ শেষে ৫৪ শতাংশ বল দখলে রেখে ২২টি শট নেয় সিটি যার মধ্যে ১০টিই ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে ৪৬ শতাংশ বল দখলে রেখে ১২টি শট নেওয়া রেড ডেভিলরা লক্ষ্যে রাখতে পারে ৮টি।

ইতিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচের তিন মিনিটের মাথায় লিড নিতে পারতো সিটি। বার্নার্দো সিলভার দারুণ এক আক্রমণে বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠে হালান্ডের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান। হালান্ড হেড করলে সেই বল বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন স্কট ম্যাকটিমনি আর ফিরতি বল পেয়ে দারুণ এক শট নেন কেভিন ডি ব্রুইন তবে তার শট রুখে দেন ইউনাইটেড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গিয়া।

প্রথম সুযোগে গোল করতে না পারলেও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি সিটিজেনদের। ৮ মিনিটের মাথায় জাও ক্যান্সেলো দারুণ এক বল বার্নার্দো সিলভার উদ্দেশ্যে বাড়িয়ে আক্রমণের সূত্রপাত করেন। সিলভা বল নিয়ে এগিয়ে গিয়ে দারুণ এক ক্রস করেন ইংলিশ ফরোয়ার্ড ফিল ফোডেনের উদ্দেশ্যে। ডি বক্সে বল পেয়ে বাঁ পায়ের দারুণ ফিনিশিংয়ে বল জালে জড়িয়ে সিটিকে ১-০ গোলে এগিয়ে দেন।

বিজ্ঞাপন

লিড নেওয়ার মিনিট দশেক পর ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ আসে সিটির সামনে। তবে ইয়াকি গুন্দোয়ানের দারুণ এক ফ্রিকিক গোলরক্ষককে পরাস্ত করলেও গোলপোস্টে লেগে ফিরে আসলে ব্যবধান বাড়ানো হয়নি সিটির। তবে বেশি সময় সিটিকে অপেক্ষা করতে হয়নি। মাত্র তিন মিনিটের ভেতর জোড়া গোল করে ম্যাচ পুরোপুরি নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় সিটি।

৩৪তম মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের কর্নার থেকে লাফিয়ে উঠে দারুণ এক গোল করেন এর্লিং হালান্ড। প্রিমিয়ার লিগে চলতি মৌসুমে এটি তার ১২তম গোল। এর মিনিট তিনেক পরে ডি ব্রুইনের আরেকটি দারুণ এক পাস ধরে বাঁ পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন হালান্ড। এতেই সিটি মাত্র ৩ মিনিটের ভেতর ব্যবধান ৩-০ করে। আর হালান্ড পেয়ে যান তার ১৩তম প্রিমিয়ার লিগের গোল।

বিজ্ঞাপন

প্রথমার্ধ শেষের মিনিট খানেক আগে দারুণ এক আক্রমণে হালান্ডের উদ্দেশ্যে বল বাড়ান কেভিন ডি ব্রুইন। তার বাড়ানো বল পেয়ে চিপ শটে দারুণ এক ক্রস ফোডেনের উদ্দেশ্যে দেন হালান্ড। বল পেয়ে ঠান্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করেন ফোডেন। ইউনাইটেডের জালে ৪ গোল জড়িয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে ম্যানচেস্টার সিটি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই এক গোল পরিশোধ করে ইউনাইটেড। ৫৬তম মিনিটে ক্রিশ্চিয়ান এরিকসেনের বাড়ানো দারুণ এক লং বল ধরে ডি বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন অ্যান্থনি। রেড ডেভিলরা ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয়। তবে ইউনাইটেডকে স্বস্তি দেয়নি সিটিজেনরা। ৬৪তম মিনিটের সার্জিও গোমেজ বাঁ দিক থেকে মাটি গড়ানো এক ক্রস করেন ডি বক্সের ভেতর। সেখানে বল পেয়ে বাঁ পায়ের দারুণ ফিনিশিংয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন হালান্ড। সিটি এগিয়ে যায় ৫-১ গোলের ব্যবধানে।

৮ মিনিট পরে হালান্ডের দারুণ এক পাস ধরে ম্যাচে তৃতীয় বারের মতো লক্ষ্যভেদ করে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন ফিল ফোডেন। সিটিজেনরা লিড নেয় ৬-১ গোলের ব্যবধানে। ম্যাচের শেষ ১০ মিনিটে এসে দারুণ আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে রেড ডেভিলরা। ফলাফলও আসে তাদের হাতে। ৮৪তম মিনিটে ফ্রেডের শট রুখে দেন এডারসন আর ফিরতি বল পেয়ে হেড করে বল জালে জড়ান অ্যান্থনি মার্শিয়াল।

নির্ধারিত ৯০ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর মার্শিয়ালকে ফাউল করেন জাও ক্যান্সেলো। এতেই পেনাল্টি পায় রেড ডেভিলরা। স্পটকিক থেকে গোল করে ব্যবধান ৬-৩ করেন অ্যান্থনি মার্শিয়াল। শেষ পর্যন্ত ম্যানচেস্টার ডার্বিতে বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ম্যানচেস্টার সিটি।

এই জয়ে প্রিমিয়ার লিগে ৮ ম্যাচে ৬ জয় আর দুটি ড্র’তে ২০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে উঠে এসেছে ম্যানচেস্টার সিটি। আর ৭ ম্যাচে ৪ জয় ৩ হারে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে অবস্থান রেড ডেভিলদের। ২১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আর্সেনাল।

সারাবাংলা/এসএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন